বাংলাধারা প্রতিবেদন»
নিজের স্ত্রীকে ঘরে তালাবন্দী করে রেখে নিজের দুই মাস বয়সী শিশু সন্তানকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন নুরজাহান আক্তার কলি নামের এক নারী।
সন্তানকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যাচেষ্টার পাশাপাশি স্ত্রীকে এর আগেও সন্তানসহ ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে গায়ে গরম ভাতের মাড় ফেলে দেয়ার অভিযোগও রয়েছে স্বামীর বিরুদ্ধে।
সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রামের মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালতে এই মামলা দয়ের করেন নুরজাহান আক্তার কলি (২০)। আদালত মামলাটি আমলে নিয়েছেন এবং খুলশী থানাকে দ্রুত সময়ে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নুরজাহান আক্তার কলির সঙ্গে লালখানবাজারের মতিঝর্ণা এলাকার আরাফাতুল ইসলাম মোর্শেদের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই কলিকে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করতে থাকে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। গর্ভে সন্তান আসলে স্বামী একদিন যৌতুকের দাবিতে সন্তান নষ্ট করে ফেলার উদ্যোগ নেয়। স্ত্রী রাজী না হওয়ায় তার উপর নির্যাতন নেমে আসে। ৯৯৯ এ ফোন করে সে যাত্রায় বেঁচে যান ওই নারীসহ তাদের গর্ভের সন্তান। অবশেষে গত ১০ জুলাই গর্ভের সন্তান ইয়াসিন জন্মের পর কলির উপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।
বাড়িভাড়ার টাকাসহ যৌতুক দিতে না পারলে মেরে ফেলার হুমকির মধ্যেই চলতে থাকে কলির যন্ত্রণার জীবন। একদিন কলিকে মারধোর করে শিশু সন্তানসহ ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয় শাশুড়িসহ স্বামী মোর্শেদ। শুধু তাই নয়, গরম ভাতের মার ঢেলে দেয় মাটিতে পড়ে থাকা কলির গায়ে ও পায়ে।
সন্তানের বয়স যখন দুই মাস এমন সময়ে গত ৫ অক্টোবর স্বামী এবং শ্বশুর বাড়ির লোকজন আবারও মারধোর করে কলির উপর। এবার স্ত্রী কলিকে যৌতুকের জন্য শুধু মারধোর নয়, কথা কাটাকাটির জের ধরে ঘরের ভিতর তালাবদ্ধ করে রেখে প্রায় ২ মাস বয়সী শিশুটিকে বালিশ চাপা দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টাও করে স্বামী মোর্শেদ।
স্ত্রীর কলির চিৎকারে আশপাশের লোকজনসহ কলির দূর সম্পর্কের আত্মীয়স্বজন এসে ৯৯৯ এ ফোন করলে পালিয়ে যায় স্বামী মোর্শেদ। আহত কলিকে সেখান থেকে কোনো রকমে রক্ষা করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
বাংলাধারা/এফএস/এফএস