পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা বলেছেন, স্বপ্ন দেখলেই হবে না। স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে হলে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষার পাশাপাশি পার্বত্যঞ্চলে নিজেদের মাতৃভাষা, সামাজিক প্রথা ও ঐতিহ্য সংস্কৃতিকে তুলে আনতে হবে। হারিয়ে যাওয়ার ভাষা ও সংস্কৃতিকে নতুন করে দেশের সামনে উপস্থাপন করা না গেলে আগামীতে পার্বত্য এলাকায় সেসব সংস্কৃতি পিছিয়ে থেকে যাবে। তাই আগামীতে নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে তুলে আনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সকালে বান্দরবান ক্ষুদ্র- নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউটের ১৯তম বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় ছাত্র সম্মেলন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বক্তব্যে চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
চাকমা সার্কেলে উপদেষ্টা রাণী য়েন য়েন তার বক্তব্যে বলেন, এক সময়ে ছোট বেলায় টিফিনের টাকা জমিয়ে বই কিনে পড়ালেখা করতাম। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসীদের মধ্যে আর্থিক অসচ্ছলতা কারনে এই সুযোগটা আর হয়ে উঠে নাহ। তবে বর্তমান যুগে ইন্টারনেট সুযোগ সুবিধা কারণে এখন চাইলে অনেক ধরনের বই পড়ার সুযোগ পাওয়া যায়। পুথিগত শিক্ষার পাশাপাশি নিজেদের সংস্কৃতি, ভাষা আদিবাসীদের যে জীবনযাত্রার মান নিজেদের শিকরে প্রতি জ্ঞান রাখার দরকার বলে মনে করেন তিনি।
সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ১৯৮৯ সালে মার্টিং হলে বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিলর কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটিতে শিক্ষা, সাম্য ও প্রগতিশীলসহ সবকিছু রয়েছে। কিন্তু পরিপূর্ণ ভাবে এই সংগঠন ব্যাপারে বাখ্য করার করার সাহস কারো ছিল নাহ। কিন্তু সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণভাবে বাখ্যা করার পর এই সংগঠন এখন ৩৫ বছরের পদার্পণ করেছে । যেটি সংগঠনের গর্বের বিষয়।
এর আগে ঐতিহ্যবাহী রাজার মাঠে জাতীয় পতাকা উত্তোলন মাধ্যমে সম্মেলন উদ্বোধন করা হয়। এরপরই নিজেদের সংস্কৃতির ঐতিহ্য পোশাকে বর্ণাঢ্য র্যালীতে অংশ নেন মারমা সম্প্রদায়ের যুবক সমাজ। ঐতিহ্যবাহী রাজার মাঠ থেকে র্যালী বের হয়ে শহর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বান্দরবান ক্ষুদ্র- নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউটের শেষ হয়। এরপর শুরু হয় সম্মেলনের আলোচনা সভা।
সম্মেলন শেষে বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিলের ৩১ জন বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে সভাপতি পদে উসাইগ্য মারমা, সাধারণ সম্পাদক অংশৈসিং মারমা ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মংচাই সা মারমাকে নির্বাচিত করা হয়।
সম্মেলনে বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিলর কেন্দ্রীয় কমিটি সভাপতি উকিং ওয়াং মারমা সভাপতিত্বে স্থানীয় সরকার পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটি সভাপতি গৌতম দেওয়ান, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কে এস মং, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিলর কেন্দ্রীয় কমিটি সাবেক সভাপতি ও উন্নয়নকর্মী অংচানু মারমা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আইনজীবী উবাথোয়াই মারমা, মাধবী, সমাজ ও মানবধিকার কর্মী অংচমং মারমাসহ সুশীল সমাজের গণমান্য ও ছাত্রসমাজ উপস্থিত ছিলেন।