প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে প্রতিবছর মানুষ নিজের ঘর বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নেয় সাইক্লোন শেল্টার ভবনে। তবে যখন সেই ভবন নিজেই যখন থাকে দুর্যোগের ভয়াবহতায় ধসে পড়ার শঙ্কায়, তখন মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উঠে প্রশ্ন। বলছিলাম চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার মঘাদিয়া ইউনিয়নের বদিউল্লাহ পাড়া সাইক্লোন শেল্টারের কথা। ১৯৭২ সালে নির্মিত এ সাইক্লোন সেল্টারটি এখন নিজেই রয়েছে দুর্যোগ ঝুঁকিতে। জরাজীর্ণ ভবনটির নেই কোন দরজা-জানালা। খসে পড়েছে ইট-বালি-পাথর।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে নির্মিত তিনতলা বিশিষ্ট এ ভবনটিতে দুর্যোগকালীন সময়ে আশ্রয় নিতো মঘাদিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ। পরবর্তীতে এই ভবনেই পাঠ কার্যক্রম চলতো বদি উল্যাহ পাড়া ওয়ালী আহমদ চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। তবে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় নিরাপত্তার প্রশ্নে পাশে নির্মাণ করা হয় আরেকটি স্কুল ভবন। আর নতুন ভবনে সরিয়ে নেওয়া হয় বিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম। ভবনটি ছাড়ার ১০ বছরের বেশি সময় পার হলেও জরাজীর্ণ ভবনের সংষ্কার না হওয়ায় হতাশ বিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষার্থীরা।
সাবেক শিক্ষার্থী মোহাম্মদ গোলাম জাকারিয়া জানান, বর্তমানে আমি মঘাদিয়া নুরুল আবছার চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ছি। এই ভবনে শিশু শ্রেণির মাধ্যমে আমার প্রথম স্কুল জীবন শুরু হয়। ছোট থেকে দেখে আসছি ভবনের অবস্থা খুবই নাজুক। ভবনের এই অবস্থা দেখে খুবই কষ্ট লাগে।
স্থানীয় বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব আবুল হাশেম জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধের পর কমরআলী, মাদবরহাট এবং বদিউল্লাহ পাড়া সাইক্লোন শেল্টার একসাথে নির্মিত হয়। বাকি দুটো এখনো ভালো থাকলেও বদি উল্লাহ পাড়ার ভবনটা গত ১০-১২ বছর ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে।
মঘাদিয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মোহাম্মদ ইউনুস মিয়া জানান, বহু বছর ধরে ভবনটির বেহাল দশা। ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট আবেদন করা হয়েছিলো। তবে এখনো কোন প্রদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
১১ নং মঘাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসাইন মাস্টার জানান, ভবনটি সংষ্কারের অবস্থায় নেই, খুবই ভয়াবহ অবস্থা। তাই এটি ভেঙ্গে ফেলতে উপজেলায় আবেদন করা হয়েছে। তবে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন জানান, ভবনটি সম্পর্কে আমাকে কেউ এখনও অবগত করেনি। যেহেতু ভবনটি বহু পুরানো এটি সম্ভবত সংষ্কারের অবস্থায় নেই। স্থানীয়রা আবেদন করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।