২৯ অক্টোবর ২০২৫

পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার মধ্যে ৮৩ শতাংশই শিশু

বাংলাধারা প্রতিবেদন  »

গণমাধ্যম উন্নয়ন ও যোগাযোগ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘সমষ্টি’ জানিয়েছেন, গত ১৪ মাসে সারাদেশে পানিতে ডুবে মারা গেছে ৮৮৫ জন। এরমধ্যে ৮৩ শতাংশই শিশু। দেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত সংবাদ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করে এ তথ্য জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার (০৪ মার্চ) পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু রোধে গণমাধ্যমের করণীয় শীর্ষক ওয়েবিনার থেকে এ তথ্য জানানো হয়। পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু নিয়ে সমষ্টির সংবাদ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনায় সহযোগিতা করে গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই)।

সমষ্টির তথ্যমতে- ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জাতীয় পর্যায়ের গণমাধ্যম ও স্থানীয় অনলাইন পোর্টালে পানিতে ডুবে মৃত্যু নিয়ে মোট ৫০৯টি ঘটনা উঠে এসেছে। এসব ঘটনায় সারাদেশে ৭৩৫ শিশুসহ মোট ৮৮৫ জন ব্যক্তি পানিতে ডুবে মারা যায়। দেশে জাতীয়ভাবে পানিতে ডুবে মৃত্যু নিয়ে কোনো তথ্যব্যবস্থা না থাকায় এ সংখ্যা আরও বেশি হবে বলেও ধারনা করছে সমষ্টি।

২০২০ সালের জুন থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৫৭৭ জন মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায়। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটে আগস্ট মাসে, ১৭১ জন। জুন মাসে ৯১ জন, জুলাই মাসে ১৬৩ জন, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে যথাক্রমে ৭৪ ও ৭৮ জন মারা যায়।
গবেষণায় দেখা যায়, পানিতে ডুবে দিনের প্রথম ভাগে অর্থাৎ সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে ৩৫৫ জন এবং দুপুর থেকে সন্ধ্যার আগে ৩৫৬ জন মারা যায়। এছাড়া সন্ধ্যায় ১৪৬ জন মারা যায়। ১৭ জন রাতের বেলায় পানিতে ডোবে। ১১ জনের মৃত্যুর সময় প্রকাশিত সংবাদ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনায় উঠে আসে, পানিতে ডুবে মৃতদের ৮৩ শতাংশই শিশু। চার বছর বা কম বয়সী ৩১০ জন, ৫ থেকে ৯ বছর বয়সী ২৮৪ জন, ৯-১৪ বছরের ১১০ জন এবং ১৫-১৮ বছরের ৩১ জন। ১৫০ জনের বয়স ১৮ বছরের বেশি।

পানিতে ডুবে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটেছে ঢাকা বিভাগে, ১৯৩ জন। এছাড়া চট্টগ্রামে ১৭২ জন, রংপুরে ১৪১, রাজশাহীতে ১১০, ময়মনসিংহে ১০০, বরিশালে ৬৬ ও খুলনা বিভাগে ৬১ জন মারা যায়। এ সময়ে সবচেয়ে কম মৃত্যু ছিল সিলেট বিভাগে, ৪২ জন।

পরিবারের সদস্যদের যথাযথ নজরদারি না থাকায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পানিতে ডোবার ঘটনা ঘটে। ৭০০ জন বড়দের অগোচরে বাড়ি সংলগ্ন পুকুর বা অন্য জলাশয়ে চলে যায় এবং দুর্ঘটনার শিকার হয়। ১১৬ জন মারা যায় নৌযান দুর্ঘটনায়। পানিতে ডুবে মৃতদের মধ্যে ৫৫ জন বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে।

২০১৭ সালে প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘প্রিভেন্টিং ড্রাওনিং: অ্যান ইমপ্লিমেন্টেশন গাইড’ এ স্থানীয় পর্যায়ের মানুষজনকে সম্পৃক্ত করে দিবাযত্ন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কথা বলেছে। এছাড়া পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু রোধে পারিবারিক পর্যায়ে সচেতনতা তৈরি ও জাতীয়ভাবে কর্মসূচি গ্রহণ করার উপরও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় প্রতিষ্ঠান সুপারিশ করেছে।

বাংলাধারা/এফএস/এআর

আরও পড়ুন