* আমাকে হয়তো এখন আর ‘মানুষ’ বলা যায় না *
 মাঝেমাঝে মনে হয় 
আমি যেন এই চলমান পৃথিবীর উপযুক্ত নই মোটেও 
পৃথিবীর মানুষগুলো যেখানে ঘন্টায় এক হাজার 
কিলোমিটার বেগে দৌড়াচ্ছে!  
সেখানে আমি এখনো গুনগুন করে গান গেয়ে গেয়ে
আনমনে হেঁটে চলছি। 
অন্যরা যখন চাঁদের নুড়ি পাথর নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে, 
মঙ্গলগ্রহে জমি কিনে বাড়ি বানানোর পরিকল্পনা করছে! 
আমি তখন শোবার ঘরের জানালার ফাঁক দিয়ে আকাশের তারা গুনছি।
 সবাই যখন হাজারটা মিথ্যেকে সত্যি বানিয়ে রাষ্ট্রময় করছে 
তখনো আমি একমনে একচিত্তে যুধিষ্ঠিরের বন্দনা করছি! 
কেউ কেউ যখন আমাকে টপকে ওপরে ওঠে 
আলগোছে আমার সিঁড়িটাই সরিয়ে ফেলে!
তখনো আমি সব বুঝেও বুদ্ধুর মতো 
তাদের পায়ে ফুলচন্দন দিয়ে অর্ঘ্য দিচ্ছি! 
রোবটের কাছে হেরে যাওয়ার ভয়ে 
যেখানে কারো ভালোবাসাবাসির সময়ই নেই!
 সেখানে আমি কিনা একবুক উষ্ণতা নিয়ে বসে আছি 
কাউকে মুঠোমুঠো বিলোবো বলে!
 আসলে বর্তমান যুগের নতুন অভিধানমতে 
আমাকে হয়তো এখন আর ‘মানুষ’ বলা যায় না 
বড়জোর মানুষের মতো দেখতে কোনো একটা প্রাণী বলা যায়। 
* আমার কোন শৈশব নেই *
আমার তো ঘুড়ি ওড়ানোর কোন স্মৃতি নেই
স্মৃতি নেই মাঠে ঘাটে দৌড়ে বেড়ানোর
নেই কোন স্মৃতি পুকুরে কিংবা নদীতে
অনর্থক লাফালাফি বা দাপাদাপিরও
স্মৃতি নেই বানের জলে কলার ভেলা ভাসিয়ে
এ পাড়া ও পাড়ায় ঘোরাঘুরির
নেই এক্কাদোক্কা বা কাদামাটিতে মাখামাখি
ফুটবল বা ক্রিকেটের কোন স্মৃতিও।
অন্য কন্যাশিশুদের মতো পুতুলখেলার প্রতিও
আমার কোন আকর্ষণ ছিলো না কোনকালে
তাই তারও বিশেষ কোন স্মৃতি নেই
স্মৃতি নেই, স্মৃতি নেই।
তবে কি আমার শৈশব বলেও কিছু নেই?
ছিলো না কখনো!!!
				












