আমিনুল হক বাবু »
‘বাঘে ধরলে আঠারো ঘা আর পুলিশে ধরলে নাকি ছত্রিশ ঘা’ একথা বাঙালির মাঝে প্রচলিত। পুলিশের কথা উঠলেই নেতিবাচক প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠতো। অথচ আজ সেই পুলিশই বর্তমানে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ইতিবাচক ভূমিকায় মাঠে। হাসিমুখে করোনার আঘাতে মৃত্যুকে করছে বরণ। করোনার এই মহা দূর্যোগে পুলিশের কনস্টেবল থেকে আইজিপি পর্যন্ত প্রমান করলো পুলিশ প্রকৃতই জনগণের বন্ধু।
করোনার এই ক্রান্তিলগ্নে দেশব্যাপী পুলিশের ভূমিকা বর্তমান সময়ে অত্যন্ত প্রশংসনীয়। যার শুরুটা হয় চট্টগ্রাম দিয়েই। করোনা আঘাত হানার শুরুতেই চট্টগ্রাম মহানগরীতে পুলিশ কমিশনার মাহবুবর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিটি থানার ওসিদের নিয়ে সমন্বিত টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে দুর্দান্ত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। যেখানেই করোনা রোগী সেখানেই ছুটে যাচ্ছেন। সর্বোচ্চ মমতায় পৌঁছে দিচ্ছেন হাসপাতালে।কর্মহীন, নিম্নবিত্ত কিংবা সংকোচবোধে জর্জরিত মধ্যবিত্ত সবার ঘরেই পৌঁছে যাচ্ছে পুলিশের ভালোবাসার উপহার। অঘোষিত লকডাউনের দুঃসময়ে কারো ঘরের বাজার কিংবা ঔষধ যে কোন জরুরি প্রয়োজনে ফোন দেয়া মাত্রই চাহিদা মেটাচ্ছে তার। এ যেনো পুলিশ নয়, সাক্ষাৎ দেবদূত।
প্রসব বেদনায় কাতর সন্তান সম্ভবা কিংবা স্ট্রোক করে হঠাৎ বিপদগ্রস্থদের হাসপাতালে পৌঁছে দিচ্ছে পুলিশের গাড়ী। চিকিৎসা সেবায় ব্যাস্ত ডাক্তার ফোন করলেই হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার উদাহরনও অগুনতি।
অপ্রতিরোধ্য করোনার লাগামহীন প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে, সামাজিক দুরত্ব বাস্তবায়নে এবং মানুষকে ঘরে রাখতে পুলিশের ভূমিকা অসাধারণ।
এসব কাজে পুলিশের কঠোরতার বিপরীতে হাসিমুখের ভালোবাসা দেশের মানুষ মনে রাখবে দীর্ঘদিন।
হয়তো বিদায় নেবে করোনা, কিন্তু এই মহামারী কালে জীবন বিপন্ন করে যে অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করলো পুলিশ বাহিনী তা অক্ষয় হবে অনন্তকাল। পরিশেষে রবীন্দ্রনাথের কবিতার মতোই বলতে চাই-
” উদয়ের পথে শুনি কার বানী
ভয় নাই ওরে ভয় নাই..
নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান
ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই…”
লেখক : সিনিয়র ডেপুটি গভর্নর, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন













