১৬ ডিসেম্বর ২০২৫

কক্সবাজারে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে কাউন্সিলরের ছেলে খুন

জেলা প্রতিনিধি, কক্সবাজার »

কক্সবাজার শহরে মাদকের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গ্যাংয়ের সদস্যদের হাতে ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন সেজান নামের এক তরুণ।

সোমবার (১৬ আগস্ট) বেলা ১২ টার দিকে কক্সবাজার শহরের বইল্ল্যা পাড়া অগ্মমেধা বৌদ্ধ বিহার কম্পাউডে এই খুনের ঘটনা ঘটে।

নিহত তরুণ সেজান (২০) কক্সবাজার পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নুর মোহাম্মদ মাঝু’র ছেলে। তবে, ফোনে যোগাযোগ করা হলে মাঝু নিহতকে নিজের ছেলে নয় বলে দাবি করেন। কিন্তু স্থানীয়দের মতে, নিহত সেজান কাউন্সিলর মাঝুর দ্বিতীয় পক্ষের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, স্থানীয় সন্ত্রাসি তাহের, রাজু, শাহীন, অভিসহ আরও কয়েকজন মিলে ক্যাং এলাকায় মাদকের বিষয় নিয়ে কথা বলছিল। একপর্যায়ে তাদের ভেতর তর্কাতর্কি লাগে। এর জের ধরে বাকিরা সেজানকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। ধারালো ছুরির আঘাতে তার পেটের বেশ কিছু অংশ ক্ষত হয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। তাকে উদ্ধারে কেউ এগিয়ে না এলেও খোরশেদ আলম নামে এক যুবক সেজানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সুত্র মতে, শুভ নামে এক যুবকের নিয়ন্ত্রণে থাকা এ কিশোর গ্যাংটি অগ্মমেধা বৌদ্ধ বিহার এলাকায় নিয়মিত আড্ডা দিতো। নিয়ন্ত্রণ করতো মাদকসহ নানা অপরাধ।

নিহত সেজানের মা জানান, তিনি তার ছেলে সেজানকে নিয়ে শহরের জাদিরাম পাহাড় এলাকায় বাস করেন। সোমবার সকালে সেজানকে কয়েকজন কিশোর বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়।

এর আগের রাতে খুনীদের সাথে তার ছেলে সেজানের তর্ক হয়েছিল বলেও জানান সেজানের মা। তিনি বেলা ১২টার দিকে তার ছেলে সেজানকে খুন করার খবর পান বলেও উল্লেখ করেন।

সেজানকে উদ্ধারকারি খোরশেদ আলম সাংবাদিকদের জানান, কক্সবাজার শহরের অগ্মমেধা বৌদ্ধ বিহার এলাকায় তারা গেইম খেলার সময় এই খুনের ঘটনা সংঘটিত হয়।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গিয়াস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়েই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ।ঘটনার ক্লু উদঘাটন, খুনীদের চিহ্নিত করে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

অপরদিকে, সেজানকে উদ্ধারকারি খোরশেদ আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।

এদিকে সেজানের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।

সেজানকে নিজের ছেলে নয় দাবি করলেও, কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মরদেহ আনা হয়েছে এমন খবর পেয়ে সেখানে যান সেজানের বাবা কাউন্সিলর নুর মোহাম্মদ ও তার মা। দুজনেই কান্নায় ভেঙ্গ পড়েন। সেখানে অনেক টিভির সাথে কথাও বলেন কাউন্সিলর মাঝু।

তাদের স্বজনদের মতে, নুর মোহাম্মদ মাঝুর দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে সেজান। তাকে তার মামা ও স্বজনরা লালন পালন করত। সেজান কক্সবাজার বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমিতে একসময় পড়ালেখা করতো। মাদকাসক্ত হওয়ার পর পড়ালেখা ছেড়ে দেয়।

বাংলাধারা/এফএস/এআই

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ