বাংলাধারা প্রতিবেদন »
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে ডিম সংগ্রহের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুণছেন সংগ্রহকারীরা। গত শনিবার রাতে এবং রবিবার ভোরে হাতেগুণা কয়েকটি মা মাছ অল্প নমুনা ডিম ছাড়ায় সংগ্রহকারীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, হালদা নদীতে সাধারণত এপ্রিল-জুন (চৈত্র-বৈশাখ) মাসে রুই, কাতলা, কালবোস, মৃগেল ও কার্প জাতীয় মা মাছ ডিম ছাড়ে। কার্যত পূর্ণিমা-আমাবস্যার এই সময়ে আকাশের প্রবল গর্জন, পাহাড়ি ঢল, ভারী বর্ষণেই হালদা নদীর মা-মাছ ডিম ছাড়ে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আজহারুল আলম জানান, এখন যে কোনো সময় হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়তে পারে। প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে প্রতি বছরের চৈত্র মাস থেকে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত সময়ে মা মাছ ডিম ছাড়ে। হালদা নদীর তীরবর্তী হাটহাজারী, রাউজান এলাকার মৎস্যজীবী, জেলে, ডিম সংগ্রহকারীরা হালদা নদী থেকে মা মাছের ডিম সংগ্রহ করে। নদী থেকে সংগ্রহ করা ডিম নদীর তীরে মাটির কুয়ায় রেখে ও সরকার কর্তৃক নির্মিত হ্যাচারিতে ডিম থেকে রেণু উত্পাদন করা হয়। হালদা নদীর মা মাছের ডিম থেকে উত্পাদিত রেণু দেশের বিভিন্ন এলাকায় মত্স্যজীবী, মত্স্য খামারিরা ক্রয় করে নিয়ে যায়। তিনি জানান, হালদা নদীতে সবচেয়ে রুই, মৃগেল, কালিবাউশ মাছ ডিম ছাড়ে বেশি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হালদা রিভার রিচার্স ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরীয়া বলেন, হালদা নদীতে ডিম ছাড়ার সবগুলো উপসর্গ বর্তমানে আছে। গতকাল কয়েকটি মা মাছ ডিম ছেড়েছে, তবে তা অপ্রতুল। মেঘের গর্জন, আকাশ মেঘাচ্ছন্ন, ভারী বর্ষণসহ প্রাকৃতিক এসব উপসর্গ থাকলে ডিম ছাড়বে।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, ডিম সংগ্রকারীরা কয়েকটি এলাকায় সামান্য ডিম পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। আশা করি প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকূল থাকলে নমুনা ডিম ছাড়বে। মা মাছ ডিম ছাড়লে ডিম থেকে রেণু তৈরির প্রক্রিয়ার সব প্রস্তুতিও আছে। তাছাড়া কেউ যাতে মা-মাছ ধরতে না পারে সেদিকেও কঠোর নজরদারি রাখা হয়েছে।
হালদা নদীর নাজির হাট থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত ৪৮ কিলোমিটার পর্যন্ত নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার মৌসুমে যান্ত্রিক নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ আছে বলে জানান তিনি।
বাংলাধারা/এফএস/এমআর/টিএম