কক্সবাজারে ভূয়া র্যাব পরিচয়ে গণধর্ষণ ও ছিনতাইয়ের ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে আটক করেছে র্যাব-১৫ এর সদস্যরা।
শনিবার (১২ আগস্ট) সন্ধ্যায় কক্সবাজার বাসটার্মিনালের রাজা গেস্ট হাউস নামক আবাসিক হোটেল হতে ভূয়া র্যাব পরিচয় দিয়ে অপকর্ম করা চক্রটিকে আটক করে র্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই করে আনা একটি আইফোন ১১, রেডমি নোট ৮ প্রো, নগদ টাকা, র্যাব মনোগ্রাম লাগানো ধূসর রংয়ের কলারসহ গেঞ্জি ও ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি দামি মোটর সাইকেল জব্দ করা হয়।
গ্রেফতাররা হলো—চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জের চৌধুরী পাড়ার ইউসুফ আর্মির বাড়ীর মো. ইউসুফ আলীর ছেলে মো. জাহিদ হাসান (২৮) ও একই উপজেলার চক নাধড়ার আব্দুল লতিফ এর বাড়ীর মো. আব্দুল লতিফের ছেলে মো. সানোয়ার হাসান সনি (৩০)।
র্যাব-১৫, কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া) অতিঃ পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ভূয়া র্যাব পরিচয়ে দুই যুবক কক্সবাজার পৌরসভার বাস টার্মিনাল এলাকার রাজা গেস্ট হাউজে অপকর্ম চালাচ্ছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে আমরা ওই গেস্ট হাউজে অভিযান পরিচালনা করি। এসময় যুবক দুজনকে আটক ও তাদের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া মালামাল উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা কক্সবাজারের বিভিন্ন পর্যটন পয়েন্টে বেশ কিছুদিন যাবৎ ছিনতাই ও ধর্ষণসহ নানাবিধ অপরাধমূলক কার্যক্রম সংঘঠিত করে আসছে বলে স্বীকার করে। এছাড়াও জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দুইজন দ্বারা সংঘঠিত অপরাধের ভয়ংকর চিত্র ফুটে উঠে। অপরাধের বর্ণনা দিয়ে তারা জানায়, শনিবার ভোর রাত ৩টার দিকে ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ ডিককুল এলাকার বাসিন্দা জনৈক ফজল করিম (২৮) ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে সুগন্ধা বীচ হতে সিএনজি অটোযোগে বাসায় ফিরছিল। এসময় বাস টার্মিনালের অদূরে যানবাহন থেকে পৌর টোল আদায়কারী টোল আদায়ের লক্ষ্যে উক্ত সিএনজি’টি থামায়। এ সময় ভূয়া র্যাব সদস্য পরিচয় দেয়া এ দুইজন মোটর সাইকেল যোগে সেখানে হাজির হন। হেড লাইটের উপরে র্যাব মনোগ্রাম লাগানো মোটর সাইকেলে আগত দুজনের মধ্যে একজন র্যাবের লোগো সম্বলিত টি-শার্ট পরিহিত ছিল এবং নিজেদের র্যাবের সদস্য পরিচয় দিয়ে সিএনজি’র যাত্রী ফজল করিম হতে থেকে নগদ ৯ হাজার টাকা, একটি আইফোন ১১ এবং একটি রেডমি নোট ৮ প্রো মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।
আটককৃতদের বরাত দিয়ে মো. আবু সালাম চৌধুরী বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়ে তারা রাজা গেস্ট হাউজে ফিরে যায়। সেখানে ভোর রাত ৪টার দিকে ওই গেস্ট হাউজের অন্য একটি কক্ষে অবস্থানরত রাঙ্গামাটি জেলা থেকে আগত জনৈকা ফাতেমা নামে এক পর্যটককে নিজেদের র্যাব পরিচয় দেয়। ওই পর্যটকের পরিচয় ও অন্যান্য বিষয়াদি জিজ্ঞাসাবাদের অজুহাতে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ভিকটিম’সহ রাজা গেস্ট হাউজের ম্যানেজার ও সহকারী ম্যানেজারকে জিজ্ঞাসাবাদে এ ধর্ষণের বিষয়ে সত্যতা পাওয়া যায়। ছিনতাই ঘটনার সাথে পৌর টোল আদায়কারী জাহিদুল ইসলামও সম্পৃক্ত বলে জানিয়েছে তারা। তাকে গ্রেফতারে র্যাব অভিযান চলাচ্ছে।
আটককৃতদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর মডেল থানায় হস্তান্তর ও র্যাব বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে বলেও জানায় র্যাবের এ কর্মকর্তা।