কক্সবাজার প্রতিনিধি »
কাল্পনিক সংবাদ প্রচারের জেরে একটি নিউজ পোর্টালের সম্পাদক ও প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে মামলা করেন কক্সবাজার সদরের ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল কাদের মাস্টার। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। এরপরই সাবেক চেয়ারম্যানের আবদুল কাদের মাস্টারের ছবি ব্যবহার করে তৈরী একটি ‘ফেসবুক আইডি’ থেকে মামলায় অভিযুক্ত সম্পাদক ও সাংবাদিককে হত্যার হুমকিসহ নানা কথা উল্লেখ করে একটি পোস্ট দেয়া হয়। বিষয়টি নজরে আসার পর নিজের নামে তৈরী আইডিটির ব্যবহারকারি সনাক্ত করতে সাধারণ ডায়রি করেছেন সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল কাদের (জিডি নং-৩০৫; তারিখ-৭ জুলাই ২০২০)।
শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের এক রেস্তুরায় অনাড়ম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব বিষয় জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল কাদের বলেন, গত ৩০জুন কক্সবাজারের ঈদগাঁও থেকে নিয়ন্ত্রণ করা ‘বে-বেঙ্গল নিউজ’ নামে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল আমার খতিয়ানভুক্ত জায়গাকে পানি উন্নয়ন বোর্ডেও (পাউবো) জমি উল্লেখ করে আমাকে দখলদার বানিয়ে প্রতিবেদন প্রচার করে। ‘পাউবোর জমি দখল করে সাবেক চেয়ারম্যানের জমিদারি!’ শিরুনামে প্রচার করা কাল্পনিক কাহিনী পড়ে মনে হয়েছে প্রতিবেদক শাহিদ মোস্তফা শাহিদ কারো কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে সাংবাদিকতার নীতিমালার উল্টো কাজই করেছেন।
‘প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে আমার মুঠোফোনে নাকি যোগাযোগ করে না পাওয়ায় এ বিষয়ে বক্তব্য পাওয়া যায়নি। একই কথা বলা হয়েছে পাউবোর কক্সবাজারের নির্বাহি প্রকৌশলীকে নিয়েও। আমি চেয়ারম্যান থাকাকালীন জায়গাটি দখল করেছি বলে মনগড়া কাল্পনিক সংবাদ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে প্রতিবেদক ও নিউজ পোর্টালের সম্পাদক কোন সঠিক প্রমাণপত্র দেখাতে পারেননি। আমার জন্য চরম মানহানিকর সংবাদটি প্রতিবেদক, বে বেঙ্গল নিউজের সম্পাদক ওসমান সরওয়ার ডিপু এবং এমডি শাহেদ নামে ফেইসবুক আইডি থেকে শেয়ার করায় তাদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে এজাহার দায়ের করি। যা এখন তদন্তাধীন।’
এটি জানার পর ভূঁয়া সংবাদটির পক্ষে কোন প্রমাণ দাঁড় করাতে ব্যর্থ হবে এটা বুঝতে পেরে তারা পোর্টাল এবং ফেসবুক আইডি থেকে তা মুছে দেয়। ইত্যবসরে কে বা কারা আমার ছবি দিয়ে ‘আব্দুল কাদের’ নামে ৬জুন একটি ভূঁয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলে। উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদটির কথা উল্লেখ করে সেই আইডি থেকে নিউজটির প্রতিবেদক শাহিদ মোস্তফা শাহিদসহ অন্যদের গুম ও হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। যা নিউজটির চেয়েও সাবেক চেয়ারম্যান হিসেবে আমার জন্য আরো মারাত্মক মানহানিকর।
তিনি আরো বলেন, এখন তথ্য প্রযুক্তির যুগ। কে বা কারা কোন মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে কোন আইডি চালান তা মুহুর্তে সনাক্ত করা যায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিজ্ঞ সদস্যরা ইতোমধ্যই এ ধরণের অনেক অপপ্রচারকারিকে ধরে আইনের আওতায় এনেছে। তাই আমাকে ফাঁসাতে আমার এজাহারে অভিযুক্তদের গুম ও হত্যা করার কথা এবং কুরুচিপূর্ণ ভাষায় গালিগালাজ করা খুবই নিন্দনীয়, আইনত মারাত্মক অপরাধ। এ কারণে আড়াঁলে বর্ণচোরা হয়ে কলকাঠি নাড়া ব্যক্তিদের সনাক্ত করতে আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি।
সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল কাদের বলেন, ইসলামপুর ও কক্সবাজার শহর এবং বিভিন্ন মৌজায় আমার নামে খতিয়ান ভুক্ত প্রায় ৩২ একর জমি রয়েছে। সরকারি কোন খাস কিংবা পিএফ কোন জমি আমার দখলে ছিলও না এখনো নেই। পাউবোর যে জমি আমি দখল করেছি বলে প্রতিবেদন করা হয়েছে তা ১৯৮২-৮৩ সালে আমার কেনা জমি। আর আমি চেয়ারম্যান হয়েছি ১/১১ এরপর। চেয়ারম্যান হবার পর কোন জমি কিনেছি এমন কোন প্রমাণ নেই; সেখানে দখলতো পরের বিষয়। এটি প্রমাণ আছে, প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে চেয়ারম্যান হবার পর জমি বিক্রি করে উন্নয়ন করেছি। অজ্ঞাত আবেদনকারি কর্তৃক আমার বিরুদ্ধে দেয়া দুর্নীতির অভিযোগ পেয়ে দুদক এবং সরকারি নানা সংস্থা তদন্ত করে চেয়ারম্যান হবার পর আমার জমি বিক্রির নথি দেখে হতবাকই হয়েছিলো।
সাবেক চেয়ারম্যান বলেন, এখনো চ্যালেঞ্জ করে বলতে চাই আমার বিরুদ্ধে নিজ এলাকাসহ কোথাও কোন দখলদারিত্ব বা অনিয়মের যথাযথ প্রমাণ দিতে পারলে আমি নিজেই আইনে হাতকড়া পরবো। শুধুমাত্র হয়রানির স্বার্থে অহেতুক মানহানিকর প্রচারণা চালানো কোন ধর্মেই সমর্থন যোগ্য নয়। তাই আমার নামে (আব্দুল কাদের) হুমকি দিয়ে পোস্ট করা আইডিটা বের করে তা ব্যবহারকারিদের আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের আন্তরিক সহযোগিতা চাচ্ছি।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি (তদন্ত) মো. খায়রুজ্জামান জিডি হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আইডিটার বিষয়ে সুক্ষ্ম তদন্ত চলছে। আশাকরি শিগগিরই অপরাধীদেকে সনাক্ত করা সম্ভব হবে।
বাংলাধারা/এফএস/টিএম/এএ













