মাকসুদ আহম্মদ, বিশেষ প্রতিবেদক»
নেই লকডাউন, নেই করোনা আতঙ্ক। পর্যটকরা ঘুরছে ইচ্ছেমতো। আতঙ্ক নেই পর্যটকদের মাঝে। সিআরবি’র শিরিষতলায় চলছে ধুমছে আড্ডা। মুখে নেই মাস্ক, হাতে নেই স্যানিটাইজার তবে গলায় ঝুলছে মাস্ক। পকেটে আন্দাজ করা যাচ্ছে স্যানিটাইজারের বোতল।
পতেঙ্গা বীচ এলাকায় ঝলমলে বাতির আলোয় জমেছে যুগলের কথোপকথন। আতঙ্কগ্রস্থরাও সমুদ্রের বিশালতা ছেড়ে আসতে চাচ্ছে না প্রকৃতির টানে। চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে গা ঘেঁষে ঘেঁষে পর্যটকরা ঘুরছে। নোনা পানিতে পা ডুবিয়ে আনন্দে মেতেছে যুগলবন্দি হয়ে। করোনা সংক্রমনের ভয় নেই জুটিদের মাঝেও। আতঙ্ক কাজ করছেনা সদ্যজাত শিশুকে নিয়ে আসা মায়েদেরও। শারীরিক দূরত্ব আর সামাজিক দূরত্বেরও বালাই নেই। করোনার সংক্রমণ রোধে সরকারের পক্ষ থেকে বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও পর্যটকরা মানছে না।

অভিযোগ রয়েছে, পর্যটকরা সরকারী বিধিনিষেধের তোয়াক্কা করছে না। সুবিশাল সীমানা প্রাচীর আর লোহার গেইট লাগানো চট্টগ্রামের বিভিন্ন পর্যটন স্পট ছাড়া বাকি সবগুলো ঘুরে বেড়িয়েছে পর্যটকরা। মাস্ক ছাড়াই ঘুরে বেড়াচ্ছে যত্রতত্র।
প্রত্যক্ষভাবে দেখা গেছে, চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই পর্যটকদের আনাগোনা। শুক্রবার বিকেলেও ছিল পর্যটকে ঠাসা। কয়েক দফা লকডাউন দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকদের যাওয়া নিষিদ্ধ করা হলেও ১৯ আগস্ট থেকে আবারো লকডাউন বন্ধ করে দেয়ায়র বিধি নিষেধের বালাই নেই মোটেও। আরো অভিযোগ রয়েছে, লোহার গেট আর সীমানা প্রাচীর বেষ্টিত স্পটগুলোতেও প্রাচীর টপকিয়ে প্রবেশ করতে দেখা গেছে অনেক কিশোরকে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে চিঠি লেখালেখির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল পর্যটকদের নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা।

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত পতেঙ্গা থানা এলাকা হলেও তা খোলা আকাশের নীচে। ফলে একদিকে ফৌজদারহাটের বন্দর টোল রোড, কাট্টলীর জাইল্ল্যা পাড়া, দক্ষিন হালিশহরের প্রবেশদ্বার, পতেঙ্গার নেভাল রোডসহ বিভিন্ন অলিগলি দিয়েও পর্যটকরা ঢুকেছে পতেঙ্গা সৈকতে। পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যটক আগমন রোধে কোন ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়নি চাপের কারনে। থানা পুলিশের টহল টিম এ স্পটে উপস্থিত থাকলেও কোন ধরনের পর্যটক ঠেকাতে পারেনি।
এদিকে, নগরীর পাহাড়তলীস্থ শেখ রাসেল স্মৃতি পার্কেও দেখা গেছে শুক্রবার বিকেলে দর্শনার্থীদের ঢল। এ পার্ক সংলগ্ন শাহজাহান মাঠেও শত শত ছেলেরা শুভেচ্ছা ম্যাচ ডেকে ফুটবল ও ক্রিকেট খেলছে। অপরদিকে নগরীর পাহাড়ঘেরা শিরিষতলা হিসেবে খ্যাত সিআরবি এলাকায়ও লোকে লোকারণ্য। যেন তিল ধারনের ঠাঁই ছিল না।

আরও অভিযোগ, নগরীর অন্যতম ভোজন রসিকদের এলাকা হিসেবে খ্যাত স্টেডিয়াম ও নেভাল আবাসিক এলাকা সংলগ্ন ফাস্ট ফুডের দোকান ও রেস্টুরেন্টগুলো খোলা ছিল। তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না।
নগরীর পাঁচলাইশ থানা এলাকায় স্বাধীনতা স্কয়ারেও পর্যটকদের অভাব ছিল না। সেখানে ফাস্ট ফুডের দোকানগুলোতে ভোজনরসিকদের জম্পেস আড্ডা চলছে। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, নগরীর স্বাধীনতা পার্ক আর ফয়’স লেকে সীমানা প্রাচীর আর গেইট খাকার কারনে কেউ ঢুকতে পারেনি। তবে দূরদুরান্ত থেকে পর্যটকরা এলেও ফিরে যেতে হয়েছে। কিন্তু অভয়মিত্র ঘাট, বায়েজিদ লিঙ্ক রোড, ভাটিয়ারির সানসেট স্পটসহ নগরীর বিভিন্ন স্পটগুলোতে পর্যটকের কমতি ছিল না।

চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেয়ায় আবারো জমজমাট হয়েছে কক্সবাজারসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র। তবে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের যাওয়ার অনুমতি মিলেছে ১৯ আগস্ট থেকে। শারীরিক ও সামাজিক এবং নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের মাধ্যমে কোভিডের সংক্রমণ রোধ করার কথা থাকলেও এ ব্যাপারে নীরব প্রশাসন।
বাংলাধারা/এফএস/এফএস













