চট্টগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) ফরিদা খানমকে ঘিরে বদলি ও তদন্ত নিয়ে এক ধরনের অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মাত্র সাত দিনের মধ্যে তাঁকে তিনটি ভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়েছে প্রথমে পরিবেশ, পরে সংস্কৃতি এবং সর্বশেষ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। এমন গোপনীয় ও ধারাবাহিক বদলি প্রশাসনিক মহলে নানা প্রশ্ন তুলেছে।
তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, চট্টগ্রামের হিলভিউ আবাসিক এলাকার খাসজমি ব্যক্তিমালিকানায় নামজারি করে দেওয়ার মতো গুরুতর অনিয়মে তিনি জড়িত ছিলেন। এ অভিযোগে ভূমি মন্ত্রণালয়ের কমিটি সরেজমিন তদন্ত করেছে এবং প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীনের ভাষ্যমতে, ফরিদা খানমের বিরুদ্ধে একাধিক তদন্ত এখনো চলছে।
ফরিদা খানমের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির পর আপাতত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) মো. কামরুজ্জামান ডিসির দায়িত্ব পালন করছেন। তবে নতুন ডিসি নিয়োগ নিয়ে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। অন্যদিকে, নওগাঁর ডিসি মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল চট্টগ্রামে বদলি হলেও যোগ দেননি।
শুধু ডিসি বদলিই নয়, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কয়েকজন কর্মচারীকেও সম্প্রতি বদলি করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধেও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ৯ অক্টোবরের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগ না দিলে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত করা হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এমন সময়ে ফরিদা খানম নিজে দাবি করেছেন, অভিযোগ শুধু তাঁর বিরুদ্ধে নয়, বরং সামগ্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে তদন্ত হয়েছে। তবে প্রশাসনের ভেতরে অনেক কর্মকর্তা মনে করছেন, ভূমি–সংক্রান্ত বিতর্ক শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়াই উচিত ছিল।
ফলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন এখন নেতৃত্ব ও বিশ্বাসযোগ্যতার সংকটে পড়েছে। ডিসির বদলি, অনিয়মের তদন্ত এবং কর্মচারীদের স্থানান্তর সব মিলিয়ে পরিস্থিতি প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ও সুশাসনের প্রশ্নে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।