spot_imgspot_imgspot_img
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার নিবন্ধিত। রেজি নং-৯২
শনিবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৩
প্রচ্ছদচট্টগ্রামবোয়ালখালীতে মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে পূজার প্রস্তুতি, প্রতিমা তৈরীতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা

বোয়ালখালীতে মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে পূজার প্রস্তুতি, প্রতিমা তৈরীতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা

দেবাশীষ বড়ুয়া রাজু, বোয়ালখালী
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

ঘনিয়ে আসছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। প্রতিমা তৈরিতে শিল্পীর ব্যস্ততা জানান দিচ্ছে দেবী দূর্গার আগমনী বার্তা। আগামী ১৪ অক্টোবর দুর্গাপূজার উৎপত্তিস্থল চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার করলডেঙ্গার সন্ন্যাসী পাহাড়ের মেধস আশ্রমে ঢাকের বাদ্য, উলুধ্বনি-শঙ্খধ্বনি ও চণ্ডী পাঠের মাধ্যমে শুভ মহালয়া উদযাপনের মধ্য দিয়ে সূচনা হবে দেবীপক্ষের। এরপর ২০ অক্টোবর শুক্রবার মহাষষ্ঠির মধ্যে দিয়ে শুরু হবে শারদীয় দুর্গাপূজা।

আর এই উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিমা শিল্পীরা কল্পনায় দেবী দুর্গার অনিন্দ্যসুন্দর রূপ দিতে দিন রাত চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। নিখুঁত হাতের কারুকার্য দিয়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তৈরি করছেন প্রতিমা। পূজার দিন ঘনিয়ে আসায়, ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন প্রতিমা শিল্পীরা।

শনিবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিনে উপজেলার আমুচিয়া, পোপাদিয়া, শ্রীপুর খরণদ্বীপ, জৈষ্টপুরা কধুরখীল ইউনিয়নের বিভিন্ন মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে , মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে ব্যাপক প্রস্ততি, যদিও অনেক মণ্ডপে প্রথম পযার্য়ে প্রস্তুতি হিসেবে দুর্গা প্রতিমার মাটির কাজ শুরু করেছে। অন্যদিকে কিছু মণ্ডপে শেষ পর্যায়ে মূর্তিতে রং তুলির আঁচড়ের কাজ চলতে দেখা গেছে । আবার কিছু কিছু মণ্ডপে সাজসজ্জা, আলোকসজ্জা,প্যান্ডেল তৈরি ও ডেকারেশনসহ অন্যান্য কাজগুলি ধীরে ধীরে এগিয়ে চলছে। উপজেলার জৈষ্ট্যপুরা বীণাপানি সংঘে প্রতিমা তৈরীতে ব্যস্ত রয়েছেন শরিয়তপুর জেলার নারিয়া উপজেলার বারৈ পাড়া এলাকার মৃৎশিল্পী রতন পাল।

তিনি বলেন, বোয়ালখালীতে এবার ৪টি মণ্ডপে প্রতিমা তৈরীর অর্ডার পেয়েছি। প্রকারভেদে একেকটি ৪০-৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম বৃদ্ধি হওয়ার প্রতিমা তৈরিতেও খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে তেমন একটা লাভ হবেনা। পৈতৃক পেশাকে টিকিয়ে রাখতে ৪৩ বছর ধরে এ কাজের সাথে যুক্ত রয়েছি।

কানুনগোপাড়া হরিমন্দির এলাকায় প্রতিমা তৈরী করছেন পোপাদিয়া ইউনিয়নের কারিগর ব্রজ বিহারি আচার্য ও তার ছেলে আশীষ আচার্য। সাথে সহযোগী হিসেবে কাজ করেন আরও ৫ জন।

আশীষ আচার্য বলেন, বংশপরম্পরায় আমরা এ পেশার সাথে জড়িয়ে আছি। আমার দাদু প্রফুল্ল আচার্য ছিলেন নামকরা মৃৎশিল্পী। পুর্বপুরুষের পেশায় ১৫ বছর ধরে বাবার সাথে কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, এ বছর ৪ টি প্রতিমার অর্ডার পেয়েছি। এখন দ্বিমাটির ফিনিশিংয়ের কাজ করছি এরপর রংয়ের কাজ করব। যদিও পূজা শুরু হতে এখনো সময় আছে। সময় ঘনিয়ে আসলে আমাদের কাজের চাপ অনেকটাই বেড়ে যাবে।

আমুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল দে বলেন, আমুচিয়া ইউনিয়নের প্রতিটি মণ্ডপে প্রতিমা তৈরীর কাজ প্রায় সম্পন্ন। কিছু প্রতিমা কিনে আনা হবে, বাকীগুলো মণ্ডপে তৈরী করা হচ্ছে। সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশে পূজা সম্পন্ন করতে পরিষদের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা থাকবে।

উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্যামল বিশ্বাস বলেন, এবার বোয়ালখালীতে পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নে ৯৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠ-সুন্দর ও উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা সম্পন্ন করতে এরই মধ্যে পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া পূজা মণ্ডপগুলোর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময় করা হচ্ছে।

দুর্গাপূজায় সার্বিক নিরাপত্তা প্রদানের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে বোয়ালখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আছহাব উদ্দিন বলেন, আশা করছি প্রতি বছরের মতো এবারও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মধ্যদিয়ে শান্তিপূর্ণ ও উৎসব মুখর পরিবেশে দুর্গোৎসব উদযাপিত হবে। এ বিষয়ে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রতিটি ইউনিয়ন ও বিটে আমাদের বিট অফিসার থাকবে। নিয়মিতভাবে তারা কমিটির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। টহল পুলিশ, পোশাকধারী পুলিশ ও সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

আরও পড়ুন

spot_img

সর্বশেষ