বিএনপি-জামায়াত ও তাদের সমমনা দলগুলো দ্বিতীয় দফায় অবরোধের প্রথম দিন চলছে। রোববার (৫ নভেম্বর) থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি শুরুর পর হতে দূরপাল্লার বাস বন্ধ রয়েছে। তবে, স্বাভাবিক রয়েছে কক্সবাজারের পরিস্থিতি। সকাল হতে কক্সবাজার শহর থেকে উপজেলা সমুহে সকল প্রকার যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চলছে।
পরিবহণ শ্রমিক নেতা শফিউল্লাহ আনসারি দাবি করেছেন অবরোধে এ পর্যন্ত কক্সবাজারের কোথাও তাদের যানবাহন আটকানো বা প্রতিবন্ধকতায় পড়েনি। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে স্বাভাবিক নিয়মে পরিবহণ চলাচল করছে।
পরিবহন সংশ্লিষ্ট একাধিক দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, কক্সবাজার থেকে দূরপাল্লার কোন বাস ছেড়ে যায়নি। শহরের সাথে মহেশখালী দ্বীপ উপজেলায় নৌ-রুটেও চলাচল করতে স্পীড বোটসহ অন্যান্য ট্রলার সমুহ।
সকাল থেকে কক্সবাজারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্ট ও মহাসড়কে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। প্রতিটি সড়কে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যাব, বিজিবির টহল ও অবস্থান দেখা মিলেছে। টহল দিতে দেখা গেছে নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় পুলিশ সকল প্রকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশের অবস্থান নিশ্চিত করার পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে টহল। র্যাব ও বিজিবি সদস্যরাও মাঠে রয়েছে। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকা বা নাশকতার চেষ্টার খবর পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এদিকে, কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়া চিরিঙ্গা হাইওয়ে থানার ইনচার্জ খোকন কান্তি রুদ্র ও মালুমঘাট হাইওয়ে থানার ইনচার্জ মো. ইকবাল বাহার মজুমদার জানান, কক্সবাজার মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে হাইওয়ে পুলিশ সতর্ক অবস্থান রয়েছে। পুলিশের পৃথক টিম মাঠে দায়িত্বপালন করছে। অবরোধের নামে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনায় ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তাদ্বয়।
টেকনাফ মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বলেন, টেকনাফে পুলিশ সতর্ক অবস্থান রয়েছে। নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্ব পুলিশের পৃথক কয়েকটি টিম সবধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কাজ করছে।
পেকুয়া থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর হায়দার বলেন, বিএনপি- জামায়াতের অবরোধে পেকুয়া কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্তক অবস্থায় রয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট সহ পুলিশের পৃথক টিম মাঠে রয়েছে।
রামু থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু তাহের দেওয়ান বলেন, অবরোধের নামে নাশকতা ঠেকাতে বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে। এই পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। পুলিশের পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা মাঠে রয়েছে।
রোববার বেলা ১১ টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) মো. রাসেল জানান, উখিয়া-টেকনাফের মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রয়েছ। মাঠে টহলে রয়েছে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রটের নেতৃত্বে পুলিশের একাধিক টিম। সরকারি-বেসরকারি অফিস গুলো খোলা, স্বাভাবিক রয়েছে যান চলাচল।
অপরদিকে, ভোর থেকে কক্সবাজার শহরের লালদিঘীর পাড়স্থ জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে জড়ো হচ্ছেন কক্সবাজার পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি নজিবুল ইসলামের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা। সেখানে শান্তি সমাবেশ ও অবরোধ বিরোধি বিক্ষোভ মিছিল বের করেছে। শহীদ সরণীস্থ কক্সবাজার জেলা বিএনপির কার্যালয় সকাল থেকে তালাবদ্ধ থাকলেও অবস্থান করতে দেখা গেছে পুলিশের একটি দল।