হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বিপর্যস্ত হয়েছে দেশের রপ্তানি খাত। বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পের স্যাম্পল বা নমুনা পুড়ে যাওয়ায় অন্তত এক মাসের জন্য রপ্তানি প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কার্গো ভিলেজ মূলত রপ্তানি কার্যক্রমের কেন্দ্র। বিদেশি ব্র্যান্ড ও ক্রেতাদের কাছে তৈরি পোশাকের স্যাম্পল পাঠানো, আমদানি করা অ্যাক্সেসরিজ, ওষুধ শিল্পের কাঁচামাল এবং কৃষিপণ্যের চালান এখান দিয়েই আসে-যায়। আগুনে এসব পণ্য পুড়ে যাওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ অনুমান করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
ঢাকা কাস্টমস এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আলম জানান, অন্তত এক হাজার কোটি টাকার পণ্য আগুনে পুড়ে গেছে। শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটি থাকায় কয়েক দিনের পণ্য জমে ছিল। কুরিয়ার সার্ভিস সেকশনের শেড এবং বাইরের অংশে রাখা মালামালও পুড়ে গেছে বলে তিনি জানান।
রপ্তানিকারক সংগঠন বিজিএমইএর সিনিয়র সহসভাপতি এনামুল হক বাবলু বলেন, স্যাম্পলগুলো সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। এখন নতুন করে স্যাম্পল আনা, তৈরি ও অনুমোদন নিতে অন্তত এক মাস সময় লাগবে। এতে রপ্তানির লিড টাইম পিছিয়ে যাবে।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, পাঁচ দিনের মধ্যে তিনটি বড় অগ্নিকাণ্ড এটা পরিকল্পিত নাশকতাও হতে পারে।
বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমও ঘটনাটিকে সন্দেহজনক মনে করছেন। তিনি বলেন, এটি কেবল দুর্ঘটনা নয়, বরং এর পেছনে ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। সরকারকে দ্রুত তদন্তে নামতে হবে।
তিনি আরও বলেন, কার্গো ভিলেজের মতো স্পর্শকাতর স্থানে পণ্য খোলা জায়গায় রাখা হয় যা নিরাপত্তার দিক থেকে ভয়াবহ ঝুঁকি।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন অবশ্য বলেছেন, ক্ষয়ক্ষতি মূলত আমদানি পণ্যের বেলায় হয়েছে। রপ্তানি পণ্য নিরাপদ আছে।
তবে তৈরি পোশাক, ওষুধ ও কৃষিপণ্য খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, আগুনে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা শুধু অর্থনৈতিক নয় বাংলাদেশের রপ্তানি ভাবমূর্তির ওপরও বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।