৩০ অক্টোবর ২০২৫

মাটিরাঙ্গায় করোনা মোকাবেলায় ইউএনও একাই লড়ছেন, দপ্তর কর্মকর্তারা অনুপস্থিত

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি »

সারাবিশ্বে যেভাবে মহামারি আকারে করোনাভাইরাস সংক্রমণ দিন দিন প্রতিরোধে মাটিরাঙ্গার একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নের বাসিন্দারা যেমন সরকারি নির্দেশণা মানছেন না তেমনিভাবে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে চলেছেন উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ন দপ্তরের কর্মকর্তারাও। যদিও বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের লক্ষ্যে কর্মস্থলে সার্বক্ষণিক থাকার নিদের্শনা রয়েছে।

ফলে মহামারি করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের পাশে পাচ্ছেন না মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিভীষণ কান্তি দাশ।

সোমবার (৫ এপ্রিল) পর্যন্ত মাটিরাঙ্গার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আক্তার ববি, মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. খায়রুল আলম, মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রকৌশলী মো. মনির হোসেন ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ণ কর্মকর্তা রাজকুমার শীল, উপজেলা খাদ্য অফিসার রূপঙ্কর চাকমা, মাটিরাঙ্গা উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা শেখ আমরাফ উদ্দিন, উপজেলা রিসোর্স ইনস্ট্রাক্টর মো. আসগর হোসেন ও সহকারী প্রোগ্রামার রাজীব রায় চৌধুরী ছাড়া কোনো কর্মকর্তাকেই কর্মস্থলে পাওয়া যায়নি।

ফলে জনসংখ্যা ও আয়তনের দিক থেকে মাটিরাঙ্গায় করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে সরকারের নিদের্শনা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিভীষণ কান্তি দাশ।

এদিকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয় সাধনসহ জনসচেতনা কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নে আট জন ট্যাগ অফিসার নিয়োগ দেয়া হলেও মাটিরাঙ্গা পৌরসভায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আক্তার ববি, তাইন্দং ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত মাটিরাঙ্গা উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা শেখ আশ্ররাফ উদ্দিন, উপজেলা রিসোর্স ইন্সট্রাক্টর মো. আসগর হোসেন ছাড়া আর কাউকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা।

ফলে এসব ইউনিয়নে সরকারী খাদ্য সহায়তা বিতরণসহ জনসচেতনা কার্যক্রম পরিচালনায় হিমশিম খাচ্ছেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিভীষণ কান্তি দাশ।

যেসব কর্মকর্তা সরকারি নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে মাটিরাঙ্গা উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির পাটোয়ারি, সমবায় কর্মকর্তা মো. আমান উল্ল্যাহ চৌধুরি, পরিসংখ্যান কর্মকর্তা এসএম রুবাইয়াত তানিম, শিক্ষা অফিসার মো. মনিরুজ্জামান, ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মাসুম ভুঁইয়া, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো. ওবায়েদুল হক, মৎস কর্মকর্তা আরিফুর রহমান কর্মস্থলে উপস্থিত না থেকে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন

কোন কর্মকর্তার সহযোগিতা না পেলেও উপজেলা পরিষদের কর্মচারী ও স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে স্বেচ্ছাসেবকদের দিয়ে সরকারী খাদ্য সহ্যায়তা প্যাকেটজাত করে জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় কর্মহীন লোকদের বাড়ি বাড়ি পৌছে দিচ্ছেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিভীষণ কান্তি দাশ।

সার্বক্ষণিক কর্মস্থলে না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা ও অমতলী ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার মো. হুমায়ুন কবীর পাটোয়ারী মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছ থেকে ছুটি নিয়েছেন বলে দাবী করেন।

তবে তার এ দাবি মিথ্যাচার উল্লেখ করে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, এ পরিস্থিতিতে ছুটি দেয়ার প্রশ্নই উঠে না। এমনকি তিনি বা কোন কর্মকর্তা আমার কাছে লিখিত বা মৌখিকভাবে কোন ছুটি নেয়নি।

এ বিষয়ে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, কর্মকর্তাদের থাকার আবাসিক ভবন বয়েছে কিন্তু কেউ কেউ থাকলেও অনেকেই শুরু থেকেই কর্মস্থল ত্যাগ করেছেন। সরকারের নিদের্শনানুযায়ী সার্বক্ষণিক কর্মস্থলে থাকার বিষয়টি প্রতিটি দপ্তরের কর্মকর্তাদের জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

দু’চার জন কর্মকর্তা ছাড়া আর কাউকে না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, সরকারী নির্দেশনা উপক্ষো করে কর্মস্থল ত্যাগ করা কোন ভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম/এএ

আরও পড়ুন