১৭ ডিসেম্বর ২০২৫

‘প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের আশীর্বাদ, তবে তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে’- ডা. সেখ ফজলে রাব্বি

চিন্ময় চক্রবর্তী »

মহামারি করোনারা প্রকোপের মধ্যেই বুধবার ১১ আগস্ট থেকে সারাদেশে লকডাউন শিথিল হয়। শিল্পকারখানাসহ সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান চলছে স্বাভাবিক গতিতে। তবে চট্টগ্রাম নগরীর শপিংমলগুলোতে লোকসমাগম কম দেখা গেলেও প্রযুক্তির ছোঁয়ায় লোকসমাগম দেখা মিলছে মোবাইল এবং মোবাইল ফোন সম্পর্কিত জিনিস পত্রের দোকানে। অন্যদিকে জামাকাপড়সহ প্রসাধনীর দোকানে ক্রেতার ছোঁয়া নেই বললেই চলে।

বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) স্যানমার, ইউনেস্কো এবং সেন্ট্রাল প্লাজায় অবস্থিত মোবাইল এবং ইলেকট্রনিক্স এর দোকানে মিলেছে ক্রেতার ভিড়। ক্রেতার ভিড় দেখে বুঝা যায় দিনদিন বাড়ছে প্রযুক্তি সম্পর্কিত পণ্যের চাহিদা।

মোবাইল ফোন কিনতে আসা ক্রেতা সাইফুদ্দিন বলে, ‘লকডাউনের সময় মোবাইল হাত থেকে পড়ে ডিসপ্লে ভেঙে যায়। তাই নতুন করে সার্ভিসিং না করে নতুন নিতে আসলাম।’

প্রসাধনীসহ জামা কাপড়ের দোকানিদের দোকানে গতকাল থেকে আজ পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে মাত্র ১০০০ থেকে ২০০০ টাকার মতো। অন্যদিকে মোবাইল ফোন, হেডফোন, কম্পিউটার এবং মোবাইল ফোন সম্পর্কিত দোকানে বিক্রি হয়েছে ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকারও বেশী।

দিনে দিনে প্রযুক্তি নির্ভর মোবাইল ফোন ইত্যাদির বেচাকেনা দেখে বোঝা যাচ্ছে মানুষের প্রধান চাহিদার কেন্দ্র বিন্দু হতে যাচ্ছে এই প্রযুক্তি। প্রযুক্তির এই চাহিদা বয়ে আনছে সুদিন তবে তার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে শারীরিক ভাবে। রাত জেগে মোবাইল ফোন কম্পিউটার ব্যবহার করায় কমিয়ে দিচ্ছে ঘুমের পরিমাণ। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে দেখা দিচ্ছে উচ্চ রক্ত চাপ। ক্ষতি হচ্ছে মস্তিষ্কের অগ্র ভাগ তথা পশ্চাৎ ভাগ।

দীর্ঘদিন ধরে একটানা স্মার্টফোন ও কম্পিউটার ব্যবহারে চোখের কি কি ক্ষতি হতে পারে এই নিয়ে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের ডাক্তার তাহামিনা পারভীন রিতু বাংলাধারাকে বলেন, ‘একটানা ব্যবহার এর ফলে চোখের মাংস পেশি অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এর ফলে চোখের দৃষ্টি স্বল্পতা, চোখ জ্বালা পোড়া করা, পানি পড়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।’

পর পর লকডাউনের ফলে মানুষ কাটাচ্ছে অবসর সময়। তাতে মোবাইল ফোন ব্যবহার করবার আধিক্য বেড়েই চলছে প্রতিনিয়ত। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শারীরিক সহ মানসিক ভাবে। পারিবারিক সময় কমছে দিন দিন। পারিবারিক সম্পর্কের ভারসাম্য বিরাট বিপর্যয়ের মুখে।

দীর্ঘদিন ধরে প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থা চালু রাখার কারণে মানসিক ও শিখন-সমস্যাও দেখা দিয়েছে। অকাল বয়স্ক শিক্ষার্থীরা ঝুঁকে পড়ছে সাইবার সেক্সচুয়ালের দিকে। একই সাথে প্রতিনিয়তই উন্নতমানের প্রযুক্তির চাপ বেড়ে চলেছে।

কম্পিউটার কিনতে আসা বাঁধন বানিয়ে নিচ্ছে তার নতুন গেমিং পিসি। তিনি বাংলাধারাকে বলে, ‘শুধু গেম না, ক্লাস করতেও ব্যবহার করা হবে এই নতুন পিসিটি।’

সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বাংলাধারাকে বলেন, ‘প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের জন্য আশীর্বাদ তবে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা না হলে মানব শরীরে এবং মানসিকভাবে দেখা যাবে বিপর্যয়। ২ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের কাছ থেকে মোবাইলে দূরে রাখতে হবে। ভাত খেতে না চাইলে মোবাইলে কার্টুন, গেম ইত্যাদি দেখালে মোবাইলের আলো ক্ষতি করতে পারে শিশুদের চোখ।’

বাংলাধারা/এফএস/এআই

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ