৪ নভেম্বর ২০২৫

খাগড়াছড়িতে উৎসবহীন বৈসাবি

জসিম উদ্দিন জয়নাল  »

বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ধাপের সংক্রমণের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খাগড়াছড়িতে সীমিত পরিসরে উদযাপন করা হয়েছে বৈসাবি উৎসব। চেঙ্গী নদীতে ফুল ভাসিয়ে দিয়ে পার্বত্য অঞ্চলের বসবাসরত উপজাতীয়দের প্রাণের এই উৎসব উদযাপন করা হয়।

সোমবার (১২ এপ্রিল) ভোরে খাগড়াছড়ির চেঙ্গী নদীসহ বিভিন্ন প্রবাহমান ছড়া-খালে ফুল ভাসিয়ে সবার জন্য মঙ্গল কামনা করে শ্রদ্ধাভরে দিনটি উদযাপন করছেন উপজাতীয় শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষেরা।

এবার ফুল বিজুর প্রধানতম প্রার্থনা ছিল করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তিলাভ করা। এছাড়া পুরোনো বছরের দুঃখ গ্লানি ভুলে নতুন বছরে ভালো কিছু প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন পাহাড়ে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টি উপজাতীরা। সকালে খাগড়াছড়ির খবং পড়িয়া এলাকায় চেঙ্গী নদীর পাড়ে নদীতে ফুল ভাসানো উপলক্ষে বসে মিলনমেলা। নানান বয়সের মানুষ বন-জঙ্গল থেকে সংগৃহিত ফুল নিয়ে হাজির হয় নদীর পাড়ে। অনেকে জ্বালায় মোমবাতি।

ফুল ভাসাতে আসা তনুশ্রী চাকমা বলেন, ফুল ভাসানোর মধ্যদিয়ে আমাদের বৈসাবি উৎসব শুরু। প্রতি বছর দিনটির জন্য অপেক্ষায় থাকি। গঙ্গাদেবীর কাছে সবার জন্য প্রার্থনা করেছি। আমরা যেন করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে পারি। সবাই যেন ভালো থাকে।

ধীমান খীসা ও সাধনা চাকমা বলেন, ফুল বিজুর মধ্য দিয়ে পাহাড়ে বৈসাবি উৎসব শুরু হয়েছে। তবে এবার করোনা মহামারির কারণে এবার আয়োজনটুকু ঘরোয়াভাবে পালিত হবে। কোনো আনুষ্ঠানিকতা থাকছে না। আশা করি, আগামী বছর দ্বিগুণ আনন্দ নিয়ে উৎসব আয়োজন করতে পারবো।

মহামারি করোনার কারণে এবার বৈসাবি উৎসবের কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা না থাকলেও পাহাড়ি তরুণ-তরুণীরা ফুল বিজু পালন করেছেন যথারীতি। তবে বৈসাবিকে ঘিরে অন্যান্য বছরের মতো এবার পাহাড়ের পাড়া-পল্লীতে উৎসবের আমেজ নেই। নেই ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার আয়োজনও।

ত্রিপুরা ভাষায় বৈসু, মারমা ভাষায় সাংগ্রাই এবং চাকমা ভাষায় বিজু’ নামে এ উৎসব পালন হয়ে থাকে। পার্বত্য অঞ্চলে ১৯৮৫ সাল থেকে তিন পাহাড়ী জনপদ খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান জেলায় বসবাসরত চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের সম্মিলিত উদ্যোগে বৈসাবি নামের এ উৎসব দীর্ঘদিন ধরে পালন করে আসছে।

বাংলাধারা/এফএস/এআর

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ