৭ ডিসেম্বর ২০২৫

উৎসবের বড়দিন আজ

সম্পাদকীয় »

গির্জায় গির্জায় আজ প্রার্থনা হবে। পৃথিবী তথা মানবতার কল্যাণে মহান যিশুর শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেয়া হবে মানুষে মানুষে। আলোকসজ্জা, ক্রিমসাস ট্রি, সান্তাক্লজের উপহার প্রদানে সময় কাটবে আনন্দে। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শুভ বড়দিন (ক্রিসমাস) আজ।

দুই হাজার বছর আগে এই শুভ দিনেই পৃথিবীকে আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেন খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিস্ট। বেথেলহেমের এক গোয়ালঘরে কুমারিমাতা মেরির কোলে জন্ম হয়েছিল যিশুর। দিনটি খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের জন্য সবচেয়ে আনন্দের। ঈশ্বরের অপার মহিমা ও মানবজাতিকে পাপ থেকে মুক্তির জন্য যিশুখ্রিস্টের জন্ম হয়েছিল বলে খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস।

খ্রিস্টীয় মতে, যিশু ঈশ্বরের পুত্র এবং জগতের সব মানুষের ত্রাণকর্তা। শাসকের অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে তিনি শোষিত, বঞ্চিত ও নির্যাতিত মানুষের পক্ষ নিয়েছিলেন। এ কারণে তিনি ওই সময়ের শাসকের নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন এবং মাত্র ৩৩ বছর বয়সে তাঁকে ক্রশবিদ্ধ হয়ে জীবন দিতে হয়েছিল।

জিঙ্গেল বেলের সুরে সুরে ক্রিসমাস আসে আনন্দের উপলক্ষ নিয়ে। যিশুর জন্মের বহু বছর পর থেকে বিশ্বের খ্রিষ্টানরা এ দিনটিকে আনন্দ ও মুক্তির দিন হিসেবে পালন করতে শুরু করেন। ৪৪০ সালে পোপ এ দিবসকে স্বীকৃতি দেন। তবে উৎসবটি জনপ্রিয়তা পায় মধ্যযুগে। সে সময় এর নাম হয় ‘ক্রিসমাস ডে’। বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই ক্রিসমাস দিবস সরকারি ছুটির দিন। প্রবাসী বাংলা ভাষাভাষীরাও এই আনন্দের সঙ্গী হয়েছে।

যিশু নামের সেই শিশুটি বড়ো হয়ে পাপের শৃঙ্খলে আবদ্ধ মানুষকে মুক্তির বাণী শুনিয়েছিলেন , ‘ঘৃণা নয়, ভালোবাসো, ভালোবাসো সবাইকে, ভালোবাসো তোমার প্রতিবেশীকে, এমনকি তোমার শত্রূকেও। মানুষকে ক্ষমা করো, তাহলে তুমিও ক্ষমা পাবে। কেউ তোমার এক গালে চড় মারলে তার দিকে অপর গালটিও পেতে দাও।’ ‘পাপিকে নয়, ঘৃণা করো পাপকে। গরিব-দুঃখীদের সাধ্যমতো সাহায্য করো, ঈশ্বরকে ভয় করো।’

বড়দিন উৎসব নিয়ে বিপুল এই আগ্রহ এখন শুধু মাত্র আর খ্রিষ্টানদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। সব ধর্মের বর্ণের মানুষের কাছে তাই এর আবেদন ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী।

তবে এই বছর করোনা আবহে অন্যান্য উত্‍সবের মতো বড়দিনও কাটবে ঘরে বসেই। কারণ করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনেশন নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চললেও তা এখনও বাজারে আসেনি। তাই বড়দিন পালনেও বাইরে বেরিয়ে ভিড় করা নিরাপদ নয়। নিজেদের সুরক্ষার জন্যই বড়দিনও ঘরে বসে কাটানো উচিত। ঘরে বসে আনন্দের পাশাপাশি প্রার্থনাও করা, যাতে দ্রুত করোনা থেকে মুক্ত হয় আমাদের দেশ, বিশ্ব। সুস্থ হয়ে উঠুক সকল মানুষ।

বাংলাধারা/এফএস/এআর

আরও পড়ুন