কর্ণফুলী নদী থেকে অবৈধভাবে উত্তোলন করা বালু নিয়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে প্রাণঘাতী সংঘাতে জড়াচ্ছে রাজনৈতিক সংগঠনগুলো। এতে অস্থির হয়ে উঠছে নগরসহ বিভিন্ন উপজেলার অবস্থা। গেল ১৪ মাসেই শুধু রাউজান উপজেলায় খুন হয়েছেন ১৭ জন। এমন অবস্থায় জনমনে স্বস্তি ফেরাতে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পরিবেশ–বিধ্বংসী এই বালু উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রশাসনকে আল্টিমেটাম দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম নগর কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব আদনান হোসেন রাফি।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এই আল্টিমেটাম দেন তিনি।
আদনান হোসেন রাফি বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করার দাবিতে আমরা অনেকদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছি। গত ৩০ সেপ্টেম্বর আমরা রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় একটি মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি। প্রশাসনকে বারবার আহ্বান জানানোর পরও তারা শুধু আশ্বাস দিচ্ছেন, বাস্তব প্রেক্ষিতে তাদের কার্যকর কোনো জোরালো ভূমিকা দেখতে পাচ্ছি না। ফলে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পরিবেশ–বিধ্বংসী এই বালু উত্তোলন এবং কাপ্তাই–চট্টগ্রাম সড়কের রাঙ্গুনিয়া–রাউজান উপজেলায় অবৈধভাবে যেসব ১০ চাকার ড্রামট্রাক চলাচল করছে তা বন্ধে প্রশাসন যদি ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলন ঘোষণা করবো। পাশাপাশি উপজেলা–কেন্দ্রিক আমরা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করবো।
মানববন্ধনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নগর কমিটির ছাড়াও অংশ নেন রাউজান–রাঙ্গুনিয়া উপজেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় সাধারণ জনগণ। বক্তব্য রাখেন সংগঠক তাওহিদ আলিফ, যুগ্ম সদস্য সচিব ইম্মি সজিব, সাধারণ ছাত্রদের পক্ষে মো. আহাদ ফারহান, মোস্তাকিম, শিফাত, রাহি ও জায়েদসহ আরও অনেকে।
বক্তারা বলেন, রাউজান–রাঙ্গুনিয়া সড়কে ওভারলোড ড্রামট্রাক চলাচলের কারণে ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে স্থানীয়দের। অবিলম্বে বালু উত্তোলন ও ড্রামট্রাক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানান তারা। রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার, বালু উত্তোলন নিয়ে প্রতিনিয়ত এই দুই উপজেলায় সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতায় আতঙ্কে থাকেন বাসিন্দারা। সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধে বালু উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা চান এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে সাধারণ ছাত্রদের পক্ষে মো. আহাদ ফারহান বলেন, চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় অপকর্ম চললেও রাঙ্গুনিয়া–রাউজানের খুন–খারাবি সবকটিকে হার মানায়। অবৈধভাবে উত্তোলন করা এই বালুর ব্যবসাকে কেন্দ্র করে সংঘাতের সূত্রপাত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ইতোমধ্যে অজস্র প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে, যা আমাদের চট্টগ্রাম তথা দেশকে মারাত্মক বদনামের মুখোমুখি করছে। শুধু তাই নয়, এসব বালু উত্তোলনের ফলে ভবিষ্যতে আমাদের বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ–দুর্ঘটনার শিকারও হতে হবে। নানা বিষয়ের মধ্যে এটি বড় ধরনের সংকট ডেকে আনবে। তাই অতি দ্রুত বালু উত্তোলন এবং ড্রামট্রাক বন্ধে প্রশাসনের ভূমিকা রাখা জরুরি হয়ে পড়েছে। অন্যথায় এই দায় কেউ এড়াতে পারবে না।













