কক্সবাজার প্রতিনিধি : ঢাকায় যেতে গাড়িতে উঠার আগে ইয়াবাসহ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন) কর্মরত এক উপ-পরিদর্শক (এসআই) সস্ত্রীক আটক হয়েছেন। কক্সবাজারের কলাতলীর ডলপিন মোড়ের গ্রিন লাইন কাউন্টার থেকে শুক্রবার (২০ মে) রাত সোয়া ১০টার দিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর টেকনাফ সার্কেলের সদস্যরা তাদের আটক করেছে।
আটকরা হলো— সিরাজগঞ্জের সমেশপুরের রেজাউল করিম (৪৭) ও তার স্ত্রী মলিনা পাশা (৪৩)। রেজাউল করিম টেকনাফের হ্নীলার আলীখালী (২৫ নম্বর ক্যাম্প) রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি ডিপার্টমেন্টাল পদোন্নতিতে কনস্টেবল থেকে উপ-পরিদর্শক (এসআই) হয়েছেন।
টেকনাফ মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ পরিদর্শক তুন্তু মণি চাকমা গণমাধ্যমকে জানান, আটক রেজাউলের পরিবার কক্সবাজার বেড়াতে এসেছিল। যাওয়ার সময় ইয়াবাগুলো কৌশলে ঢাকায় পাচারের জন্য মজুদ রাখেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কলাতলী ডলফিন মোড়ের গ্রিন লাইন কাউন্টারে অভিযান চালিয়ে তাদের বহন করা ব্যাগ থেকে ইয়াবাগুলো জব্দ করে তাদের আটক করা হয়।
তাদের ব্যাগ তল্লাশি করে ২০ হাজার ইয়াবা পাওয়া যায়। আটক রেজাউল নিজেকে ১৬ এপিবিএন এর উপ-পরিদর্শক বলে দাবি করছেন। তারা স্বামী-স্ত্রীর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তুন্তু মণি চাকমা।
টেকনাফের হ্নীলার এক সূত্র জানায়, হ্নীলার আলীখালী (২৫ নম্বর ক্যাম্প) রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর এসআই রেজাউল একাধিক সফল অভিযান চালিয়েছেন। সম্প্রতি হ্নীলা ইউনিয়নস্থ রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর আতংক সন্ত্রাসী ছালেহ গ্রুপের সেকেন্ড ইন কমান্ডসহ একাধিক সদস্যকে গ্রেফতার করে। অল্প সময়ে তিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রীক সন্ত্রাসীদের আতংক হিসেবে পরিচিতি পায়। তিনি চাইলে সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে কমিশন ভিত্তিক মাসোহারায় কোটি টাকা আয় করতে পারতেন। তাকে বাগে আনতে ব্যর্থ হয়ে মাদক কারবারিরা ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার। কারণ ইয়াবা সিন্ডিকেট নিজেদের পথ পরিস্কার করতে নানা ফন্দিতে সামনে এগুই, এমন প্রমাণ অহরহ রয়েছে বলে দাবি সূত্রের।
টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (এডিআইজি) হাসান বারী নুর বলেন, আমার অধিনস্ত আলীখালী ক্যাম্পের ইনচার্জ সস্ত্রীক মাদকসহ ধরা পড়েছে বলে খবর পেয়েছি। এটা অনভিপ্রেত। তার বিরুদ্ধে আমরা বিভাগীয় ব্যবস্থা নেব।
অপরদিকে তিনিও স্বীকার করেন, গতমাসে বেশ কয়েকজন দূর্ধর্ষ ডাকাত গ্রেফতারে আলীখালী ক্যাম্প ইনচার্জ রেজাউল করিমের অবদান রয়েছে। তার কাজের পরিধি ভালো। তাই কিভাবে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় তিনি জড়ালেন তাও নিজস্ব গতিতে খতিয়ে দেখার উদ্যোগ চলছে।