কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জাফরুল ইসলাম বাবুল মেম্বারকে অস্ত্র ও ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর পরিবার।
গত ইউপি নির্বাচনে পরাজিত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সুলতান আহমদ এবং স্থানীয় চিহ্নিত মাদক কারবারিরা ষড়যন্ত্র করে র্যাবকে ভুল তথ্য দিয়ে এ গ্রেপ্তার নাটক সাজানো হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তারা।
রোববার (৮ অক্টোবর) বিকেলে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বাবুলের পরিবার পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ করা হয়।
পরিবারের দাবি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে গত ৪ অক্টোবর উখিয়ার জামতলী এলাকা থেকে বাবুল মেম্বারকে তুলে নেওয়া হয়। পরদিন র্যাব-১৫, কক্সবাজার বাবুলকে টেকনাফের কাটাখালী থেকে ৫৫ হাজার ইয়াবা, একটি বিদেশি পিস্তল, একটি দেশীয় অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেপ্তার দেখায়।
এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছে বাবুলের পরিবার।
লিখিত বক্তব্যে বাবুলের ভাই একরামুল কবির ও বোন শাহীনা আক্তার বলেন, বাবুল একজন উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তি। তাঁর স্ত্রীও এমবিবিএস পাস চিকিৎসক। এলাকার সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। বাবুলকে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী বলা হলেও তার বিরুদ্ধে বাস্তবে মাদক পাচারের কোনো অভিযোগ কিংবা মামলা নেই।
একরামুল কবির বলেন, গত ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হেরে গিয়ে সোলতান আহমদ ও তার সহযোগীরা বাবুলকে ফাঁসাতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। অথচ সোলতানই তালিকাভূক্ত মাদক কারবারী। সোলতানের বিরুদ্ধে মাদকসহ ১৯টি মামলা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন বাবুলের মেয়ে কক্সবাজার মডেল হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী অনিমা ইসলাম অর্পা, চাচা হাফেজ জাকের হোসেন, বোন মনোয়ারা বেগম ও ফাতেমা খাতুনসহ পরিবারের সদস্যরা।
গত ৫ অক্টোবর র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের একটি দল তাকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়ে গনমাধ্যমকে বিষয়টি অবহিত করেন। র্যাবের দাবি, বাবুলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ২১টি মামলা রয়েছে। বাবুল ২০০৫ সাল থেকে মাদক চোরাচালানে জড়িত। তার নেতৃত্বে প্রতিমাসে ৫০ লাখের উপরে ইয়াবা আনা হয় এবং সে হিসেবে তিনি শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী।
র্যাব-১৫, কক্সবাজারের এ তথ্য মিথ্যা ও সাজানো বলে দাবি করে বাবুলের পরিবার বলছে, তাঁর বিরুদ্ধে জায়গা-জমি ও রাজনৈতিক ৩-৪টি মামলা রয়েছে। এতে মাদকের কোনো মামলা নেই। এ ব্যাপারে বাবুলের পরিবার প্রধানমন্ত্রী,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
টেকনাফ থানার ওসি মো. জোবায়ের ছৈয়দ বলেন, বাবুলের বিরুদ্ধে হত্যা, দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৮টি মামলা রয়েছে। তবে আগের কোন মাদকের মামলা নেই বলে নিশ্চিত করেন ওসি।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বক্তব্য জানতে হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ করা হলেও, র্যাব-১৫, কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী কোন উত্তর করেননি।