spot_imgspot_imgspot_img
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার নিবন্ধিত। রেজি নং-৯২
বুধবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৩
প্রচ্ছদচট্টগ্রামকক্সবাজারঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবকালে জন্ম, নাম রাখা হলো ‘মোখা’

ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবকালে জন্ম, নাম রাখা হলো ‘মোখা’

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজারের পেকুয়ায় ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব থেকে রক্ষায় সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নেয়া পাঁচ প্রসূতি হাসপাতালে জন্ম দিয়েছে পাঁচ সন্তানের। এদের মাঝে হাসপাতালে আসতে সবচেয়ে ভোগান্তি পোহানো প্রসূতি তার সন্তানের নাম রেখেছে ‘মোখা’। রোববার (১৪ মে) ভোরে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসব নবজাতকের জন্ম হয়।

সন্তানের নাম মোখা রাখা প্রসূতি জয়নব বেগম (১৯) পেকুয়া উপজেলার দূর্গম রাজাখালী ইউনিয়নের বামুলা পাড়ার মো. আরকানের (২২) স্ত্রী।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’র প্রভাবে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেয়ার পর উপকূলীয় রাজাখালীতে তাণ্ডবের ভয়ে অন্যদের সাথে অন্তঃসত্ত্বা জয়নবকেও শনিবার রাতে রাজাখালী ইউনিয়নের এয়ার আলী খান আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়। আশ্রয়কেন্দ্রে আসার কয়েক ঘণ্টা পর রাত ১টার দিকে জয়নবের প্রসববেদনা শুরু হয়। বেদনায় কাতরাতে শুরু করলে হাসপাতালের নিচে গাড়ি খোঁজাখুঁজি শুরু করেন স্বামী আরকান। কিন্তু মধ্যরাতে তিনি কোনো গাড়ি পাচ্ছিলেন না।

ঠিক ওই সময় আশ্রয়ণ কেন্দ্র পরিদর্শনে যান পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর হায়দার। দুর্গত দম্পতির অসহায়ত্ব দেখে তাদের নিজের সরকারী গাড়িতে তুলে নেন তিনি। দিয়ে আসেন ১২ কিলোমিটার দূরের সরকারী হাসপাতালে। সেখানেই রোববার ভোরে জয়নব এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। পরে সকাল ১০টার দিকে জয়নব তার সন্তানকে নিয়ে আবার আশ্রয়কেন্দ্রে ফিরে যান। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব থেমে গেলে সন্ধ্যায় তারা বাড়ি ফিরেন।

এদিকে, প্রসূতি জয়নাবের ছেলে সন্তান ভূমিষ্টের খবর পেয়ে নবজাতক ও দম্পতিকে দেখতে যান ওসি। এসময় রাজাখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল সবাইকে মিষ্টি মুখ করান।

প্রথম সন্তান জন্ম দিয়ে উচ্ছ্বসিত জয়নব বেগম বলেন, ওসি স্যারকে ধন্যবাদ জানাই। স্যার না থাকলে আমার কী অবস্থা হতো, জানি না।

জয়নবের স্বামী মো. আরকান বলেন, স্ত্রী জয়নবের প্রসব যন্ত্রনা হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে কোন গাড়ী পাচ্ছিলাম না। তখন পেকুয়া থানার ওসি নিজের গাড়ীতে করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করে ঝুঁকি মুক্ত করেন। আমাদের কুল জুড়ে একটা ফুটফুটে ছেলে সন্তান আসে। আমি খুশি হয়েছি এবং দুর্যোগকালীন সময়ে বিপদে এগিয়ে আসায় ওসি ও পুলিশের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবকালীন সময়ে পৃথিবীতে আসায় আমার ছেলের ডাক নাম রেখেছি ‘মোখা’।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান জানান, ওই নারী স্বাভাবিকভাবে সন্তান জন্ম দিয়েছেন। মা ও ছেলে দু’জনই ভালো আছে।

এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর হায়দার বলেন, মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে প্রসব বেদনায় কাতরানো ওই নারীকে আমি দুর্গত এলাকা থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে এনেছি। ওই মুহূর্তে আমার সরকারী গাড়ি ব্যবহার করা ছাড়া উপায় ছিলো না। পুলিশের কাজ তো জনকল্যাণ। আমি সে কর্তব্য পালন করেছি মাত্র। ওই প্রসূতি নারীর ছেলে সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ায় আমি খুশি হয়েছি।

আরও পড়ুন

spot_img

সর্বশেষ