৪ নভেম্বর ২০২৫

ছাপাখানায় বইছে নির্বাচনী হাওয়া

তারেক মাহমুদ »

প্রতীক বরাদ্দের পর পরই খট খট শব্দে ছাপার যন্ত্র থেকে একের পর এক বেরিয়ে আসছে সাদা কালো পোস্টার। বেজে উঠেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের আগমনী ঘণ্টা। আজ প্রতীক বরাদ্দের কাজ শেষ হতেই শুরু হয়ে গেছে প্রচার প্রচারণা। নানামুখী সংশয় কাটিয়ে এবারের নির্বাচনে সব দল অংশ নেয়ায় ছাপাখানাগুলোর চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখন থেকে ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে যেতে হবে, সে জন্য প্রস্তুত হয়ে উঠেছে ছাপাখানাগুলো। নতুন বছরের ক্যালেন্ডার, ডাইরি, পাঠ্যপুস্তক, একুশের বইমেলা উপলক্ষে সৃজনশীল বই ছাপানোর কাজের চাপে এমনিতে ছাপাখানাগুলো ব্যস্ত থাকে। এর মধ্যে সিটি করপোরেশন নির্বাচন আসায় চাপ আরও বেড়েছে। নির্বাচন ঘিরে ইতোমধ্যে একদফা লিফলেট, পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন তৈরি করে ফেলেছে ছাপাখানাগুলো।

নগরীর আন্দরকিল্লাকে ঘিরে নজির আহম্মদ চৌধুরী রোড, রাজা পুকুল লেইন, সিরাজদৌলা রোড, মোমিন রোডে ছাপাখানাগুলোর সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রতীক বরাদ্দের সাথে সাথে প্রেসবাজার খ্যাত আন্দরকিল্লায় বেড়েছে পোস্টার তৈরির ব্যস্ততা। ছবিটি আন্দরকিল্লার নজির আহম্মদ চৌধুরী রোড থেকে তুলেছেন আলোকচিত্রী আনিসুজ্জামান দুলাল।

শুধু পোস্টার ছাপানোই নয়, এর সঙ্গে আরও অনেক কিছু জড়িত। এ প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছে ছাপখানাগুলো। পোস্টার বাঁধার সুতলি, কাগজ, প্যাকেট, পলিথিন ইত্যাদি সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। ছাপার মেশিনের যন্ত্রাংশ সারাই, এমনকি নতুন ছাপা মেশিনও স্থাপন করেছেন অনেক ব্যবসায়ী।

সম্প্রতি নগরীর নজির আহম্মদ চৌধুরী রোড, রাজা পুকুল লেইন, সিরাজদৌলা রোড, মোমিন রোডে  এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নিয়মিত কাজের পাশাপাশি ছাপাখানাগুলোয় বিরাজ করছে অন্য আমেজ। আগামী দিনগুলোয় যে তুমুল ব্যস্ততার মৌসুম আসছে, সে জন্য প্রস্তুতিও চলছে সমানতালে।

ব্যবসায়ীরা জানায়, শীতের সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান, মিটিংসহ নানা ধরনের কাজ বেশি থাকে। বিয়ে ও অন্যান্য উৎসবও এ সময়ে বেশি হয়। এর সঙ্গে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারের বিষয়টি যোগ হওয়ায় কর্মব্যস্ততা বৃদ্ধি পেয়েছে ছাপাখানায়। পাশাপাশি চলছে নির্বাচনী পোস্টার তৈরির চাপ সামলানোর প্রস্তুতি।

আন্দরকিল্লার জিয়া ভবন মার্কেটের ব্যবসায়ী আসাদুর রহমান বলেন, নির্বাচনী বছর বলে নতুন প্রিন্টিং মেশিন এনেছি। নির্বাচনকে ঘিরে পোস্টার ছাপানোর জন্য আমরা প্রস্তুত।

ছাপাখানা মালিকরা জানান, চসিক নির্বাচন সামনে রেখে তাদের ব্যস্ততা অনেক বেড়েছে। ইতোমধ্যে নির্বাচনী অনেক পোস্টার ছাপানো হয়েছে। এখন প্রার্থীদের প্রচারকাজ আরও বৃদ্ধি পাবে। তখন ব্যস্ততাও বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। এ জন্য অন্য কাজ দ্রুত সেরে ফেলা হচ্ছে।

তারা জানান, নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী নেতাদের প্রতীক বরাদ্দের কাজ শেষ হয়েছে। এখন পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন তৈরির নতুন কাজ শুরু হবে। জনসাধারণের কাছে নিজেকে বা নিজের প্রার্থীকে পরিচিত করে তুলতে নেতারা নিজেদের নাম ও ছবি দিয়ে পোস্টার, ফেস্টুন তৈরি করে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে টানিয়ে দেবেন।

ছাপাখানার মালিক গোলাম সারওয়ার বলেন, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে পোস্টার তৈরির অর্ডার তত বেশি আসতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে অনেকে আগাম বুকিং দিয়ে রেখেছেন। সব মিলে নির্বাচন ঘিরে পোস্টার তৈরিতে ছাপাখানায় ব্যস্ততা বাড়তে শুরু করেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা মূলত বছরের পুরোটা সময় ডায়েরি, ক্যালেন্ডার ও বই ছাপার কাজ করি। নির্বাচন বা কোনো দিবসে পোস্টার তৈরির কাজ বেশি আসে। আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। ইতোমধ্যে পোস্টার তৈরির জন্য পর্যাপ্ত কাগজ, বিভিন্ন ধরনের রঙ ও প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ করে রেখেছি। নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ হয়ে গেছে। এখন পোস্টার ছাপানোর অর্ডার আসতে শুরু করবে।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ