spot_imgspot_img
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার নিবন্ধিত। রেজি নং-৯২
শনিবার, ১০ জুন ২০২৩
প্রচ্ছদবৃহত্তর চট্টগ্রামভাঙ্গনের ২৪ বছর পর নির্মিত হচ্ছে নুতন ‘কালিগন্জ সেতু’

ভাঙ্গনের ২৪ বছর পর নির্মিত হচ্ছে নুতন ‘কালিগন্জ সেতু’

spot_img

কাউছার আলম,পটিয়া »

পটিয়া উপজেলার সর্বদক্ষিণের এলাকা কাশিয়াইশ ইউনিয়নের কোল গেঁষে প্রবাহমান কালিগঞ্জ খালের উপর জোড়াতালি দিয়ে চলা ঝুঁকিপূর্ণ কালিগঞ্জ সেতুটি নতুন করে নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করেছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। চলতি বছরের শুরুতে ৩৮ কোটি টাকায় নতুন সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি টেন্ডার আহবান করেছে।

নতুন সেতুটি নির্মিত হলে লাঘব হবে সড়কটি ব্যবহারকারী পটিয়া, আনোয়ারা ও চন্দনাইশ উপজেলার লক্ষাধীক মানুষের চলাচলে দীর্ঘ ২৪ বছরের ভোগান্তি।

জানা যায়, কালিগঞ্জ খালের ভাঙনের ফলে ১৯৭২ সালে নির্মিত কালিগঞ্জ সেতুর দু’পাশ ক্রমান্বয়ে খালে পরিণত হলে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ১৯৯৬ সালে সড়ক ও জনপদ বিভাগ দুই পাশে বেইলি বসিয়ে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ নির্দেশনা সম্বলিত সাইনবোর্ড দিয়ে যোগাযোগ সচল রাখার চেষ্টা করেন। এরপর বেশ কয়েকবার মেরামত করা হলেও সরকার যায় সরকার আসে কিন্তু নানা জটিলতার কারণে নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেননি কেউ।

সাম্প্রতিক সময়ে নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে নতুন সেতু নির্মাণের জন্য পটিয়া ও আনোয়ারার সংসদ সদস্যদের যৌথ প্রচেষ্টায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি চালাচালি করেন। যার ফলে সেই কাঙ্খিত স্বপ্নের কালিগন্জ সেতুটি অবশেষে বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। তাতেই এলাকাবাসীর মনে নতুন করে আশার সঞ্চার সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্ত কালিগন্জ সেতু এলাকা ঘুরে জানা যায় , চট্টগ্রাম শহর হতে শান্তিরহাট হয়ে বুধপুরা বাজার ও কাশিয়াইশ নয়াহাট অতিক্রম করে আনোয়ারা উপজেলায় যাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির মধ্যখানে কালিগঞ্জ সেতুটি পটিয়া ও আনোয়ারা উপজেলাকে যুক্ত করেছে।

১২০ ফুট দীর্ঘ ও ১৮ ফুট চওড়া দুই অ্যাবার্টম্যান্ট বিশিষ্ট সেতুটি ১৯৬৮ সালের দিকে নির্মাণ শুরু হলেও মুক্তিযুক্তকালীন সময়ে সেতু নির্মাণের কাজ বন্ধ থাকে। ১৯৭২ সালের দিকে সেতুটি নির্মাণ শেষ হয়। সেতুটি দিয়ে আনুপাতিক কম যানবাহন চলাচল করায় সেতুর ক্ষতি না হলেও সেতুর দু’পাড় পানির স্রোতে ভেঙে প্রশস্ত বেশি হওয়ায় সেতুর দুই পাশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান, বর্তমানে সেতুটির উপর দিকে প্রায় ৫ শতাধিক সিএনজি, মিনিবাস, মিনি ট্রাকসহ অসংখ্য যানবাহন চলাচল করে। ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি তিন ভাগে বিভক্ত হয়েছে। তার মধ্যে পটিয়ার অংশে স্ট্রীল, মাঝখানে পুরানো পাথরের জমানো এবং আনোয়ারার অংশেও স্ট্রিল জোড়াতালি দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে রয়েছে। এ সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন পটিয়া ও আনোয়ারার প্রায় ১০-১২ হাজার মানুষ চলাচল করে।

এ সেতু দিয়ে পটিয়া ও আনোয়ারার লোকজন ছাড়াও চন্দনাইশ, বাঁশখালীর মানুষও চলাচল করে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সিএনজি অটো রিকসা চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর গ্রামীণ সড়ক হিসেবে পটিয়া-আনোয়ারা সংযোগ সড়ক দিয়েই কয়েকশ সিএনজি চলাচল করে। এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল ঝুঁকিপূর্ণ কালিগঞ্জ সেতুটি নতুন করে নির্মাণের।

পটিয়া ও আনোয়ারার মানুষের চলাচল ছাড়াও দক্ষিণ চট্টগ্রামের কয়েকটি উপজেলার সাথে যোগাযোগ সহজ হওয়ায় এ সেতুটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

সিএনজি চালক মোহাম্মদ মিয়া জানান, প্রতিদিন সেতু দিয়ে ৫ শতাধিক সিএনজি চলাচল করে। পাশাপাশি ছোটবড় অনেক যানবাহন চলাচল করলেও বর্তমানে ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি পার হতে হচ্ছে। দ্রুত সময়ে নতুন সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করার আহবান জানান তিনি।

এ ব্যাপারে দোহাজারী সড়ক ও জনপদ বিভাগের পটিয়া উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন জানান, সেতুটি ২০১৭ সালে নকশা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। ২০১৮ সালের শেষের দিকে তা পাশ হয়ে আসলে মিলে আর্থিক অনুমোদন। ৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন করে কালিগঞ্জ সেতুটি নির্মাণের প্রকল্পটির টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। শীঘ্রই শুরু হবে নতুন সেতু নির্মাণ কাজ।

বাংলাধারা/এফএস/এমআর

আরও পড়ুন

spot_img

সর্বশেষ