২৪ অক্টোবর ২০২৫

রাঙ্গুনিয়ায় পাহাড় কাটার দায় চাপালেন বৃদ্ধ মায়ের ওপর!

বাংলাধারা প্রতিবেদন »

করোনাকালে মানুষ যেখানে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে ব্যস্ত সেখানে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় উপজেলায় দিনরাত প্রকাশ্যেই পাহাড় কাটার ঘটনা ঘটছে প্রশাসনের নাকের ডগায়। আইনের তোয়াক্কা না করেই তিনভাই একজোট হয়েই দিনরাত প্রকাশ্যে পাহাড় কাটছে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটার ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের রূপনগর সংলগ্ন উড়ইল্যে পাড়া এলাকায় নতুন রাস্তার পাশে গত ১ মে থেকে ১৪ মে পর্যন্ত টানা পাহাড় কাটা হয়েছিল। পূর্ব সরফভাটা সিকদার পাড়া এলাকার মৃত কালু মিয়া সিকদারের পুত্র রহমত আলী, মোহাম্মদ আলী ও আশরাফ আলী নামের তিন ভাই একজোট হয়েই প্রথম দিকে প্রকাশ্যে পাহাড় কাটছিলো বলে জানায় এলাকাবাসী। গত ১৪ মে গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদের প্রকাশিত হওয়ার পর সাময়িকভাবে পাহাড় কাটা বন্ধ হলেও ফের শুরু হয়ে গেলো সেই পাহাড় কাটার উৎসব।

গত ১১ জুন (বৃহস্পতিবার) থেকে পাহাড় কাটা এসব মাটি ট্রাক ভর্তি করে উপজেলার সরফভাটার বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করা হচ্ছে বলে ফের অভিযোগ উঠে। এমনকি সরফভাটার সিপাহি পাড়া এলাকায় বিল জমি ভরাটের কাজেও বিক্রি করা হচ্ছে এসব পাহাড় কাটা মাটি। পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করার পাশাপাশি একই এলাকায় নির্বিচারে বনভূমি উজাড় করার অভিযোগও উঠছে তাদের বিরুদ্ধে।

এছাড়াও এই পাহাড়টির গাঁ ঘেঁষে গড়ে উঠেছে সরফভাটা-শিলক বিকল্প সংযোগ সড়কটি। নির্বিচারে এই পাহাড় কাটার ফলে ভারী বর্ষণে পাহাড় ধ্বসে যানচলাচলে বিঘ্নিত হয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির আশংকা বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে।

নুরজাহান নামের একজন স্থানীয় জানান, অনেকদিন ধরে পাহাড় কাটছে তারা তিন ভাই মিলে। আইনের তোয়াক্কা না করেই দিনে রাতে প্রকাশ্যে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করছে তাঁরা। কেউ কিছু বললেই রহমত আলী, মোহাম্মদ আলী ও আশরাফ আলীরা এই তিনভাই গালিগালাজ করে মারতে তেড়ে আসে। গালিগালাজ ও হুমকি-ধমকির ভয়ে কেউ কিছু বলছেও না। এমনকি সহ-অংশীদারদের জমিজমাও তাঁরা তিন ভাই জবরদখলে দখল করে রেখেছে। চেয়ারম্যান ডেকে তাদের বাধা দিলেও কোন ফল পাওয়া যায়নি।

এ প্রসঙ্গে রহমত আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি এসব কিছু জানি নাহ, আমি আসলে কয়েকদিন যাবত বাড়ীর বাইরে। তবে অভিযোগ আংশিক সত্য। আমরা ভাইয়েরা কেউ পাহাড় কাটি নাই। কেটেছেন আমার আম্মা। তিনি আরও আগে তার ওষুধ খরচের জন্য মাটি বিক্রি করেছিলো। তিনিই বাড়ি, গাছপালা এসব দেখা শোনা করেন।

এ বিষয়ে সরফভাটা ইউপি চেয়্যারমান শেখ ফরিদ উদ্দীনের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার পক্ষ থেকে সাড়া মেলেনি।

এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে বড় কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার ওসি সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ আসেনি। তবে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানান তিনি।

পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জমির উদ্দিন জানান, অতি দ্রুত এই বিষয়ে পরিদর্শন করে কার্যকরি পদক্ষেপ নেয়া হবে।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম/এএ

আরও পড়ুন