spot_imgspot_img
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার নিবন্ধিত। রেজি নং-৯২
মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর ২০২৩
প্রচ্ছদচট্টগ্রামবসন্ত বাতাসে দুলছে আমের সোনালী মুকুল

বসন্ত বাতাসে দুলছে আমের সোনালী মুকুল

spot_img

শিহাব উদ্দিন শিবলু, মিরসরাই »

বছর ঘুরে গাছে আমের মুকুল ঋতু বৈচিত্র জানান দিচ্ছে ঋতুরাজ বসন্তের আগমন। অধিকাংশ গাছেই আমের মুকুল, কিছু গাছে আগাম গুটিও দেখা দিয়েছে। গাছের শাখা-প্রশাখায় শোভা পাচ্ছে আমের সোনালী মুকুল। বসন্তের দক্ষিণা হাওয়ায় দোল খাচ্ছে ডালে। যেন প্রকৃতি সেজেছে আমের মুকুলের নোলকে।মুকুলের মিষ্টি ঘ্রানে গাছে মৌমাছির ভিড়।

বাণিজ্যিকভিত্তিক মিরসরাইয়ে চাষিদেরও মাঝেও আম উৎপাদনের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে । সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বাগানগুলোতে মুকুলের ভারে নুইয়ে পড়ছে গাছের শাখা প্রশাখা। পাতাগুলো ঢেকে শোভা পাচ্ছে সোনালী মুকুলের দৃশ্য। অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেকটা আগাম মুকুল দেখা গেছে এবার। গাছে মুকুল আসার প্রায় দুই সপ্তাহ আগে থেকেই পরিচর্যা করতে শুরু করছেন আম চাষিয়া। রোগ-বালাইয়ের হাত থেকে মুকুল রক্ষায় চাষিরা কৃষি কর্মকর্তাদের কাছে পরামর্শ নিচ্ছেন। বাম্পার ফলনের আশায় স্প্রে পদ্ধতিতে প্রয়োগ করছেন বিভিন্ন বালাইনাশক।

জানা গেছে, বিগত ৮-১০ বছর আগে থেকে বানিজ্যিকভাবে উপজেলায় আম চাষের শুরু হয়। রাসায়ানিক, ভেজালমুক্ত হওয়ায় এখানকার আমের চাহিদাও অনেক। অনেক বাগান মালিক অনলাইনে অর্ডারের মাধ্যমে আম বিক্রি করছে। দেশী জাতের আম ছাড়াও এখানে বিদেশী জাতের আম চাষ করা হচ্ছে। বিদেশী জাতের আমগুলো হলো সবছেয়ে দামি জাপানের সূর্যডিম/মিয়াজাকী, ক্যাপ্টেন, কিউজাই, ব্যানানা ম্যাংগো, ইন্দোনেশিয়ান ব্রুনাই কিং , কিং অফ চাকাপাত, আলফেনসো, ডক মাই, হানিডিউ,আপেল ম্যাংগো, আলফানচুন, থাই ব্যানানা। পাশাপাশি দেশী জাতের আমেরও চাষ হচ্ছে যেমন আমরুপালি, বারি ৪, বারি ১১, গৌড়মতি, হিমসাগর, ল্যাংড়া, হাড়িভাংগা, কাটিমন, রামগই, খিরশিহপাত ও ফজলী আম।

সাহেরখালীর মান্নান এগ্রো’র মো. আব্দুল মান্নান বলেন, স্নাতক পাশ করার পর চাকরীর জন্য না ঘুরে বিগত কয়েক বছর পূর্বে বিভিন্ন ফলজ বাগান করেছি। তবে সবচেয়ে বেশি আমের চারা লাগিয়েছি। এবছর গাছে মুকুল এসেছে। আশা করছি আবহাওয়া ভালো থাকলে গত বছরের তুলনায় বেশি ফলন হবে।

মিরসরাই উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন দুই পৌরসভার প্রতিটি বাড়িতেই কমবেশি আমগাছ রয়েছে। অনেকের বাড়ির ছাদেও উন্নত জাতের আম গাছের চারা লাগিয়ে পরিচর্যা করে প্রতি মৌসুমেই আম পাচ্ছেন। আবার অনেকে বারো মাসি আমগাছও লাগিয়েছেন।

আমা চাষী সাহাব উদ্দিন কোম্পানি বলেন, আমরুপালি, বারি ৪, হাড়িভাঙা জাতের আম চাষ করা হয়েছে। অন্য বছরের তুলনায় এবার গাছে অনেকটা আগাম মুকুল এসেছে। তাই আগে থেকে গাছের পরিচর্যা করতে শুরু করছেন তিনি। তবে কয়েক দিন ঘন কুয়াশার কারণে মুকুলেল কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। বালাই নাশক স্প্রে করে ভাল ফলাফল আশা করছেন।

উপজেলার সুফিয়া রোড় এলাকায় অবস্থিত বনরূপা নার্সারির মালিক ইকবাল ফারুক জানান, চলতি মৌসুমে তিনি প্রায় ৫ হাজার আমের চারা বিক্রি করেছেন। অন্যান্য ফলজ গাছের তুলনায় বিভিন্ন জাতের আমের চারার চাহিদা বেশি।

দিনদিন মিরসরাইয়ে বাণিজ্যিকভিত্তিক চাষিদের মাঝে আম উৎপাদনের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। খরচের তুলনায় অধিক লাভ এবং পরিবার পরিজন নিয়ে খাওয়ার পাশাপাশি আম বাগানের রয়েছে নিজস্ব একটা সৌন্দর্য্য।

মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাফ চন্দ্র রায় জানান, উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার ৫০ হেক্টর জমিতে ছোট বড় ৮০টি আম বাগান রয়েছে। বিভিন্ন বাগানের মালিককে আমাদের অফিস থেকে পরামর্শ দিয়ে থাকি। পাশাপাশি মানুষকে আমের বাগান করতে উদ্বুর্ধ করছি। এবছর আগাম মুকুল এসেছে। চাষীরা ঠিকমতো পরিচর্চা করলে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেলে ভালো ফলন হবে আশা করছি।

আরও পড়ুন

spot_img

সর্বশেষ