২৬ অক্টোবর ২০২৫

মিরসরাইয়ে করোনা চিকিৎসায় প্রয়োজন ‘সমস্যা দূরীকরণ’

শাহ আব্দুল্লাহ আল রাহাত »

ধীরে ধীরে মৃত্যুপুরীর নগরীতে পরিণত হওয়া চট্টগ্রাম শহরের চিকিৎসায় সেবায় দেখা দিয়েছে নানামুখী সংকট। তাই শহরমুখী চিকিৎসার দিকে চাপ কমিয়ে মিরসরাইয়ের বাসিন্দাদের দাবি- উপজেলায় অতিদ্রুত করোনার বিস্তাররোধে চিকিৎসাসেবা চালু করা হোক।

মিরসরাইয়ে চিকিৎসাসেবা নিয়ে বাংলাধারায় প্রকাশিত গত দুই পর্ব ছিলো গণমানুষের দাবি নিয়ে লেখা, যেখানে ছিলো উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত ১২টি সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চালু হোক করোনার চিকিৎসাসেবা। তবে সেক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে হাসপাতালগুলোকে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ নিলে এখানাকার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের যে কোনো একটি ওয়ার্ডকে আইসোলেশন করবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।

তিনি আরো জানান, হাসপাতালে একটি মাত্র প্রবেশদ্ধার থাকায় সেক্ষেত্রে অনেকটা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হবে। কেননা নিরাপদ দূরত্ব এবং সাধারণ চিকিৎসা সেক্ষেত্রে বির্পযস্ত হবে। সরকারি এই হাসপাতাল ছাড়াও অন্যান্য বেসরকারি এই হাসপাতালগুলোতে একই সমস্যার কথা জানান হাসপাতালের মালিকরা।

মস্তাননগরে অবস্থিত উপজেলার একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আপাতত চিকিৎসক সংকট ও বিদ্যমান। কেননা চট্টগ্রামে করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে সেখানে ছুটে যান এখানকার প্রায় ১২ থেকে ১৩ জন ডাক্তার। এখানে বর্তমানে সুরক্ষা বুথ স্থাপন করা অতিব জরুরি হয়ে পড়েছে। এজন্য দরকার প্রয়োজনীয় উপকরণ নিয়ে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া।

করোনা ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা দিতে অক্সিজেন ও নেব্যুলাইজারের ব্যবস্থা করা। কারণ আধুনিক কিছুই না থাকালে সঠিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও সেবা সম্ভব নয়।এমতাবস্থায় করোনা নিয়ে শঙ্কাগ্রস্থ থাকবেন রোগী স্বজনরা। বর্তমানে এই হাসপাতলে একটিও আইসিইউ বেড নেই, ভেন্টিলেটরও নেই। চিকিৎসক, নার্স ও অন্য কর্মীদের মাস্ক, গাউন কোনো কিছুই পর্যাপ্ত নেই। তাই অতিদ্রুত এসব আনুষঙ্গিক বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের কথা জানান স্থানীয়রা।

উপজেলার মঘাদিয়ার বাসিন্দা কবির সালেহ জানান, আমরা প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দা অন্তত আমাদের কথা চিন্তা সরকারি ভাবে উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানাই।

অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে রয়েছে নানাবিধ অসুবিধা কেননা শহরমুখী চিকিৎসা সেবা গ্রহণের পরিবর্তে উপজেলার অধিকাংশ বাসিন্দারা বেছে দিয়েছেন এসব হাসাপাতালগুলোকে। এখানকার প্রত্যেকটি হাসপাতালে রয়েছে একটিমাত্র প্রবেশদ্ধার।তাছাড়া করোনা উপযোগী পরিবেশে তৈরি করা হলে হুমকির মুখে পড়বে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসকসেবা ও জীবন। তাই বিকল্প ব্যবস্থা বা সমস্যা সমাধানের তাগিদ সবার।

বারইয়ারহাট কমফোর্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন জানান, আমরা সরকারি নির্দেশনা ফেলে সবরকম পরিস্থিতির জন্য, মিরসরাইয়ের জন্য আমাদের হাসপাতালগুলোকে করোনা উপযোগী করে গড়ে তুলবো। তবে সেক্ষেত্রে শিশু এবং গর্ভবতী নারীদের চিকিৎসা সেবায় নানাবিধ সমস্যা ঘটতে পারে। এছাড়া ব্যাপকভাবে প্রয়োজন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা।

মিরসরাই উপজেলার ১টি সরকারি এবং ১১বেসরকারি হাসপাতাল প্রত্যেক্ষ পরিদর্শনে দেখা যায়, এখানে কোনো হাসাপাতালে ১টি আইসিইউ পর্যন্ত নেই। অথচ মুমূর্ষু করোনা রোগীদের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই অতিশীঘ্রই যে সরকারিভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসিইউ স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন সমাজের বিশিষ্টজন জনেরা। তাই সবার শেষ কথা, করোনার এই যুদ্ধে আমাদের লড়াই করতে হলে আগে প্রয়োজন যাবতীয় সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত থাকা।

মিরসরাইয়ে চিকিৎসাসেবা নিয়ে বাংলাধারা’র গত দুই পর্বে ছিলো চিকিৎসাসেবা নিয়ে নানা সম্ভাবনার কথা, তবে এই সম্ভবনাকে বাস্তবে রুপ দিতে হলে প্রয়োজন সমস্যা দূরীকরণ। নানাবিধ সমস্যা এবং সমস্যা দূরীকরণ প্রতিবেদনের মধ্যে দিয়ে শেষ হলো ধারাবাহিক পর্বের তৃতীয় পর্ব। চতুর্থ পর্ব পড়তে সাথেই থাকুন।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম/এএ

আরও পড়ুন