কক্সবাজার প্রতিনিধি »
রোহিঙ্গা উগ্রপন্থী সংগঠনের স্বঘোষিত নেতা, পাহাড়ী জনপদের ত্রাস, ইয়াবা গডফাদার ও রোহিঙ্গা ডাকাত সর্দার নুর মোহাম্মদ অবশেষে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) ভোররাতে তাকে নিয়ে টেকনাফের হ্নীলা জাদিমোরা ২৭নং ক্যাম্পের পাহাড়ী এলাকায় অস্ত্র উদ্ধারে গেলে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
এরআগে, শনিবার ভোররাতে সহযোগীসহ আটক হয়েছিলেন ডাকাতিসহ বহু মামলার আসামী নুর মোহাম্মদ। বন্দুকযুদ্ধে ওসি তদন্তসহ তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল হতে ৪টি এলজি, ১টি থ্রি কোয়াটার, ১৮ রাউন্ড গুলি, ২০ রাউন্ড খালি খোসা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।
নিহত নুর মোহাম্মদ (৩৪) টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা জাদিমোরা ২৭নং ক্যাম্পের আশ্রিত বাসিন্দা মৃত রোহিঙ্গা কালা মিয়ার ছেলে। ১৯৯২ সালে তারা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে জাদিমুড়ায় বসতি স্থাপন করে ধীরে ধীরে সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে অপরাধকর্ম করে আসছিল।
টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জানান, শনিবার ভোররাতে সহযোগীসহ আটক হন রোহিঙ্গা ডাকাত সর্দার নুর মোহাম্মদ। সারাদিন তাকে নানাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ১ সেপ্টেম্বর (রোববার) ভোর রাতে টেকনাফ মডেল থানার ওসি (তদন্ত) এবিএমএস দোহার নেতৃত্বে পুলিশ দল ধৃত সন্ত্রাসী নুর মোহাম্মদকে নিয়ে উপজেলার হ্নীলা জাদিমোরা ২৭নং ক্যাম্পের পাহাড়ী জনপদের বাড়িতে অবৈধ অস্ত্র ভান্ডার উদ্ধার অভিযানে যায়। এসময় রোহিঙ্গা উগ্রপন্থী সংগঠন এবং মাদক কারবারী সিন্ডিকেটের স্বশস্ত্র সদস্যরা এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে নুর মোহাম্মদকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এতে ওসি (তদন্ত) এবিএমএস দোহা (৩৬), কনস্টেবল আশেদুল (২১), অন্তর চৌধুরী (২১) আহত হয়। তখন পুলিশও আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়।
তিনি বলেন, প্রায় আধ ঘন্টাব্যাপী ৪০-৫০ রাউন্ড পাল্টা গুলিবর্ষণ করার পর হামলাকারীরা গভীর পাহাড়ের দিকে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থল তল্লাশী করে ৪টি এলজি, ১টি থ্রি কোয়াটার, ১৮ রাউন্ড গুলি, ২০ রাউন্ড খালি খোসাসহ গুলিবিদ্ধ নুর মোহাম্মদকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা সদর হাসপাতালে নেয়। সেখানে আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা দেয়া হলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক নুর মোহাম্মদকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশের আরেকটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীর পর মৃতদেহ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেমের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
ওসি প্রদীপ কুমার দাশ আরো জানান, মোস্ট ওয়ানন্টেড ও যুবলীগ নেতা ওমর হত্যা মামলার আসামী নুর মোহাম্মদ বন্দুকযুদ্ধে মারা যাওয়ার খবরে এলাকাবাসী স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলেছে। মিষ্টি বিতরণ শুরু করেছেন অনেকে। এ ঘটনায় পৃথক মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে, সম্প্রতি মেয়ের রাজকীয় কান ছেদন অনুষ্ঠান নিয়ে আলোচনায় ছিলেন রোহিঙ্গা ডাকাত সর্দার নুর মোহাম্মদ। তার মেয়ের জন্য এক কেজি ওজনের স্বর্ণ ও অর্ধকোটি টাকা উপঢৌকন উঠে বলেও প্রচার পাচ্ছিল। কিন্তু এ তথ্যের সত্যতা স্বরূপ কোন স্থির চিত্র বা ভিডিও ফুটেজ কেউ দিতে পারেননি। এরপরও দীর্ঘদিন পর হলেও এই রোহিঙ্গা দূর্ধর্ষ সন্ত্রাসী আইনের আওতায় আসায় সর্বস্তরের জনসাধারণের মনে পুলিশ সম্পর্কে থাকা ধারণা কিছুটা পাল্টে আস্থা অর্জন করছে ।
বাংলাধারা/এফএস/এমআর













