চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারীর মদুনাঘাট এলাকায় বিএনপি নেতা ও ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের শিকার হাকিম ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস-চেয়ারম্যান (পদ স্থগিত) ও রাউজান–রাঙ্গুনিয়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ অনুসারী।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতু (বিপিএম-বার) এর নির্দেশনায় জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) ও হাটহাজারী থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও সহযোগীদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করে।
গত ৭ অক্টোবর সকালে হাকিম তার প্রাইভেটকারে হামিম এগ্রো ফার্মে যান। বিকেলে ফেরার পথে মদুনাঘাট ব্রিজের পশ্চিম পাশে মোটরসাইকেলযোগে আসা দুর্বৃত্তরা তার গাড়িতে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি মারা যান।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৩১ অক্টোবর রাউজানের বাগোয়ান ইউনিয়ন থেকে মো. আব্দুল্লাহ খোকন (ল্যাংড়া খোকন) কে গ্রেফতার করা হয়। পরে সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেয়।
তার তথ্যের ভিত্তিতে ২ নভেম্বর নোয়াপাড়া থেকে মারুফকে, এবং ৪ নভেম্বর সাকলাইন হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সাকলাইনের হেফাজত থেকে হত্যায় ব্যবহৃত একনলা বন্দুক, একটি এলজি ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
এরপর ৯ নভেম্বর রাতে রাউজানের নোয়াপাড়া চৌধুরীহাট এলাকায় বিশেষ অভিযানে ৪টি বিদেশি পিস্তল, ১টি রিভলভার, ১টি চায়না রাইফেল, ১টি শট গান, বিপুল পরিমাণ গুলি, রামদা, মাদকদ্রব্য ও নগদ টাকা উদ্ধারসহ আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা: ১. মো. আব্দুল্লাহ খোকন, ২. মো. মারুফ, ৩. জিয়াউর রহমান, ৪. মো. সাকলাইন হোসেন, ৫. মো. সাকিব, ৬. শাহেদ
তদন্তে জানা গেছে, রাউজান অঞ্চলের বালুমহলের নিয়ন্ত্রণ ও স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
হত্যার মূল হোতাসহ অন্যান্য আসামিদের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় চেকপোস্ট, বিশেষ অভিযান ও রাত্রীকালীন সাঁড়াশি তল্লাশি কার্যক্রম চলছে।
বিশ্লেষকদের মতে, দ্রুত সময়ের মধ্যে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে জেলা পুলিশের সাফল্য প্রশংসনীয়।
উল্লেখ্য, হাকিমের জানাজায় হাজারো মানুষ অংশ নেন, যেখানে কান্নায় ভেঙে পড়েন সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী।













