৯ নভেম্বর ২০২৫

রাউজানে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে গিয়াস কাদের, উজ্জীবিত কর্মী-সমর্থকরা

রাউজান উপজেলা সাম্প্রতিক সময়ে নানা ঘটনার কারণে ছিল জাতীয় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে হত্যা, সংঘর্ষ, গুলিবর্ষণসহ বিভিন্ন ঘটনায় গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছিল রাউজান। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে বর্তমানে রাউজানে বইছে নির্বাচনী হাওয়া।

কেন্দ্রীয় বিএনপি এখনো রাউজানে দলীয় মনোনয়ন বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নিলেও, গত ৭ নভেম্বর (শুক্রবার) রাউজান সরকারি কলেজ মাঠে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান (পদ স্থগিত) ও রাউজান-রাঙ্গুনিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরীর জনসভায় হাজার হাজার মানুষের ঢল প্রমাণ করে দিয়েছে রাউজানে বিএনপির মনোনয়ন চৌধুরী পরিবারের ঘরেই যাচ্ছে।

সেদিনের জনসভায় রাউজানের প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে বিএনপির হাজার হাজার নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা ব্যানার, ফেস্টুন, দলীয় ও জাতীয় পতাকা নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন। সমাবেশস্থল মুখরিত হয়ে ওঠে “শহীদ জিয়া অমর হোক”, “বেগম জিয়া জিন্দাবাদ”, “তারেক রহমান জিন্দাবাদ”, “গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী জিন্দাবাদ” এসব স্লোগানে।

জনসভায় উপস্থিতিদের মতে, প্রায় তিরিশ হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করে।

সমাবেশে তরুণ ও প্রবীণ উভয় শ্রেণির মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

সাবেক সাংসদ গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেন,

“যত দিন পর্যন্ত এই দেশের মানুষের রক্ত আমার সাথে মিশে আছে, ততদিন আমাকে ভোট থেকে কেউ বাদ দিতে পারবে না। আমার রক্ত, আমার পরিবারের রক্ত যতদিন রাউজানবাসীর সাথে মিশে আছে, ততক্ষণ আপনাদের কেউ বঞ্চিত করতে পারবে না। যে কোনো মূল্যে আমি আগামী নির্বাচন করব।”

তার বক্তব্যে করতালি ও স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে সমগ্র জনসভাস্থল।

সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া

বাগোয়ান ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুর রহিম বলেন, “২০০৯ সালের পর থেকে রাউজানে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঘরে থাকতে পারে নি। বাবা-মায়ের দাফন, কাফন, জানাজাও করতে পারে নি আওয়ামী লীগের নির্যাতনের কারণে। সেই দুঃসময়ে গিয়াস ভাই খোঁজখবর নিয়েছেন, সহযোগিতা করেছেন। তাঁর জনসভায় না গেলে কাদের জনসভায় যাব?”

নোয়াজিষপুরের বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সুলতান বলেন, “দাদা, বাবা, চাচাদের মুখে চৌধুরী পরিবারের জনপ্রিয়তার কথা শুনতাম। গিয়াস ভাইয়ের জনসভায় এসে তা স্বচক্ষে দেখলাম। আমি চাই রাউজানে হানাহানির রাজনীতির অবসান ঘটুক, শান্তিপূর্ণ রাউজান গড়ে উঠুক।”

রিকশাচালক আমির হোসেন বলেন, “ধানের শীষ ভালোবাসি, চৌধুরী পরিবারকে ভালোবাসি, গিয়াস ভাইকে ভালোবাসি তাই আমি জনসভায় গিয়েছিলাম।”

স্কুল শিক্ষক শুভেন্দু দত্ত বলেন, “গিয়াস ভাইয়ের সময় কেউ অন্যায়ভাবে জায়গা দখল করতে পারত না, কাউকে বাড়ি ছেড়ে পালাতে হতো না। এখন আবার তিনি এমপি হলে রাউজানবাসী স্বস্তিতে থাকবে।”

উজ্জীবিত নেতা-কর্মীরা, ৭ নভেম্বরের জনসভা শেষে বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে।

ছাত্রদল নেতা লিমন চৌধুরী বাপ্পা বলেন,

“রাউজানে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিকল্প নেই। যারা ১৭ বছর আওয়ামী লীগের লুঙ্গির নিচে ছিল তারাই এখন রাউজানে অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে। রাউজানবাসী গিয়াস কাদেরের, আর গিয়াস কাদের রাউজানবাসীর।”

ছাত্রদল নেতা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেন,

“গিয়াস উদ্দিন কাদেরের জনসভায় হাজারো মানুষের ঢল প্রমাণ করে রাউজানের প্রকৃত অভিভাবক তিনিই। আওয়ামী লীগের দালালদের এখন আর মানুষ চায় না।”

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি সাবের সুলতান কাজল বলেন,

“১৭ বছর রাউজানের মানুষ ছিল কারাগারে বন্দি। যারা সে সময় আওয়ামী লীগের দালালি করে আখের গুছিয়েছিল, তারাই এখন বিএনপি সাজতে চায়। কিন্তু ৭ নভেম্বরের জনসভায় প্রমাণ হয়েছে রাউজানে বিএনপিতে গিয়াস উদ্দিন কাদেরই প্রথম ও শেষ কথা।”

বিশ্লেষকদের মতে, ৭ নভেম্বরের বিপ্লব ও সংহতি দিবসের জনসভায় বিপুল জনসমাগম গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরীর প্রতি জনসমর্থনকে নতুনভাবে তুলে ধরেছে। তাঁর বিরুদ্ধে চালানো প্রোপাগান্ডা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে এবং বিএনপির হাই কমান্ডের নিকট তাঁর গ্রহণযোগ্যতা আরও সুদৃঢ় হয়েছে।

তাঁদের মতে, আসন্ন সংসদ নির্বাচনে রাউজানে বিএনপির তুরূপের তাস হবেন গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী।

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ