বাংলাধারা প্রতিবেদন »
চট্টগ্রাম সুমদ্রবন্দরে জেটি ও বর্হিনোঙ্গরের জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানামা বন্ধ রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে ৬ নম্বর বিপদসংকেত জারির পর বন্দরের সব ধরনের অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। কর্ণফুলী থেকে কোনো লাইটারেজ জাহাজও বঙ্গোপসাগরে বর্হিনোঙ্গরে যাচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার (২ মে) সকাল ১০টা থেকে জেটি জাহাজশূন্য করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। জেটিতে ক্রেনসহ কনটেইনার ও পণ্য ওঠানামায় ব্যবহৃত সরঞ্জাম শক্তভাবে বেঁধে রাখার নির্দেশনা দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। ঝুঁকি এড়াতে বন্দরের জেটি থেকে সব জাহাজকে বর্হিনোঙ্গরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (২ মে) সকালে চট্টগ্রাম বন্দর ও বর্হিনোঙ্গর মিলিয়ে মোট জাহাজ ছিল ১৬৮টি। এর মধ্যে পণ্যবোঝাই জাহাজ ছিল ৮০টি। আবার এর মধ্যে ১৬টি জাহাজ জেটিতে পণ্য খালাসের জন্য নোঙ্গর করা ছিল। বাকি ৬৪টি জাহাজ ছিল বর্হিনোঙ্গরে। ৬ নম্বর বিপদসংকেত জারির পর জেটি থেকে ১৬টি জাহাজকে সরানো হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক জানিয়েছেন, আবহাওয়া বিভাগের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ৬ নম্বর বিপদসংকেত জারির পর বন্দরের নিজস্ব অ্যালার্ট-থ্রি জারি করা হয়েছে। জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানামা তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জাহাজগুলোকে জেটি ছাড়তে বলা হয়েছে। আর জেটিতে বন্দরের যেসব ইক্যুইপমেন্ট আছে সেগুলোকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হচ্ছে।
সচিব বলেন, যেসকল ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান বন্দরে ঢুকে গেছে, তাদের কাজ আমরা বন্ধ করিনি। তাদের সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে বলেছি। যদি ঘূর্ণিঝড় আরও তীব্র হয়, তখন তাদের কাজও বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে নতুন করে কোনো ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান বন্দরে এই মুহূর্তে না ঢোকানোর সিদ্ধান্ত আছে। বন্দরের জেটিতে ও সংলগ্ন ইয়ার্ডে কনটেইনার থেকে পণ্য খালাস ও বোঝাইয়ে নিয়োজিত ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান, কনটেইনার মুভারগুলোকে সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে বলা হয়েছে।
নগরীর পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাগর এই মুহূর্তে খুবই উত্তাল আছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজারসহ উপকূলবর্তী ১৪টি জেলার চরসংলগ্ন সাগরে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সময় ৪ থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি হতে পারে। এতে জেলাগুলো প্লাবিত হতে পারে। সাগর উত্তাল থাকায় লাইটারেজ জাহাজ, মাছ ধরার ট্রলার-ছোট জাহাজ, সাধারণ নৌকাসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
কর্ণফুলী নদীতেও চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। লাইটারেজ জাহাজ চলাচল নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন সেলের যুগ্ম পরিচালক হাজী শফিক আহমেদ জানিয়েছেন, গত (বুধবার) রাত থেকেই বন্দরের বর্হিনোঙ্গরে কোনো লাইটারেজ জাহাজ যাচ্ছে না।
বর্হিনোঙ্গরে মাদার ভ্যাসেল (বড় জাহাজ) থেকে লাইটারেজ জাহাজে পণ্য ওঠানামা বন্ধ আছে। কর্ণফুলী নদীতে মাছ ধরার নৌযানগুলোকে তীরে এনে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। প্রায় ২০০ মাছ ধরার নৌযান এখন কর্ণফুলী নদীতে অবস্থান করছে। এছাড়া কর্ণফুলী নদীতে এবং বিভিন্ন ঘাটে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত একশ’রও বেশি লাইটারেজ জাহাজ অবস্থান করছে বলে শফিক আহমেদ জানিয়েছেন।
বাংলাধারা/এফএস/এমআর/এসবি