চবি প্রতিনিধি »
কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মাধ্যমে শুরু হয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ ও শাটলের ক্যাম্পাসখ্যাত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা।
চারটি ইউনিট ও দুইটি উপ-ইউনিটে ৪ হাজার ৯২৬ আসনের বিপরীতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে ১ লক্ষ ৬৬ হাজার ৮৭০ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী। সব পরীক্ষা দুই শিফটে সকাল ও বিকাল ক্যাম্পাসেই অনুষ্ঠিত হবে। আজ শুরু হয়ে পাঁচদিনব্যাপী ভর্তি পরীক্ষা শেষ হবে ৩১ অক্টোবর।
আসন্ন ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে তিন স্তরের নিরাপত্তা জোরদারসহ সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে শাটল ও ডেম্যু ট্রেনের নতুন শিডিউল দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে প্রতিদিন ট্রেন ১১ বার ক্যাম্পাস ঘুরে যাবে।
নিরাপত্তা নিশ্চিতে ৭ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন নিরাপত্তা জোরদারে পুলিশ, র্যাব, ডিবি, ডিএসবিসহ ৭ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জালিয়াতি ঠেকাতে ডিজিএফআই, এনএসআইসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি মাঠে থাকবে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীর ১২০ জন সদস্যও নিয়োজিত থাকবে।
এছাড়া পরীক্ষা চলাকালীন যেকোনো ধরনের সংঘটিত অপরাধ দমনে পরিচালিত হবে মোবাইল কোর্ট। পাশাপাশি র্যাগিং প্রতিরোধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সক্রিয় থাকবেন। পাশাপাশি র্যাগিং প্রতিরোধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ‘সিইউ স্টুডেন্ট কমপ্লেন সেল’ নামক একটি ওয়েবপেজও চালু করেছে গত ২১ অক্টোবর। এতে ভুক্তভোগীরা নিজেদের অভিযোগ জানাতে পারবেন। অভিযোগকারীর নিরাপত্তার স্বার্থে পরিচয় গোপন রাখার কথা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর প্রণব মিত্র চৌধুরী বলেন, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের পাশাপাশি প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে দায়িত্ব বন্টন করে দেওয়া হবে। ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে ছাত্রসংগঠনগুলোর মিছিল-মিটিংয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ও অস্থায়ী সকল হোটেল ও খাবারের দোকানে নির্ধারিত মূল্যের তালিকা সাঁটানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে ক্যাম্পাসের ভেতরে সকল ধরনের যান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সদস্য সচিব এসএম আকবর হোছাইন বলেন, প্রশ্ন ফাঁসসহ ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত সকল অভিযোগ কেন্দ্রে প্রবেশের এক ঘন্টা পূর্বে লিখিতভাবে ইউনিট কো-অর্ডিনেটরকে জানাতে হবে। নেকাব ও বোরকা পরিহিত ছাত্রীরা মুখমন্ডল ও কান প্রদর্শন করতে হবে।
পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল, স্মার্ট ঘড়িসহ যাবতীয় ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে অ্যান্টি প্রক্সি অ্যাপস ব্যবহার করবেন দায়িত্বরতরা। পরীক্ষার দিন সকাল ৮টায় হল প্রভোস্টরা প্রত্যেকটি হল পরিদর্শন করবেন। ভর্তি পরীক্ষার ৪৮ ঘন্টা আগে আসন বিন্যাস ওয়েবসাইটে জানিয়ে দেওয়া হবে। পরীক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সত্যায়িতকরণের বাধ্যবাধকতা নেই।
ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে পোস্টার সাঁটানো, ব্যানার টাঙানো, লিফলেট বিতরণ, দেওয়ালে চিকা মারা ও বুথ বসানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে সকল ধরনের নোট, শিট, সাজেশন ও মডেল টেস্ট বিক্রয়ও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এদিকে শিক্ষার্থীদের সার্বিক সহযোগিতায় ছাত্রলীগের ‘অ্যান্টি র্যাগিং টিম’, ‘মেডিক্যাল টিম’, ‘তথ্য সহায়তা টিম’ ‘জয় বাংলা জরুরি বাইক সার্ভিস টিম’ কাজ করবে বলে জানিয়েছেন চবি ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল। প্রসঙ্গত, ১ম বর্ষের স্নাতক (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষা- ‘বি’ ইউনিট রবিবার (২৭ অক্টোবর), ‘ডি’ ইউনিট সোমবার (২৮ অক্টোবর), ‘এ’ ইউনিট মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর), ‘সি’ ইউনিট বুধবার (৩০ অক্টোবর) এবং ‘বি ১’ ও ‘ডি ১’ উপ-ইউনিট এর ভর্তি পরীক্ষা বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হবে। এবার ভর্তি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা আগের তুলনায় ৩০ হাজার বেশি হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাহিরে দুটি ইউনিটের পরীক্ষা পার্শ্ববর্তী হাটহাজারী সরকারি কলেজে অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাধারা/এফএস/এএ













