বাংলাধারা ডেস্ক »
একুশে পত্রিকা ও আজকের সকাল সন্ধ্যা সম্পাদক আজাদ তালুকদার রচিত ‘নিগৃহীত সুন্দর’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। বিশ্বের সকল নির্যাতিত, নিপীড়িত নারীর প্রতি উৎসর্গ করা ‘নিগৃহীত সুন্দর’ বইটি প্রকাশ করেছে বর্ণনা প্রকাশনী। ৬৩ পৃষ্ঠার বইটিতে সত্য ঘটনে অবলম্বনে লেখা একটি ছোট গল্প স্থান পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যায় নগরীর জামালখান একুশে পত্রিকা কার্যালয়ে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। পরবর্তীতে সম্পাদক আজাদ তালুকদারের সঞ্চালনায় মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চবি কলাবিদ্যা বিভাগের সাবেক ডিন অধ্যাপক সেকান্দর চৌধুরী বলেন, ‘আজাদ তালুকদারকে আমি চ্যালেঞ্জিং সাংবাদিকতায়, সম্পাদনা-প্রকাশায় দেখেছি। সৃজনশীল কাজের প্রতি তিনি মারাত্মকভাবে আসক্ত। আর নিগৃহীত সুন্দর গ্রন্থের বিষয়বস্তু অত্যন্ত সুন্দর ও তাৎপর্যপূর্ণ। বাস্তব ও নির্মম ঘটনা ছোট গল্প আকারে এই বইয়ে স্থান পেয়েছে। এধরনের ঘটনা আমাদের আশেপাশে অহরহ ঘটছে। কিন্তু কতজনই বা অন্তর চক্ষু দিয়ে বিষয়টা ফিল করতে পারে। আজাদ তালুকদারের দ্বারাই এমনটাই সম্ভব। আমি তাঁর সুস্থতা-সফলতা কামনা করছি।’
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে সাংবাদিক ও নাট্যজম প্রদীপ দেওয়ানজী বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আজাদ তালুকদারের কাছে আমি অনেকভাবেই ঋণী। সেটা কিন্তু অর্থের ঋণ নয়, অন্য ঋণ, যা অপরিশুদ্ধ। যে রোগে আজাদ তালুকদার আক্রান্ত, যার সাথে তিনি লড়াই করছেন আমি বলতে পারি নিশ্চিতভাবেই তিনি জয়ী হয়ে আসবেন। নিগৃহীত সুন্দর বইয়ের লেখাটা গল্প না, এটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা। বইটি পড়ার পর আমি যা বুঝলাম, একটা মানুষের শরীর বা সম্ভ্রম কোনো পরম সম্পদ না। মন-মানসিকতাই মানুষের পরম সম্পদ। আমরা চাই আজাদ তালুকদার এভাবেই সত্য বলার সৎ সাহসকে অন্তরে ধারণ করে কাজ করে যাক।’
‘নিগৃহীত সুন্দর’ গ্রন্থের লেখক আজাদ তালুকদার বলেন, ‘পারিবারিক আয়োজনে একজন নারীকে ধর্ষণ হওয়ার মত ঘটনা আজকের সভ্যযুগেও গ্রামগঞ্জ ছাপিয়ে এমনকি শহর-বন্দরেও ঘটছে। এটাই সত্য, নির্মম, নিষ্ঠুর বাস্তবতা। আর এসব পৈশাচিক ঘটনা ঘটাচ্ছে একশ্রেণির ভণ্ড কবিরাজ। তাদের প্রলোভনে পা দিচ্ছে সহজ সরল মানুষ। তাদের মন ভোলানো কথায় কুমারি মেয়েকে তুলে দেওয়া হচ্ছে তাদের হাতে। আর এই কাজটি করছে খোদ জন্মদাতা বাবা-মা। অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত, সহজ সরল নারীরাই ভণ্ড কবিরাজের ফাঁদে পা দিচ্ছে তা শুধু নয়, শিক্ষিত, স্মার্ট তরুণীরা পরিবেশ-পরিস্থিতির কাছে বন্দি হয়ে তাদের সতীত্ব তুলে দিচ্ছে কবিরাজের হাতে।’
‘বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে রচিত এই গল্পটি আজকের সমাজেরই এক অন্তর্নিহিত চিত্র, ভেতরগত ক্যানভাস। বাস্তব ঘটনার এমনই এক চিত্র গল্পচ্ছলে তুলে আনার চেষ্টা করেছি ‘নিগৃহীত সুন্দর’ শীর্ষক গল্পগ্রন্থে। আমি পুরোদস্তুর একজন সংবাদকর্মী। মূলত সংবাদই আমার আগ্রহের মূল বিষয়। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত এক জায়গায় করে ‘সংবাদের মালা’ গাঁথাই মূলত আমার কাজ। তবে লেখালেখিও আমার তুমুল আগ্রহের জায়গা। জীবন চলার পথে এমন এক লোমখাড়া করা বাস্তব ঘটনা যখন আমার সামনে, তখন ভাবলাম এটা একটা অনবদ্য গল্পপ্লট হতে পারে। কিন্তু আমি তো গল্প লিখতে জানি না। ঘটনার পরম্পরা বর্ণনা করেছি মাত্র৷’
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ‘৮০’র দশকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আলী আকবর চৌধুরী, সবুজ শিক্ষাতায়নের প্রধান শিক্ষক নুরজাহান আকতার দীপ্তি, শিল্পোদ্যোক্তা তারিকুল ইসলাম জুয়েল, করপোরেট ব্যক্তিত্ব তানভীর শাহরিয়ার রিমন, সিনিয়র উপস্থাপক সাহাবুদ্দিম মজুমদার, লেখক-সাংবাদিক শওকত বাঙালি, আবৃত্তিশিল্পী মিলি চৌধুরী শেখ মুহাম্মদ জুলফিকার বিপুল, আলোর প্রতিষ্ঠাতা মিরাজুল হক, এআইজি হাসপাতালের বাংলাদেশ ব্র্যান্ডিং হেফ মৃণাল কান্তি দত্ত।
উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম আইটি ফেয়ারের কর্ণধার জাহাঙ্গীর আলম,বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সিনিয়র চিফ পেটি অফিসার অনিমেষ বড়ুয়া, শিশু সংগঠক মো. সাজ্জাত হোসেন, গণমাধ্যমকর্মী মিজানুর রহমান ইউসুফ, তালাল আজাদ অর্ঘ্য প্রমুখ।
এসময় একুশে পত্রিকার সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- আবছার রাফি, জোবায়েদ ইবনে শাহাদাত, এম কে মনির, জিন্নাত আইয়ুব, মোয়াজ্জেম হোসেন, সেকান্দার আলম বাবর প্রমুখ।