দেবাশীষ বড়ুয়া রাজু, বোয়ালখালী »
‘রেড লেডি’ জাতের পেঁপে চাষে সাফল্যের স্বপ্ন দেখছেন চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার আমুচিয়া ইউনিয়নের শিক্ষক মো. শাহজাহান। উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে নিজস্ব ৮০ শতক পতিত জমিতে ৬শ উচ্চফলনশীল রেডলেডি জাতের পেঁপের চারা রোপণ করেন তিনি।
উপজেলার আমুচিয়া ইউনিয়নে শাহজাহানের বাগান ঘুরে দেখা যায়, সবুজে মোড়ানো ‘রেডলেডি’ জাতের পেঁপে বাগান। সারি সারি পেঁপে গাছে ঝুলছে বিভিন্ন আকারের পেঁপে। সেখানেই কথা হয় বাগানের স্বপ্নদ্রষ্টা শিক্ষক শাহজাহানের সাথে।
শাহজাহান বলেন, ‘উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে ৪শ পেঁপে চারা দিয়েই বাগান শুরু করেছি। পরে নার্সারি থেকে ২০ টাকা করে ২শ চারা নিজের টাকায় কিনে রোপন করেছি। এতে চারা, সার, কীটনাশক ও মজুরিসহ খরচ হয় ৮০/ ৯০ হাজার টাকা। বর্তমানে ১ হাজার ৫শ কেজির মতোই বিক্রি করেছি পাইকারি ৬০ টাকা দামে।’ আরও ৪ হাজার কেজি পেঁপে বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।
সব মিলিয়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকা ‘রেডলেডি’ জাতের পেঁপে বেশ সুমিষ্ট হওয়ায় বাজারে এর চাহিদাও ব্যাপক এমনটা জানিয়ে মো. শাহজাহান বলেন, বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শিক্ষিত যুবকরা রেডলেডি পেঁপে বাগান করতে আগ্রহী হয়েছে। ফলনও হচ্ছে ভাল। তবে উৎপাদিত ফসলগুলো শহরের বিভিন্ন বাজারে পৌঁছে দিতে পারলে কৃষকরা লাভবান হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আতিক উল্লাহ বলেন, শাহজাহান পেশায় একজন শিক্ষক হয়েও পেঁপে বাগান করার জন্য উদ্যোগ নেয়ায় স্মলহোল্ডার এগ্রিকালচারিস্ট কনটিটিভনেস্ট প্রজেক্ট (এসএসিপি) প্রকল্পের আওতায় তাকে প্রদর্শনী দেয়া হয়। এতে কাঙ্ক্ষিত সাফল্যও পেয়েছেন তিনি।
পরিকল্পিত বাগান সৃষ্টিসহ সঠিক পরিচর্যা করা গেলে এ জাতের পেঁপে কৃষকের ভাগ্য বদলে দিতে পারে। মাটির ঊর্বরতা ও অনুকূল আবহাওয়া রেডলেডি জাতের পেঁপে চাষের জন্য সহায়ক বলেও জানান এ কর্মকর্তা। শুধুমাত্র ছত্রাকের আক্রমণ ছাড়া অন্য কোন রোগবালাই হয় না। ‘রেডলেডি’ জাতের পেঁপে গাছ দুই বছরের অধিক একাধারে ফলন দেয়।
উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা গৌতম চৌধুরী বলেন, তাইওয়ানের উচ্চ ফলনশীল বামন প্রজাতির এ পেঁপে চারা রোপণের ৫-৬ মাসের মধ্যে ফুল আসে এবং ৭-৯ মাসের মধ্যে প্রথম ফল পাওয়া যায়। লাল-সবুজ রঙের প্রতিটি পেঁপের ওজন হয় দেড় থেকে দুই কেজি। খেতে সুমিষ্ট এ পেঁপে সুগন্ধিযুক্ত। কাঁচা ও পাকা উভয় প্রক্রিয়াতেই বাজারজাত করা যায়। পাকা পেঁপে খুব সহজে নষ্ট হয়না বলে বাজারজাত করা সহজ। তবে রোগ বালাই থেকে বাগানের যাতে ক্ষতি না হয় সে ব্যাপারে আমরা সার্বক্ষণিক কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।