২৯ অক্টোবর ২০২৫

মহিউদ্দিন চৌধুরীর রাজনীতি ছিল ব্যতিক্রমধর্মী,সৃষ্টিধর্মী ও সেবাধর্মী: আমু

বাংলাধারা প্রতিবেদন »

মহিউদ্দিন চৌধুরীর রাজনীতি ছিল ব্যতিক্রমধর্মী, সৃষ্টিধর্মী ও সেবাধর্মী। সিটি মেয়র থাকার সময় এ শহরে শিক্ষার আলো ছড়িয়েছেন, অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেছেন। জনগণের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে কাজ করেছেন। তিনি শ্রমিক আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন।

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরীর স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু এসব কথা বলেন।

এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী রাজনৈতিক জীবনের স্মৃতিচারণ করে আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু বলেন, ছাত্র রাজনীতি দিয়ে শুরু করে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছিলেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। তিনি সকল দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। আমার সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সম্পর্ক। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই সংগ্রামী ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ অংশগ্রহণ করেন।

তিনি বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরী মেয়র থাকার সময় দোকানের ছোট ছোট সাইনবোর্ডের জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষে কোনো ট্যাক্স নিতেন না। গরীব রিকশা চালকের রিকশার লাইসেন্স নবায়নের জন্য কোনো টাকা নিতেন না। এভাবেই তিনি সেবাধর্মী রাজনীতি করেছেন। মহিউদ্দিন চট্টগ্রামকে এতটাই ভালোবাসতেন যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়ার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন শুধু চট্টগ্রামে থাকার জন্য।

আমু বলেন, আমি মহিউদ্দিন চৌধুরীকে ক্ষেপাতাম এই বলে-সুযোগ পেলে তিনি চট্টগ্রামের স্বাধীনতাই চাইতেন। চট্টগ্রামকে এতটাই ভালোবাসতেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। ১৯৯৮ সালে জাপান গিয়ে বুঝতে পেরেছিলাম চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য তিনি কী কী করেছেন। চট্টগ্রামের স্বার্থে বন্দর ও এয়ারপোর্ট সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারের বিরোধিতা করতেও দ্বিধা করেননি মহিউদ্দিন চৌধুরী। মেয়র থাকাকালীন চট্টগ্রামের কোনো প্রকল্প নিয়ে একনেকে তদবির করতে যাননি। তিনি নিজের উদ্যোগে উন্নয়ন কাজ করতেন। আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকা অবস্থায়ও মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রামের মেয়র হয়েছিলেন গণমানুষের নেতা ছিলেন বলে।

আলোচনা সভায় মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, বাবা  রাজনৈতিক জীবন নিয়ে আলোচনা করার দৃষ্টতা নেই। তৃণমূল থেকে উঠে এসে আমার বাবা জাতীয় নেতা হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর মনে প্রাণে ছিলো শুধু চট্টগ্রাম।

নওফেল বলেন, চট্টগ্রামের ব্যাপারে তিনি কোনোদিন আপোষ করেননি। শুধু চেয়েছিলেন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ হোক। আমার বাবার ব্যাপারে আলোচনা করার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা আমার নেই। অন্যরা আলোচনা করবেন আমি শুনবো।

প্রয়াত নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী গণমানুষের নেতা ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি  করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

মেয়র বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরী আমৃত্যু জনকল্যাণে কাজ করেছেন। নির্যাতিত,  নিপীড়িত মানুষের অধিকার আদায়ের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। চট্টগ্রামের স্বার্থ রক্ষায় কোনদিন আপোষ করেননি।

আ জ ম নাছির বলেন, ছাত্ররাজনীতি দিয়ে হাতেকড়ি হয়েছিলো মহিউদ্দিন ভাইয়ের। পরবর্তীতে শ্রমিক রাজনীতির মাধ্যমে হাল ধরেন আওয়ামী রাজনীতির। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যখন কেউ প্রতিবাদ করতে পারেনি, ঘর থেকে বের হতে পারেনি তখন মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম থেকে প্রথম প্রতিবাদ করেছেন।

মহিউদ্দিন চৌধুরীর আদর্শ শুধু মুখে বললে হবে না হৃদয়ে ধারণ করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মহিউদ্দিন ভাইয়ের আদর্শকে ধারণ করতে হবে। তার দেখানো পথে চলতে হবে।

মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন নঈম উদ্দিন চৌধুরী, খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ সালাম, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম।

সভায় দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, অ্যাডভোকেট সুনীল সরকার, সহ-সভাপতি ও সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, সংসদ সদস্য ডা. আফছারুল আমীন ও এমএ লতিফ, মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও সিডিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম

আরও পড়ুন