spot_imgspot_img
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার নিবন্ধিত। রেজি নং-৯২
সোমবার, ২৯ মে ২০২৩
প্রচ্ছদবৃহত্তর চট্টগ্রামঘূর্ণিঝড় 'ফণি' মোকাবেলায় প্রস্তুত কক্সবাজার

ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ মোকাবেলায় প্রস্তুত কক্সবাজার

spot_img

কক্সবাজার প্রতিনিধি »

অস্বাভাবিক আকার ধারণ করে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। ৩ মে (শুক্রবার) বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে এমন ধারণায় ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় ইতোমধ্যে সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৫৩৮টি সাইক্লোন শেল্টার। মজুদ রাখা হয়েছে ৪ হাজার মে.টন জিআর চাউল, সাড়ে ৪ হাজার প্যাকেটজাত শুকনো খাবার। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৮৯টি মেডিকেল টীম।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের শহীদ এটিএম জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘূর্ণিঝড় ফণি মোকাবেলায় আয়োজিত প্রস্তুতি সভায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

সভায় জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মো. আশরাফুল আফসার জানান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং উপজেলা সমুহে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের পাশাপাশি উপজেলা ও উপকূলীয় অঞ্চল গুলোতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের দেয়া হয়েছে নির্দেশনা।

তিনি আরো জানান, প্রায় ১২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে ওয়ার্ড ভিত্তিক কমিটি । দুর্যোগ ব্যবস্থা কমিটি গুলোকে সতর্ক রাখা হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ঘর করে দিতে ১১৪ বান্ডিল ডেউটিন, ২ লক্ষাধিক টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

জেলা সদরসহ উপজেলা ও উপকূলের প্রায় ৫৩৮ টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রয়েছে। এতে সাড়ে ৪ লাখ মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। জেলা শহরে স্কুল সমূহও শেল্টার হিসেবে ব্যবহারে প্রস্তুতরাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে উপকূলে মাইকিংসহ সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হবে। দূর্যোগ কবলীত মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে আনতে ১০০ যানবাহন রিকুইজিশন করছে জেলা প্রশাসন।

এছাড়াও জেলার উখিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও সদরে ৬টি ফায়ার ইউনিট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এতে ৩৬ দমকলকর্মী কাজ করবেন। তাদের সাথে আরো সংযুক্ত করা রয়েছে আরো ২০০ কর্মী।

ডিসি জানান, উপকূলের পাশাপাশি উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ক্ষয়ক্ষতি রোধে নেয়া হয়েছে একইভাবে প্রস্তুতি। তাদের ঘর ক্ষতি হলে তা দ্রুত মেরামতের প্রস্তুতি নিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে কক্সবাজার ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনারের সাথে আলাদাভাবে জরুরী সভা করা হয়েছে।

দূর্যোগ সংক্রান্ত সকল যোগাযোগের জন্য জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম চালু রাখা হয়েছে। ০৩৪১-৬৪৭৫০ ও ০১৮৮১৬৯৪৮১১ নাম্বারে দূর্যোগ সংক্রান্ত যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেছেন জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা ড. রইস উদ্দিন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতি সভায় জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাসুদুর রহমান মোল্লা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবিদুল ইসলাম, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সভাপতি নুরুল আবছার, সাধারণ সম্পাদক আবু হেনা মোস্তফা কামাল, রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের মেজর তানজিলসহ সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ফণির প্রভাবে সমুদ্রে সংকেত বাড়লেও পুরো কক্সবাজার জেলায় বৈশাখের দাবদাহ চলমান রয়েছে। তবে, সমুদ্রে জোয়ারের পানি সাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট বাড়ছে বলে জানিয়েছেন উপকূলীয় লোকজন।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকালে ঘূর্ণিঝড় ফণি কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ১ হাজার ২৫ কিমি ও চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ১ হাজার ৬৫ কিমি, মংলা বন্দর থেকে ৯১৫ কিমি এবং পায়রা বন্দর থেকে ৯২৫ কিমি দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরো ঘণিভূত হয়ে ৩ মে সন্ধ্যা নাগাদ খুলনা ও ততসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম করতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে।

বাংলাধারা/এফএস/এমআর

আরও পড়ুন

spot_img

সর্বশেষ