কক্সবাজারের টেকনাফের সমুদ্র সৈকতের ঝাউগাছ নিধন করে গঠে তোলা হয়েছে অবৈধ বসতি। ইতোমধ্যে অসংখ্য গাছ কর্তৃপক্ষের অগোচরে কেটে ফেলা হয়েছে। ঝাউবন দখলে টার্গেট করা স্থানে ময়লা ফেলে ভরাট করে চালানো হয় দখল যজ্ঞ। এতে সৌন্দর্য্য হারাচ্ছে ঝাউবন, অরক্ষিত হয়ে উঠছে বেলাভূমির তীর ও মেরিন ড্রাইভ। এমনটি অভিমত স্থানীয় ওয়াকিবহাল মহলের।
সূত্র জানায়, টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন নৌকা ঘাট ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকা। জেলেদের আসা-যাওয়া, আহরিত মাছ অবতরণসহ নানা কারণে এলাকাটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ কারণে সৈকতের তীর রক্ষায় লাগানো ঝাউগাছের ভেতর গড়ে উঠছে অস্থায়ী বসতি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। অসংখ্য ঝাউগাছ কেটে চা ও মুদির দোকান, ফিশিং আড়ত ঘরসহ শতাধিক স্থাপনা ইতোমধ্যে তৈরি করা হয়েছে। কেউ কেউ এলাকা ভিত্তিক ক্ষমতায় জায়গা দখল করলেও অনেকে আবার মাছ ব্যবসায়ী সমিতি নাম ব্যবহার করে ঘর স্থাপন করছেন।
দেখা যায়, ঝাউবনের ভেতর এবং মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাশে রাখা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা। এ আবর্জনার দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে আশা পাশের এলাকায়। সাগরের তীর হতে মাছ আনতে ঝাউবন কেটে তৈরি করা হয়েছে রাস্তা। দিন-রাত গাড়ি চালিয়ে সেখান থেকে পরিবহন করা হচ্ছে মাছ ও ট্রলারের পণ্য।তাছাড়া ঝাউবনের ভিতর নির্মান করা হচ্ছে ইঞ্জিল চালিত নৌকা-নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে চলছে এ কার্যক্রম।
আরো দেখা যায়, শামলাপুর নৌকা ঘাট থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দৈর্ঘের টেকনাফ সী বীচ এলাকা জুড়ে ঝাউবনের ভেতর তৈরি করা হচ্ছে ছোট ছোট ঘর। সুযোগ পেলে কাটা হচ্ছে ঝাউগাছ। এর আগেও গত ২০১৮ সালে মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাশে টেকনাফ তুলাতুলী-দক্ষিণ লম্বরী সংলগ্ন সৈকতে ঝাউবাগান কেটে ছিল সঙ্ঘবদ্ধ একটি চক্র। সুযোগ পেলে বড় বড় ঝাউগাছ গুলো রাতের আধা কেটে ফেলা হচ্ছে। এতে একদিকে সৈকতের সৌন্দর্য্যহানির পাশাপাশি পর্যটন খাতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। পাশাপাশি উজাড় হচ্ছে ঝাউবন ও দখল হচ্ছে সৈকতের গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
শামলাপুর মৎস্য উপকুলীয় মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কামাল হোসাইন বলেন, নৌকার ঘাটে ঝাউবনের ভিতর বসতি গুলো অবৈধ ভাবে গড়ে উঠেছে। এগুলো একবার উচ্ছেদ করা হয়েছিল। পরে আবার দখল হচ্ছে।
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সরওয়ার আলম বলেন, ঝাউবনে যারা অবৈধ বসতি স্থাপন করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে।
টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, অতি সহসা এলাকাটি পরিদর্শন করে বন বিভাগের সাথে নিয়ে দখল উচ্ছেদসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।