৪ নভেম্বর ২০২৫

মিরসরাই পাক-হানাদার মুক্ত দিবস আজ

ফিরোজ মাহমুদ, মিরসরাই »

আজ ৮ ডিসেম্বর, মিরসরাই মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের মুক্তিকামী জনতা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের হটিয়ে মিরসরাইকে শত্রুমুক্ত করেছিলেন।

৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ শোনার পর থেকেই উপজেলার সর্বস্তরের জনতা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠন শুরু করে। মিরসরাইয়ে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় ২৫ মার্চ রাত থেকেই। চট্টগ্রামের দিকে পাক হানাদারদের আগমন প্রতিরোধ করতে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ওই রাতে উড়িয়ে দেওয়া হয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শুভপুর ব্রিজ।

উপজেলা সদরের অছি মিয়ার পুল উড়িয়ে দিলে ১৩ দিন আটকে থাকে হানাদার দল। এ সময়ের মধ্যে চট্টগ্রামের মুক্তিবাহিনী রণপ্রস্তুতি নেয়। ৮ ডিসেম্বর ভোর থেকে মুক্তিযোদ্ধারা মিরসরাই উপজেলা সদরের দিকে এগোতে থাকেন। পাকিস্তানি সেনারা মিরসরাইয়ের ওয়্যারলেস ভবনটি (বর্তমান টিঅ্যান্ডটি ভবন) ধ্বংস করে থানা সদরে অবস্থান নিয়েছে।

এরপরই মিরসরাইয়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থান নেওয়া মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত হয়ে হানাদারদের বিরুদ্ধে গড়ে তোলেন প্রতিরোধ। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মিরসরাই থানার মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার ছিলেন সাবেক মিরসরাই সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাফর উদ্দীন আহমদ চৌধুরী।

স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, ডিসেম্বরের প্রথম দিকেই মিরসরাইয়ের প্রায় এলাকা শত্রুমুক্ত হয়। কিন্তু পাকবাহিনীর কিছু সদস্য ও তাদের দোসর রাজাকার, আল-বদর তখনো থানা সদরে অবস্থান করছিল। তাদের আস্তানা ছিল মিরসরাই উচ্চবিদ্যালয় (বর্তমান মিরসরাই পাইলট উচ্চবিদ্যালয়) ও মিরসরাই থানায়। সে কারণে মিরসরাই এলাকাকে শত্রুমুক্ত ঘোষণা করা যাচ্ছিল না। প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থান নেওয়া মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত হয়ে হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। মুক্ত হয় মিরসরাই।

তিনি আরও বলেন, চারদিক থেকে জয় বাংলা স্লোগান নিয়ে মিরসরাই উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সমবেত হয় হাজারো মানুষ। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে ছাত্র-জনতা ও মুক্তিযোদ্ধারা বিদ্যালয়ের মাঠে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। জয় বাংলা স্লোগানের মধ্য দিয়ে শত্রুমুক্ত হলো মিরসরাই।

এদিকে দিবসটি উপলক্ষে আজ রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড সমাবেশ, আলোচনা সভা ও র‌্যালির আয়োজন করেছে। এ ছাড়া উপজেলা প্রশাসনও বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে থাকেন।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম/এএ

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ