spot_imgspot_img
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার নিবন্ধিত। রেজি নং-৯২
মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর ২০২৩
প্রচ্ছদঅন্যান্যশিল্পে নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে

শিল্পে নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে

spot_img

সম্পাদকীয় »

সীতাকুণ্ড উপজেলার কাশেম জুট মিল সংলগ্ন বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণজনিত অগ্নিকাণ্ডে এ পর্যন্ত ৪৯ জন নিহত ও দুই শতাধিক আহত হয়েছেন। আহতদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। নিহতদের মধ্যে ৭ জন ফায়ারম্যানও আছে, বেশ কিছু নিখোঁজ আছেন বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ।

শনিবার রাত ৯টার পরে কনটেইনারের বিস্ফোরণ থেকে অগ্নিকাণ্ড ছড়িয়ে পড়ে। অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত কোত্থেকে এখনো বলা যাচ্ছেনা। বিস্ফোরণে আশেপাশের ৪/৫ কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে, ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি গাড়ি অগ্নি নির্বাপণে নিয়োজিত রয়েছে। কনটেইনারে দাহ্য পদার্থ এবং রাসায়নিক থাকায় এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে বলে অনেকে অনুমান করছেন। আগুনের লেলিহান শিখা এত ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে যে অগ্নি নির্বাপক কর্মী ও পুলিশ অকুস্থলে যেতে বেগ পেতে হয়েছে।

আহতদের উদ্ধারে ফায়ারম্যান, পুলিশ ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকেরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানবিক দায়িত্ব পালন করেছে, তারা ও স্থানীয় লোকজন বিভিন্ন সংস্থার অ্যাম্বুলেন্সে করে মৃত ও আহতদের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। চমেক হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গুরুতর আহত কয়েকজনকে ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউট এ পাঠানো হয়। সেনাবাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত কনটেইনার ডিপোতে দায়িত্ব পালন শুরু করেছে। সন্ধ্যায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে তবে এখনো পুরোপুরি আগুন নেভেনি।

এ ধরনের ভয়াবহ বিস্ফোরণজনিত অগ্নিকাণ্ড অতীতে ঘটেনি, ডিপোতে কয়েক হাজার কনটেইনার ছিলো বলা হচ্ছে তবে কনটেইনার কর্তৃপক্ষ ওগুলোতে কি ধরনের পদার্থ আছে তা দ্রুত জানালে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষে কেবল পানি না ছিটিয়ে অন্য ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হতো। ডিপোতে নিরাপত্তার ব্যাপারে ব্যাপক ঘাটতি ছিল বলে অভিজ্ঞরা বলছেন। দুর্ঘটনা তদন্তে ৬টি কমিটি করা হয়েছে।

চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারকরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, কনটেইনারে অগ্নিকাণ্ডের ফলে বিপুল রপ্তানি পণ্য পুড়ে গেছে। অনেক কনটেইনারে তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন রপ্তানি পণ্য রয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের পর বুঝা যাবে ক্ষতির পরিমাণ।

এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ড আমাদের শিল্প কারখানার নিরাপত্তার প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ার বিষয়টি সামনে এনেছে। কর্মক্ষেত্রে জানমালের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে ব্যবস্থাপনার উন্নতি ঘটাতে হবে। চট্টগ্রাম মহানগরে জনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে রাসায়নিক কারখানা নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তর করার ব্যবস্থা নিতে হবে। ঢাকার নিমতলা ট্র্যাজেডি থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত সংশ্লিষ্ট সকলের। স্থানীয় জনগণের নিরাপত্তার ব্যাপারটি গুরুত্বসহকারে নিয়ে ঝুঁকি অবসানের বিষয়টিতে দ্রুত মনোযোগ দিতে হবে।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ভয়াবহ বিস্ফোরণজনিত অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকগণ বিশেষ দৃষ্টি দেবেন বলে আমরা আশা করি।

আরও পড়ুন

spot_img

সর্বশেষ