spot_imgspot_imgspot_img
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার নিবন্ধিত। রেজি নং-৯২
শনিবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৩
প্রচ্ছদচট্টগ্রামকক্সবাজাররোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা ও টেকসই প্রত্যাবাসন নিয়ে কাজ করছে সরকার

টেকনাফে ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিজি

রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা ও টেকসই প্রত্যাবাসন নিয়ে কাজ করছে সরকার

সায়ীদ আলমগীর, কক্সবাজার
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

‘বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা ও টেকসই প্রত্যাবাসন নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ সরকার। সব সময় রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের উপর গুরুত্বারোপ করে আসছে। রোহিঙ্গারা যাতে নিজ দেশে ফিরে নিজেদের জায়গায় স্থায়ীভাবে বাস করতে পারে সে বিষয়ে শুরু হতে গুরুত্ব দিয়ে আসা হচ্ছে।’

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মাইনুল কবির টেকনাফে সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। কক্সবাজারের টেকনাফে প্রত্যাবাসন ইস্যুতে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা করতে আসা মিয়ানমারের ৩২ সদস্যের প্রতিনিধি দলের দিনব্যাপী আলোচনা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ ব্রিফিং করেন।

মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত মিয়ানমারের ইমিগ্রেশন বিভাগের এই প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলের সাথে তাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে মতবিনিময় করেন। বুধবারও রোহিঙ্গাদের সাথে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের মতবিনিময় চলবে বলে জানিয়েছেন শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে টেকনাফের ২৬-২৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে রেস্ট হাউসে আসা ১৮০ জন রোহিঙ্গাদের সাথে পৃথকভাবে দুটি দলে ভাগ হয়ে মিয়ানমারের প্রতিনিধিদল তাদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রতিনিধিদল তাদের সঙ্গে প্রত্যাবাসন ইস্যুসহ জন্ম নেওয়া রোহিঙ্গা শিশুদের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়। প্রথমদিন কথা বলা শেষে বিকালের দিকে প্রতিনিধি দলটি মিয়ানমারে ফিরে যান। বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো আলোচনার জন্য আসবেন বলে কথা রয়েছে।

মুচনি ২৬ নম্বর ক্যাম্প মাঝি বদরুল ইসলাম বলেন, মিয়ানমারের প্রত্যাবাসন ইস্যুতে তালিকাভুক্ত ও নতুন কিছু রোহিঙ্গাদের পরিবারে জন্ম নেয়া শিশুদের সঠিক তথ্য যাচাই-বাছাই করে প্রতিনিধিদল। তারা এটা নিশ্চিত হতে চেয়েছেন, এক পরিবারের যদি ৫ সন্তান থাকে এর মধ্যে ক’জন বাংলাদেশে ও ক’জন মিয়ানমারের জন্ম। সে বিষয়টি নিশ্চিত হতে কাজ করছে প্রতিনিধিদল। প্রত্যাবাসন কবে হবে, কিভাবে হবে এসব তারা কিছুই আলাপ করেনি তারা।

তিনি আরও বলেন, এরপরও আমরা মিয়ানমার প্রতিনিধিদলকে জানিয়েছি-মিয়ানমার আমাদের দেশ, আমরা নিজ দেশে অব্যশই ফিরে যাবো যদি আমাদের নাগরিক অধিকার, ভিটা-মাটি ফেরতসহ রোহিঙ্গা হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়।

কক্সবাজারে শরনার্থী কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, প্রতিনিধি দলটি দু’দলে বিভক্ত হয়ে ১৮০ জন রোহিঙ্গা পরিবারের প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। মুলত প্রত্যাবাসনে রোহিঙ্গাদের সম্মতি আদায়ে এই আলোচনা চলছে। যার মধ্যে একটি দল সড়ক ও জনপথ বিভাগের রেস্ট হাউজ নদী নিবাসে এবং অপর দলটি গণপূর্ত বিভাগের রেস্ট হাউসে আলোচনা চালিয়েছেন।

আলোচনার জন্য আসা কয়েকজন রোহিঙ্গা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, এ আলোচনার মধ্য দিয়ে নিজ ভিটে-মাটি ও নাগরিকত্ব দিলেই স্বদেশে ফিরবেন তারা। দু’পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান হবে বলে আশা করছেন তিনি।

শরনার্থী কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, জল ও স্থল পথে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হবে। যা ২০১৮ সালে দু’দেশের চুক্তিতে উল্লেখ্য রয়েছে। আমরা জল ও স্থল পথে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য প্রস্তুুত রয়েছি। আমরা আশা করি, দু’পক্ষের কথা-বার্তার মাধ্যমে তাদের মধ্যে যে আস্থার সংকট রয়েছে, সেটি দূর হবে এবং অচিরেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে, যার জন্য আমরা প্রস্তুুত। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন অবশ্যই মর্যাদাপূর্ণ টেকসই এবং স্বেচ্ছায় হবে। এ জন্যই বাংলাদেশ সরকার সব সময় কাজ করে যাচ্ছে।

এর আগে চলতি বছর দু’বার মিয়ানমার প্রতিনিধি দল আসে টেকনাফে। প্রথম বার ১৫ মার্চ ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি বাংলাদেশ আসেন। এরপর দ্বিতীয় দফায় ১৪ সদস্যের প্রতিনিধি এসেছিলেন ২৫ মে। এর মধ্যবর্তি ৫ মে বাংলাদেশের ৭ সদস্য রোহিঙ্গাদের ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দলও মিয়ানমারের মংডুর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আসেন। উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি ক্যাম্পে রোহিঙ্গার সংখ্যা ১২ লাখের বেশি আশ্রয়রত রয়েছেন। কিন্তু গত ছয় বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি মিয়ানমার।

আরও পড়ুন

spot_img

সর্বশেষ