জেলা প্রতিনিধি, কক্সবাজার »
অপহরণের দেড়মাস পর অপহৃত সিএনজি চালক মাহমুদুল হকের গলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) দুপুরে দিকে বনপরিচ্ছন্ন কর্মীদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে কক্সবাজারের টেকনাফ বাহারছাড়া হোয়াইক্যং সড়কের হাতিগাদা নামক স্থানের পাহাড়ী জঙ্গল থেকে তার গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
হতভাগা মাহমুদুল হক (৩৯) বাহারছড়া শামলাপুর ইউনিয়নের উত্তর শিলখালী গ্রামের ছালেহ আহম্মদের ছেলে। মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে তার পরিবারের সদস্যরা মাহমুদুল হকের মরদেহ সনাক্ত করেছেন।
বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি নুর মোহাম্মদ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
হোয়াইক্যং রেঞ্জের আওতায়ভূক্ত রইক্ষ্যং বীট কর্মকর্তা মাইন উদ্দনি আহম্মদ চৌধুরী বলেন, সামাজিক বনায়নের জন্য বীটের আওতাধীন ঝোপঝাড় পরিষ্কার করা হচ্ছে। প্রতিদিনের মতো আজও কিছু শ্রমিক জঙ্গল পরিষ্কার করতে যায়। বেলা ১২ টার দিকে হাতিগাদা নামক স্থানে পরিচ্ছন্ন কর্মী অনিল চাকমা একটি গলিত লাশ দেখতে পেয়ে অন্যান্যদের অবহিত করেন। বিষয়টি আমাদের নজরে আসলে আমরা দ্রুত পুলিশকে জানায়।
খবর পেয়ে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি নুর মোহাম্মদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে গলিত মরদেহ উদ্ধার করেন।
আইসি নুর মোহাম্মদ বলেন, গলিত লাশের সন্ধান পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। মরদেহটি উদ্ধার করে টেকনাফ থানায় নিয়ে আইনি পদক্ষেপ শেষে সেখান থেকে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, লাশের পরনের কাপড় অন্যান্য অবয়ব দেখে তার পরিবারের লোকজন লাশটি মাহমুদুল হকের বলে নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, ২৯ জুন রাত অনুমান সাড়ে আটটার দিকে সিএনজি যোগে হোয়াইক্যং ঢালা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন মাহমুদুল হক ও মিজান নামে দুইজন। পথিমধ্যে কুদুমগুহা নামক স্থানে পৌঁছলে ৮/১০ জনের সশস্ত্র গ্রুপ তাদের গাড়ি রোধ করে মাহমুদুল হক ও মিজানকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে ২০ হাজার টাকা মু্ক্তিপণ নিয়ে কাটাখালী এলাকার মিজানকে মুক্তি দিলেও ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ নিয়েও মাহমুদুল হককে মুক্তি দেয়নি অপহরণকারীরা। এ ঘটনায় বিভিন্ন সময় পুলিশ তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছে। আজ তার গলিত লাশ উদ্ধার করা হলো।
স্থানীয় যুবক আনোয়ার হোসেন ও শাহ আলম জানান, যে পোশাকটা দেখে মাহমুদুল হককে সনাক্ত করা গেছে- সেই জামাটা অপহরণের দুদিন আগে সেলাই করে এনে অপহরণের দিন গায়ে দিয়েছিলো। পরণের ব্যাল্টটিও চিনেছেন তার পরিবারের লোকজন।
বাহারছড়া পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মাহমুদুল হকের অপহরণের পর থেকে আজ পর্যন্ত দুই নারীসহ তিন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়েছে।
শামলাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মৌলভী আজিজ উদ্দিন বলেন, এ পর্যন্ত শামলাপুর ইউনয়ন থেকে ১০ জনের অধিক স্থানীয় যুবক অপহৃত হয়েছিল। সবাই মুক্তিপণ দিয়ে ফিরতে পারলেও হতভাগা মাহমুদুল হক ফিরতে পারেনি।
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। লাশ দাফন করার পর স্থানীয়রা মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী ঘোষনা করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের আরো কঠোর ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান চেয়ারম্যান।
বাংলাধারা/এফএস/এআই













