মাকসুদ আহম্মদ, বিশেষ প্রতিবেদক »
মুঠোফোন নিয়ে চিন্তিত স্বল্প আয়ের ব্যবহারকারীরা। ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না আইনের কারণে। হারিয়ে গেলে বা চুরি হলে মোবাইল উদ্ধার করা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে সিন্ডিকেটের কারিশমায়। কারণ মোবাইলের আইএমআই নম্বর পরিবর্তন করছে চোরাই সিন্ডিকেটের শিক্ষিত মাস্টারমাইন্ড। পুলিশ খুঁজছে সিন্ডিকেটের আইসিটি মাস্টারমাইন্ডকে। ডিভাইসের মাধ্যমে নিমিষেই আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করছে মাস্টারমাইন্ড। চোরাই মোবাইল কিনলেই আইনের আওতায় আসবে ক্রেতা-বিক্রেতা।
এদিকে, অবৈধভাবে মোবাইল বিক্রয়কারী সিন্ডিকেটের নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ৭ সদস্যকে রবিবার গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে বেশকিছু তথ্য পেয়েছে মহানগর গোয়েন্দা বিভাগ। এরই সুত্র ধরে এগুচ্ছে গোয়েন্দা বিভাগের বেশ কয়েকটি টিম। অচিরেই সিন্ডিকেটের আরো কয়েক সদস্যকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিএমপি’র গোয়েন্দা বিভাগের উত্তর সার্কেলের সহকারী কমিশনার কামরুল হাসান।
অভিযোগ রয়েছে, চট্টগ্রামে মোবাইল চোরাই ও ছিনতাইকারী সিন্ডিকেট তৎপর রয়েছে দীর্ঘদিন। নগরীর ৫০টি মোড়ে বাস স্টপেজ ও টেম্পু স্টপেজে তৎপর রয়েছে প্রায় ১১টি সিন্ডকেট। ছোট-বড় মিলে সিন্ডিকেটের সদস্যরা বিশেষ করে অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সময়কে কাজে লাগাচ্ছে। এছাড়াও মাছের বাজার ও কাঁচা বাজারে মানুষের আধিক্য থাকায় দুয়েকটি সিন্ডকেট কাজ করছে এমন তথ্য পাওয়া গেছে গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে।

আরো অভিযোগ পাওয়া গেছে, নগরীর বিভিন্ন স্পট থেকে রাস্তায় পথচারী, বাজারে ক্রেতা সাধারন ও গাড়ীর যাত্রীদের কাছ থেকে ছিনতাই বা চুরি হয় মোবাইলগুলো। এসব মোবাইল প্রথমে সিন্ডিকেটের সদস্যদের কাছ থেকে চোরাই মোবাইল ক্রেতাদের কাছে চলে আসে। আকর্ষণীয় এন্ড্রয়েড মোবাইলগুলো বাছাই করে কিছুদিন সরিয়ে রাখা হয়। আর ছোটখাট ঠুনকো ও পুরাতন মোবাইলগুলো সারাসরি চলে যায় চট্টগ্রাম রেল স্টেশন সংলগ্ন ফুটপাতে। সরাসরি বিক্রয় হয় অল্পদামে মোবাইল ক্রেতাদের কাছে। কিন্তু এসব মোবাইল ক্রয় অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ আইনের আওতায় আসবে প্রথমে ব্যবহারকারীরা। এরপর খুঁজে পাওয়া গেলে বিক্রেতা। সর্বশেষ চোর ও ছিনকাইকারী।
সিএমপি’র গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নগরীর ১৬টি থানায় প্রতিনিয়ত মোবাইল চুরি বা ছিনতাইয়ের জিডি হচ্ছে। এসব জিডি অনুযায়ী মোবাইলগুলোর সন্ধানে কাজ করছে পুলিশ। বিশেষ সফট্ওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে মোবাইলের অবস্থান নির্ধারন করা হয়। এছাড়াও বেশকিছু সিস্টেম রয়েছে যা গোপনীয়তার স্বার্থে প্রকাশ করছে না পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। মোবাইল ব্যবহারকারী সনাক্তের মাধ্যমে মোবাইল ক্রয়-বিক্রয়ের স্থান নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে অভিযানের মাধ্যমে মোবাইল উদ্ধার করে অভিযোগকারীর কাছে চোরাই বা ছিনতাইকৃত মোবাইলটি পৌঁছে দিচ্ছে পুলিশ।
এ ব্যাপারে সিএমপি’র গোয়েন্দা বিভাগের উত্তর শাখার সহকারী কমিশনার কামরুল হাসান বাংলাধারা প্রতিবেদককে জানান, গতকাল রবিবার আমরা ২৮টি মোবাইল ও একটি কম্পিউটার উদ্ধার করেছি। এছাড়া চোরাই মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তনের একটি ডিভাইস উদ্ধার করেছি। এ ঘটনায় জড়িত ৭ জনকে আইনের আওতায় এনে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। সিন্ডিকেটের বাকি সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।













