২৯ অক্টোবর ২০২৫

কক্সবাজারে ‘করোনা’ রোধে আকাশ ও স্থল পথে থার্মাল স্ক্যানার

সায়ীদ আলমগীর,কক্সবাজার »

বিশ্বময় আতঙ্ক ছড়ানো করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য সংক্রমণ মোকাবিলায় পর্যটন শহর কক্সবাজারে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা নেয়া হয়েছে। আকাশ ও স্থল পথে কক্সবাজারে আসাদের পরীক্ষায় বিমান ও স্থলবন্দর এবং বাসটার্মিনালে করোনাভাইরাস শনাক্তে বসানো হয়েছে থার্মাল স্ক্যানার।

এতে কক্সবাজারে আগত দেশি-বিদেশি সকল যাত্রীকে থার্মাল স্ক্যানারে পরীক্ষা করছেন মেডিকেল টিমের সদস্যরা। নজরদারি রাখা হচ্ছে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা উপস্থিতির ক্যাম্পগুলোতেও।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, এখনো পর্যন্ত কক্সবাজারে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কাউকে পাওয়া যায়নি। এরপরও জেলা সদর, রামু এবং চকরিয়ায় পৃথকভাবে ১০০ শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

পর্যটন ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের নিয়ে শনিবারও করোনাভাইরাস সংক্রান্ত পৃথক দুটি সভা জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে করা হয়। জেলা প্রশাসক বলেন, চলমান সময়ের বিশ্বময় আতঙ্ক ‘করোনা ভাইরাস’ সংক্রান্ত রাষ্ট্রীয় নির্দেশনা মেনে চলতে সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। নিজের সচেতনতার পাশাপাশি অপরকেও সচেতন করে কোন গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। এর ব্যত্য়য় ঘটলে রাষ্ট্রীয় আইনানুসারে নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন।

সভায় পরিবহন সেক্টরের কর্মচারীদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়ে বাস টার্মিনালসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ স্টপেজে করোনা থেকে বাঁচতে করণীয় বিষয়ে মাইকিং-এর ব্যবস্থা ও বাসে ভ্রমণকারী যাত্রীদের হাত পরিষ্কারের ব্যবস্থা রাখার কথা বলা হয়েছে। সভায় বাসটার্মিনাল, বাস ও কাউন্টারগুলোতে করোনা বিষয়ক সচেতনতার জন্য হটলাইনের নাম্বার সম্বলিত পোস্টার লাগানো, যথাসম্ভব ১ মিটার বা ৩ ফুট দূরে থেকে কথাবার্তা বলাসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়া হয়।

অপরদিকে, পর্যটন সংশ্লিষ্টদের নিয়ে করা সভায় হোটেল, রেস্তোরাঁ, কীটকট, বীচ বাইকসহ পর্যটনের সকল ক্ষেত্রে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা, হোটেল সমূহে আগত পর্যটকদের ভ্রমণ ইতিহাস লিপিবদ্ধ করা, প্রত্যেক সেক্টরের কর্মচারীদের সচেতন করা এবং যথাসম্ভব ৩ ফুট দূরে থেকে কথাবার্তা বলার নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

বৈঠকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাজাহান আলি, সহকারী সিভিল সার্জন ডা. মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর, জেলা জাসদের সভাপতি ও পরিবহন নেতা নইমুল হক চৌধরী টুটুল, শামীমুল হক, বিআরটিএ কক্সবাজার অফিসের ইন্সপেক্টর আরিফুল ইসলামসহ পরিবহন ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহবুবুর রহমান জানান, পর্যটন নগরীতে করোনা মোকাবিলায় প্রস্তুতি হিসেবে বিমান বন্দর, টেকনাফ স্থলবন্দর ও বাস স্টেশনে মেডিকেল টিম বসানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট নিয়ে আগত পর্যটকদের পরীক্ষা করা হচ্ছে। নজরদারি রাখা হচ্ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও। সেখানে কর্মরত এনজিও-আইএনজিওর স্বাস্থ্য বিষয়ক কার্যক্রমে জড়িতদের বিশেষ নির্দেশনা দেয়া রয়েছে।

‘কারো মাঝে করোনার কোন লক্ষণ দেখা গেলে আতঙ্ক না ছড়ায় মতো যথাযত চিকিৎসার আওতায় আনার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস পরীক্ষায় সবখানেই পালা করে ২৪ ঘণ্টা মেডিকেল টিম কাজ করছে বলে নিশ্চিত করেন সিভিল সার্জন।’

কক্সবাজার বিমানবন্দরের ম্যানেজার একেএম সাইদুজ্জামান জানান, ১৩টি ফ্লাইটে কক্সবাজারে প্রতিদিন হাজারেরও বেশি যাত্রী আসা-যাওয়া করে। আকাশ পথে আসা সব যাত্রীকেই থার্মাল স্ক্যানারে পরীক্ষা করা হচ্ছে।

টেকনাফ স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আফছার উদ্দিন জানান, টেকনাফ স্থলবন্দরে বিভিন্ন মালামাল ও পণ্য নিয়ে মিয়ানমারের ট্রলারগুলো আসে। সেখানে মিয়ানমারেরই লোকজন থাকে। তাই বোটে উঠে মালামাল খালাস করা স্থানীয় শ্রমিকদেরও থার্মাল স্ক্যানে পরীক্ষা করছে মেডিকেল টিমের সদস্যরা।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম/এএ

আরও পড়ুন