spot_imgspot_img
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার নিবন্ধিত। রেজি নং-৯২
শুক্রবার, ২ জুন ২০২৩
প্রচ্ছদকক্সবাজারদ্বিতীয় দফায় মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল টেকনাফে

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যু

দ্বিতীয় দফায় মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল টেকনাফে

spot_img

সায়ীদ আলমগীর, কক্সবাজার : আশ্রিত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ইস্যুতে বাংলাদেশের তালিকা যাচাইয়ে ২য় দফায় মিয়ানমার সরকারের ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল কক্সবাজারের টেকনাফে পৌঁছেছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকাল ১০টার দিকে নাফনদী হয়ে টেকনাফ জেটিতে এসে পৌঁছায় প্রতিনিধি দলটি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের কাছে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের যে তালিকাটি পাঠিয়েছিল তা যাচাই করতে মিয়ানমারের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে এসেছে। প্রতিনিধি দলটি আরআরআরসির সঙ্গে বৈঠক করবে। পাশাপাশি তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলবে।

তিনি জানান, প্রতিনিধিদলটি কোনো রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবে না। সকালে বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের বন্দর বিশ্রামাগার চত্বরে নিয়ে আসা হয়েছে।

এর আগে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে মানবিক আশ্রয় পাওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে প্রথম তালিকার ১৬৮ পরিবারের ৪৮০ জনের তথ্য যাচাই-বাছাই ও সাক্ষাৎকার শেষে মিয়ানমারের ১৭ সদস্যের টেকনিক্যাল টিম ২২ মার্চ (বুধবার) সকাল ১০টার দিকে নাফনদী হতে টেকনাফ চৌধুরী পাড়ার ট্রানজিট জেটিঘাট দিয়ে মিয়ানমারের উদ্দেশ্য রওনা দেয়।

প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে দেয়া রোহিঙ্গাদের প্রথম তালিকার যাচাই-বাছাই করতে মিয়ানমারের ১৭ সদস্যের একটি টেকনিক্যাল টিম ১৫ মার্চ সকালে টেকনাফ ট্রানজিট জেটিঘাট হয়ে বাংলাদেশে আসেন।

মিয়ানমারের কাছে পাঠানো প্রথম তালিকাটি থেকে গত ৭দিনে ১৬৮ পরিবারের ৪৮০ জনের তথ্য যাচাই-বাছাই ও সাক্ষাৎকার প্রক্রিয়া শেষ করেন। যাদের সাক্ষাৎকার গ্রহন করা হয়েছে তাদের থেকে বাংলাদেশের আশ্রয় শিবিরে জন্ম নেওয়া ওই পরিবারের শিশুদেরও নথিভুক্ত করেছে টেকনিক্যাল টিম।

উল্লেখ্য, মানবিক কারণে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার পর থেকেই প্রত্যাবাসনের চেষ্টা চালাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। একাধিকবার তালিকা তৈরি করে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার দিনক্ষণ দেয়া হলেও কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যায়নি।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সরকার রাখাইনে সেনা অভিযান শুরু করার পর রোহিঙ্গারা পালিয়ে বাংলাদেশে আসে। শেখ হাসিনা সরকার উখিয়া-টেকনাফের ৩৩টি ক্যাম্পে ৭ লাখের অধিক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়। এর আগেও বিভিন্ন সময় বাংলাদেশে আসা আরো ৪লাখ রোহিঙ্গা মিলিয়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয়। বর্তমানে সাড়ে ১২ লাখ রোহিঙ্গার উপস্থিতি রয়েছে।

২০১৭ সালের ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলের চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষের দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া আর শুরু হয়নি।

তবে ২০১৯ সালে দু’দফা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেয়া হলেও রাখাইন রাজ্যের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা তুলে ধরে ফিরতে রাজি হননি রোহিঙ্গারা।

পরবর্তীতে প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ থেকে ৮ লাখের বেশি রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমারের কাছে পাঠায়। ওই তালিকা থেকে প্রত্যাবাসনের জন্য প্রাথমিক ভাবে ১ হাজার ১৪০ জনকে বাছাই করে ৭১১ জন রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে মিয়ানমারের সম্মতি মিললেও বাকি ৪২৯ জনের ব্যাপারে আপত্তি ছিল।

নতুন করে আবারো প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার লক্ষ্য বাংলাদেশ থেকে পাঠানো রোহিঙ্গাদের তালিকার তথ্য যাচাই-বাছাই করতে ১৫ মার্চ সকালে টেকনাফ জেটিঘাটে হয়ে মিয়ানমারের ১৭ সদস্যর একটি টেকনিক্যাল টিম বাংলাদেশে আসেন।

এরপর টেকনাফ স্থল বন্দরের অভ্যন্তরে মালঞ্চ সম্মেলন কক্ষে মিয়ানমারের টেকনিক্যাল টিমের প্রধান মিনিস্ট্রি অব ফরেন অ্যাফেয়ার্সের মংডুর আঞ্চলিক পরিচালক অং মাইউ এর নেতৃত্ব ১৭ সদস্যর প্রতিনিধি দলটি তালিকা ভুক্ত রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন।

আরও পড়ুন

spot_img

সর্বশেষ