বাংলাধারা প্রতিবেদন »
চট্টগ্রামের বিশেষায়িত তিন হাসপাতাল করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীতে ঠাসা, এখন আর নতুন রোগী ভর্তির জায়গা নেই। শয্যা খালি হওয়া সাপেক্ষে ভর্তি হওয়া যাবে বলে হাসপাতাল থেকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে কেবল চট্টগ্রামের চেয়ে এই মুহূর্তে করোনা রোগী বেশি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগর ও জেলা-উপজেলায় সরকারিভাবে ৩১৫ জন করোনা রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ১১০ জন, ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি হাসপাতালে ৩০ জন এবং ফিল্ড হাসপাতালে ৫০ রোগী একসঙ্গে চিকিৎসা নিতে পারছেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল যুক্ত হওয়ায় আগামী সপ্তাহ থেকে ৪১৫ কোভিড রোগী একসঙ্গে চিকিৎসা সুবিধা পাবেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, করোনা রোগীদের মধ্যে ৪০ শতাংশের মৃদু উপসর্গ থাকে। তাঁরা ঘরেই চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হতে পারেন। বাকি ৬০ শতাংশ রোগীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে হয়। করোনা উপসর্গের ১০ শতাংশ রোগীর জন্য আইসিইউ বা ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন। কিন্তু চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে সাকল্যে ১০টি আইসিইউ আছে।
বিআইটিআইডি ও ফিল্ড হাসপাতালে কোনো আইসিইউর ব্যবস্থা নেই। করোনা রোগীদের জন্য চট্টগ্রামে সবচেয়ে বড় হাসপাতালের নাম চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল। ইতিমধ্যে সেখানে ১১০ শয্যার সব প্রায় পূরণ হয়ে গেছে। এই হাসপাতালে কেবল আইসিইউর সুবিধা আছে।
এখানকার তত্ত্বাবধায়ক অসীম কুমার নাথ বলেন, ‘পুলিশসহ সরকারি একাধিক সংস্থা থেকে অনেক রোগী ভর্তি হওয়ার জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। কিন্তু এখন আমাদের হাসপাতালে কেউ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলে আমরা নতুন রোগী ভর্তি করতে পারব।’ একইভাবে ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি ও ফিল্ড হাসপাতালে শয্যা খালি নেই বলে সেখানকার চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। এ অবস্থায় সবার নজর এখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দিকে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিচতলায় চর্ম ওয়ার্ডকে কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা গতকাল সরকার অনুমোদন দেয়। আগামী ৫ থেকে ৬ দিনের মধ্যে এখানে রোগী ভর্তি শুরু হবে। সর্বোচ্চ ১০০ জন রোগী এখানে চিকিৎসা পাবেন।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগরের তিনটি হাসপাতাল করোনা রোগীতে ভরে গেছে। আমরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি ওয়ার্ড পেয়েছি। সেটি প্রস্তুত হচ্ছে। আমরা চট্টগ্রাম হলিক্রিসেন্ট হাসপাতালও চালু করতে চাই।’
পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতাল, বন্দর ও সিটি করপোরেশনের হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তি করার পরিকল্পনা আছে বলে সিভিল সার্জন জানান।
তিনি বলেন, ‘এরপর বেসরকারি মেডিকেল কলেজও আমাদের লাগবে। তবে এসব হাসপাতাল চালু করতে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।’
প্রতিদিন চট্টগ্রাম নগর ও জেলায় নতুন রোগী শনাক্ত হচ্ছেন ৭০ থেকে ৮০ জন। গত শনিবার রাতে আরও ৬৭ রোগী বেড়ে চট্টগ্রামে করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৮৩। আর চট্টগ্রাম বিভাগে রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৬১৬। এর মধ্যে চট্টগ্রামে ১০০ এবং চট্টগ্রামসহ বিভাগের ৩০৫ জন সুস্থ হয় বাড়ি ফিরে গেছেন। চট্টগ্রামে মারা গেছেন ৩৬ জন এবং বিভাগে মৃতের সংখ্যা ৫৯। বাকি রোগী হাসপাতাল কিংবা নিজ বাসায় চিকিৎসাধীন আছেন।
বাংলাধারা/এফএস/টিএম













