spot_imgspot_img
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার নিবন্ধিত। রেজি নং-৯২
বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
প্রচ্ছদকক্সবাজারদখলমুক্তিতে সহযোগিতা করলে ৩০ ভাগ পৌরকর মওকুফ

প্রথম কর্মদিবসে নতুন মেয়রের ঘোষণা

দখলমুক্তিতে সহযোগিতা করলে ৩০ ভাগ পৌরকর মওকুফ

কক্সবাজার প্রতিনিধি
spot_img

কক্সবাজার পৌরসভার নালা-নর্দমা, ছরা দখলে রেখে জনভোগান্তি বাড়িয়েছে কিছু জবরদখলকার। ফলে অল্প বৃষ্টিতেই জলবন্দি হয়ে যায় পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা। পৌরবাসীকে ভোগান্তি হতে রক্ষায় দখল ছাড়তে যারা সহযোগিতা করবেন তাদের সম্মান জানিয়ে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পৌরকর মওকুফ করার ঘোষণা দিয়েছেন কক্সবাজার পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী মাবু।

রবিবার (২০ আগস্ট) আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব নেয়ার প্রথম দিনে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে মতবিনিময়কালে মেয়র এমন ঘোষণা দিয়েছেন।

দুপুরে পৌরসভা কার্যালয়ের সম্মেলনে কক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় ছয় মাসের ২২টি কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন মেয়র।

পরিকল্পনা গুলো হলো-১. রাত্রিকালীন ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ ও পরিস্কার করা। ২. পরিচ্ছন্ন শহর গড়ে তুলতে ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহে প্রত্যেক বাসা, আবাসিক ভবন, আবাসিক হোটেল ও রেঁস্তোরায় তিন সাইজের পলিব্যাগ ব্যবহারের ব্যবস্থা করা। ৩. ময়লা-আবর্জনা-বর্জ্য খালী জায়গা, ড্রেন ও যত্রতত্র ফেলা থেকে পৌরবাসীকে বিরত রাখতে নিরুৎসাহিত করা ও বিশেষ জনসচেতনতা মূলক কার্যক্রম চালানো। ৪. শহর সার্বক্ষনিক পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব রাখতে পৌরসভায় কর্মরত সেবকদের (পরিচ্ছন্নতা কর্মী) চাকরীতে বহাল রেখে কনজারভেন্সী শাখাকে টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বেসরকারী সংস্থাকে দায়িত্ব দেয়া। ৫. কক্সবাজার পৌর এলাকায় বিদ্যমান সকল বড় ও মাঝারী আকারের ছরা, খাল ও নর্দমাগুলো পরিস্কার করে পানি প্রবাহের ব্যবস্থা করা। ৬. অবৈধভাবে দখল করা নালা, ফুটপাত ও পৌরসভার মালিকানাধীন খতিয়ানভুক্ত জায়গা-জমি দখলমুক্ত করে পৌরসভার আওতায় নিয়ে আসা। ৭. দ্রæত সময়ের মধ্যে কস্তুুরা ঘাট, জেটি ঘাট খনন করে চলাচল উপযোগী করা। ৮. বাহারছড়ার মুরুং ছরা হতে হিন্দু সম্প্র্রদায়ের শশ্মান পর্যন্ত পৌরসভার ছরা-ড্রেনের উপর যে সমস্ত অবৈধ স্থাপনা রয়েছে তা উচ্ছেদ করে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়া। ৯. ঘোনারপাড়া হয়ে বাজারঘাটা থেকে পেশকারপাড়া ¯øুইচ গেইট পর্যন্ত এলাকার সকল দখলদারদের উচ্ছেদ করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়া। ১০. টেকপাড়া হয়ে আমেনা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ¯øুইচ গেইট পর্যন্ত এলাকা দখলমুক্ত করা। ১১. পাহাড়তলী-রুমালিয়ারছড়া-মাঝেরঘাট পর্যন্ত নালা-নর্দমা থেকে অবৈধ দখলাদার উচ্ছেদ ও খনন করা। ১২. শহরের বিভিন্ন অলি-গলির ফুটপাত দখলমুক্ত করার পাশাপাশি প্রকৃত হকারদের স্থায়ী পূর্নবাসনের ব্যবস্থা করা। ১৩. অবৈধ সকল টমটমকে কক্সবাজার পৌর এলাকায় কোনভাবেই প্রবেশ করতে না দেয়া। পাশাপাশি সকল অবৈধ টমটম যাতে পৌর শহরে চলাচল করতে না পারে সেই বিষয়ে প্রশাসনের সহযোগিতায় কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া। রোহিঙ্গা এবং ১৮ বছর বয়সের নিচে কাউকে টমটম চালাতে না দেয়া ও নিয়মিত অভিযান চালানো। ১৪. অন্য উপজেলার কোন চালক কক্সবাজার পৌরসভায় টমটম চালাতে চাইলে তার মা-বাবা, ভাই-বোনের এনআইডি উপস্থাপন এবং পৌরসভার স্থায়ী একজন বাসিন্দা জিম্মাদার ও পৌরসভা থেকে বিনামূল্যে টমটম চালকের পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে হবে। ১৫. পৌরসভার ড্রেনগুলো বছরে চারবার টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খনন করা হবে। ১৬. পৌরসভার মালিকানাধীন খতিয়ানভুক্ত অবৈধ দখলকৃত জায়গা-জমিগুলো দ্রææত দখলমুক্ত করে পৗরসভায় আয়বর্ধনমূলক বাণিজ্যিক ভবন, মার্কেট, শপিংমল, এপার্টমেন্ট তৈরী করা হবে। ১৭. দ্রææত সময়ের মধ্যে অতিগুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো বিশেষ করে কক্সবাজার সদর মডেল থানা রোড, বঙ্গবন্ধু সড়ক, বড়বাজার সড়ক, পেশকারপাড়া সড়ক, টেকপাড়া মসজিদ সড়কসহ ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক টেকসই ভাবে সংস্কার করা হবে। ১৮. যারা পৌরসভার অবৈধ নালা-নর্দমা, ছরা ইত্যাদি দখল করে আছে তা দখলমুক্ত করতে সহযোগিতা করলে তাদের বিশেষ সম্মাননা প্রদানসহ শতকরা ২০ থকে ৩০ ভাগ পৌর কর মওকুফ করা হবে। ১৯. কক্সবাজার পৌর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো অবৈধভাবে দখল করে যত্রতত্র বাস, সিএনজি চালিত অটোরিক্সাসহ অন্যান্য যানবাহনের অস্থায়ী স্ট্যান্ড (পার্কিং) করা হয়েছে তা জনস্বার্থে উচ্ছেদ করা হবে। ২০. কক্সবাজার পৌরসভায় সকল প্রকার নাগরিক সেবা দ্রæত প্রাপ্তি ও সহজলভ্য করে হয়রানি ও ভোগান্তি বন্ধ করতে পৌর কার্যালয়ের সকল শাখাকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানো হবে। ২১. সরকারের দূর্নীতির ব্যাপারে গৃহিত জিরো টলারেন্স নীতির আলোকে কক্সবাজার পৌরসভার সকল কাজে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা নিশ্চিত করা হবে। পৌর নাগরিকদের অভিযোগ গ্রহণ করে তা সমাধানের জন্য নিয়মিত গণশুনানীর আয়োজন এবং কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেলে তা ত্বরিৎ তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তুমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ২২. পৌর নাগরিকদের হয়রানি ও ভোগান্তি দূর করতে কাংখিত সকল নাগরিক সেবা ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রদান করার উদ্যোগ রয়েছে।

মেয়র বলেন, এ কথা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, আমি একটি রাজনৈতিক দলের কর্মী। আমার রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে আমি মেয়র নির্বাচিত হয়েছি। আমি এ রাজনৈতিক দলের নীতি-আদর্শের প্রতি দৃঢ়ভাবে অবিচল। তবে আমি কক্সবাজার পৌরসভার সকল কার্যক্রম, সকল দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে সততা-নিষ্ঠা ও নিরপেক্ষভাবে পরিচালনায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এ পৌরসভা হবে সকল দল-মতের মানুষের। এখানে সবাই সমান সুযোগ-সুবিধা পাবে। নতুন পৌর পরিষদের কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি পৌরবাসি ও গণমাধ্যমকর্মীদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

আরও পড়ুন

spot_img

সর্বশেষ