৫ নভেম্বর ২০২৫

দ্রুত নামছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর, ভূমিধ্বসের আশংকা

কক্সবাজার প্রতিনিধি »

জীবন ধারণে সুপেয় পানীর প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। কিন্তু চলমান সময়ে কক্সবাজার শহর ও আশপাশ এলাকায় সুপেয় পানীর স্তর ক্রমে নিচে নামছে। উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় এ হার ভয়াবহ।

অনেক এলাকায় দশ ফুট নিচে মিলছে ভাজে ভাজে পাথর স্তর। মিলছে না চাষাবাদের পানীও। এটি ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত। পানির স্তর ক্রমে নিচে নামলে ভয়াবহ ভূমিধ্বসের আশংকাও রয়েছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ঠিক রাখতে হলে ধরে রাখতে হবে বৃষ্টির পানি।

পাশাপাশি পরিশোধণের মাধ্যমে মাটির উপরের পানি করতে হবে পান যোগ্য। এটি সম্ভব না হলে আগামী প্রজন্মের জন্য পরিচ্ছন্ন ও বাসযোগ্য পৃথিবী তৈরী অসম্ভব। পরিবেশ উন্নয়নে কাজ করা জিও-এনজিওর সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই কেবল এটি সম্ভব।

স্থানীয় সরকার বিভাগ পরিচালিত হাইসাওয়ার (হাইজিন, স্যানিটেশন এন্ড ওয়াটার সাপ্লাই প্রোগ্রাম) কক্সবাজারে চলমান প্রকল্প বিষয়ে ইনফরমেশন শেয়ারিং কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেছেন।

সৈকত পাড়ের তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইসের বলরুমে হাইসাওয়া বোর্ড কমিটির সদস্য চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার নলুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বেগম তছলিমা আবছারের সভাপত্বিতে শনিবার সকাল থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত চলা কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও হাইসাওয়া বোর্ড কমিটির সদস্য মো. জহিরুল ইসলাম।

বক্তব্য রাখেন, সুইজারল্যান্ড এ্যাম্বেসী ঢাকার প্রোগ্রাম ম্যানেজার সাইদুর রহমান মোল্লা, বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলা চেয়ারম্যান ও হাইসাওয়া কমিটির সদস্য স্বপন কুমার দাশ, কক্সবাজার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক শ্রাবস্তী রায়, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এস এম সরোয়ার কামাল।

হাইসাওয়ার প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. এনামুল হক মন্ডলের পরিচালনায় কর্মশালায় আলোচনায় অংশ নিয়ে পরামর্শ মূলক বক্তব্য রাখেন, টেকনাফের বাহারছরা ইউপি চেয়ারম্যান আজিজ উদ্দিন, হোয়াইকং ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারি, উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ইনচার্জ ওবাইদুল্লাহ, পালংখালী ইউপি সচিব আবু সুফিয়ান প্রমূখ।

কর্মশালায় জানানো হয়, সারা বিশ্বে ২১০ কোটি মানুষ সুপেয় পানী পান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। স্যানিটেশনের বাইরে রয়েছে ৪৫০ কোটি মানুষ। আমাদের দেশেও বিভিন্ন এলাকায় সুপেয় পানির স্তর দিন দিন নিচে নামছে। তাই ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের জন্য নিরাপদ পানি, স্বাস্থ্যসম্মত আচরণ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা উন্নয়ন এবং ইউপিতে দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়াতে আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা দিতে সুইজারল্যান্ডসহ নানা দেশের সহযোগিতায় হাইসাওয়া প্রোগ্রাম দেশের ৪০টি জেলায় কাজ করছে।

ইতোমধ্যে ৯০ লাখ জনগণকে স্বাস্থ্যকর আচরণ ও জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করা, জনসমাগম স্থল, বিদ্যালয় ও পরিবারভিত্তিক ৪ হাজার উন্নত ল্যাট্রিন বসানো, ৮০ হাজার নিরাপদ পানির উৎস স্থাপন, ১১ শত ইউনিয়ন পরিষদকে আর্থিক সহায়তা ও ২০ হাজার ইউপি প্রতিনিধি ও কর্মীকে কর্মদক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক সহায়তা দেয়া হয়েছে। লক্ষ্য অর্জনে ৭২ কোটি টাকার প্রকল্প চলমান রয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়।

কর্মশালায় সারাদেশের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, সচিব, এনজিও এবং জিও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ অংশ নেন।

বাংলাধারা/এফএস/এমআর

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ