খাগড়াছড়ির জালিয়াপাড়া থেকে মহালছড়ি পর্যন্ত ইউরোপীয় মানের সাড়ে ১৫ কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর। এ সড়কটি ব্যবহার করে এখন রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলার লোকজন চট্টগ্রাম শহরে প্রবেশ না করেই ঢাকাসহ সারাদেশে দ্রুত পৌঁছাতে পারবে। এতে কেবল রাঙামাটির লোকজনেরই ঢাকা যেতে তিন ঘণ্টা সময় বাঁচবে। পথ কমে যাবে ৬৮ কিলোমিটার। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মহালছড়ি-সিন্দুকছড়ি-জালিয়াপাড়া সড়কটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার্স কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের তত্ত্বাবধানে ২০ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন নির্মাণ করে।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৬ মাস আগেই এ নির্মাণ কাজ শেষ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা না হলেও সড়কটি সর্বসাধারণের যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। মূল কার্পেটিং সড়কটি ১৮ ফুট প্রশস্ত। এর বাইরে হার্ড সোলডার (দুই পাশের ইটের তৈরি সড়ক) প্রায় ১১ ফুট। সড়কটির ২৪ কিলোমিটার সাইড ড্রেন, ২৮ মিটার কালভার্ট, ৪১০ মিটার গ্রাভিটি ওয়াল, ৬৩০ মিটার রিটেইনিং ওয়াল ও ৮০০ মিটার প্যারাসাইডিং নির্মাণ করা হয়েছে।

মহালছড়ি-সিন্দুকছড়ি-জালিয়াপাড়া সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক ২০ ইসিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আমজাদ হোসেন বলেন, এ সড়কটি পাহাড়ি আবহাওয়া এবং প্রাকৃতিক স্যেন্দর্য পার্বত্য অঞ্চলের মধ্যে এই রাস্তাটি একটি আধুনিক সড়ক হিসাবে নির্মিত হয়েছে।
৫৭ ইস্ট বেঙ্গল, মহালছড়ি জোন এর উপ-অধিনায়ক মেজর দিদারুল ইসলাম বলেন, দূর্গম পাহাড়ে নতুন সড়কটি নির্মিত হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্তার যেমন উন্নতি হয়েছে তেমনি নিরাপত্তা ও সহজ হয়েছে। নির্মাণ প্রকল্পের প্রতিটি পর্যায়েই পাহাড়কে অক্ষত রেখে পাহাড় না কেটে এবং পরিবেশের ক্ষতি না করে উন্নয়ন কাজ করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। সড়কটি আঞ্চলিক ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়ে কাজ করার ক্ষেত্রেও কাজ করতে সহায়ক হবে।

মহালছড়ি-সিন্দুকছড়ি-জালিয়াপাড়া সড়কটি নির্মাণের প্রতিটি পর্যায়ে উন্নত প্রকৌশল ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হয়েছে। ব্যবহার করা হয়েছে উন্নত নির্মাণসামগ্রী। এর সুফল পাবে এলাকার মানুষ। পার্বত্য অঞ্চলে উৎপাদিত পণ্য পরিবহন ও বাজারজাত খুব দ্রুততর হবে এবং পর্যটনশিল্পের প্রসারে ও ভূমিকা রাখবে এই সড়কটি। সবুজ পাহাড়ের ভেতর দিয়ে এঁকেবেঁকে চলে গেছে নতুন সড়কটি। সড়কের দুই পাশে জুম চাষে সবুজ পাহাড়কেই যেন আরো সবুজ করে তোলছে। মেঘাচ্ছন্ন বিকালে এই সড়কে ঘুরতে বের হন অনেকেই।
বাংলাধারা/এফএস/এআর













