spot_imgspot_imgspot_img
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার নিবন্ধিত। রেজি নং-৯২
রবিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৩
প্রচ্ছদচট্টগ্রামকক্সবাজারটেকনাফ স্থলবন্দরে সপ্তাহের বেশি সময় আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

মিয়ানমারে সংঘাত-

টেকনাফ স্থলবন্দরে সপ্তাহের বেশি সময় আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

সায়ীদ আলমগীর, কক্সবাজার
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

মিয়ানমারের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) ও দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে চলমান সংঘাতের কারনে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি গত ৮দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে সরকার হারাচ্ছে প্রতিদিন তিন কোটি টাকা রাজস্ব। গত ১৪ নভেম্বর থেকে বুধবার পর্যন্ত মিয়ানমারের রাখাইনের মংডু শহর থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে সবধরণের পণ্য আসা বন্ধ রয়েছে। একইভাবে টেকনাফ থেকেও মিয়ানমারে যাচ্ছে না রপ্তানি পণ্য, এমনটি জানিয়েছে টেকনাফ স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (হিসাব) মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী।

বন্দর সূত্র জানায়, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সংঘর্ষ। এ কারণে রাখাইনের জেলা শহর মংডু থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে পণ্য আসা বন্ধ রয়েছে গত ৮দিন। সর্বশেষ ১৩ নভেম্বর মিয়ানমারের আকিয়াব বন্দর থেকে ৪৭ টনের একটি হিমায়িত মাছের চালান টেকনাফ স্থল বন্দরে এসেছিল। টেকনাফ-মংডু সীমান্ত বাণিজ্য অচল হয়ে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন বন্দর কেন্দ্রিক ব্যবসায়ীরা। বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় গড়ে প্রতিদিন তিন কোটি টাকার বেশি রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

দেখাযায়, বন্দরের জেটি ফাঁকা পড়ে আছে। নেই কোনো কার্গো ট্রলার বা জাহাজ। স্থলবন্দরের ব্যবসার উপর নির্ভর করে চলা মহাসড়কের কিনারে অর্ধশতাধিক দোকান পাটও বন্ধ। বন্দরে মালামাল আনা-নেওয়া করতে আসা ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে শ্রমিকরা ওখানে খাবার খেতেন। তবে, বন্দরের খোলা জায়গা ও ওয়্যারহাউসে মিয়ানমার থেকে আগে আসা বিভিন্ন ধরনের কাঠ, আদা, শুকনা সুপারি, শুঁটকি, নারিকেল, আচারসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য মজুত রয়েছে।

টেকনাফ স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমিনুর রহমান মিয়ানমারের ব্যবসায়ীদের বরাতে জানান, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী ও দেশটির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যেই চলমান সংঘাতের কারণে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন তারা। কবে নাগাদ চালু হবে তা বলা যাচ্ছে না। আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায়, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে দাবি করেন এ ব্যবসায়ী নেতা।

টেকনাফ স্থলবন্দরের শ্রমিকনেতা আলী আজগর মাঝি বলেন, বন্দরে ৬ শতাধিক শ্রমিক কাজ করতেন। মিয়ানমার থেকে টানা দেড় সপ্তাহ ধরে বন্দরে কোন মালামাল না আসায় বিপাকে পড়েছেন কর্মরত এসব শ্রমিকরা। কাজ না থাকায় আয়ও নেই। ফলে, শ্রমিকরা পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন পার করছেন।

টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা এ এস এম মোশাররফ হোসেন বলেন, স্থলবন্দরে মিয়ানমার থেকে কোন ধরণের পণ্য না আসায় রাজস্ব আদায়ও বন্ধ হয়ে গেছে। আমদানি-রপ্তানি সচল থাকলে দিনে প্রায় তিন কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আয় হতো। সে হিসেবে গত ৮দিনে প্রায় ২৪ কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছি আমরা।

টেকনাফ স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (হিসাব) মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, গত ৮দিন ধরে মিয়ানমার থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে কোন পন্যবাহী মালামালের ট্রলার না আসায় বন্দরে কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে, এর আগে আসা আদা, নারিকেল, আচার, সুপারি, শুঁটকিসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য বন্দরে এখনো জমা রয়েছে। এসব পণ্য বিভাগীয় ও জেলা শহরে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা বলেন, টেকনাফ স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধে আমরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি, এটা শংকার। সেই ক্ষতির চেয়ে আরো শংকার বিষয় হলো, মিয়ানমারে সংঘাতের কারণে সেখানে অবশিষ্ট থাকা রোহিঙ্গাকে কোন অজুহাতে আবার আমাদের ঘাড়ে চেপে দিচ্ছে না এ চিন্তায়। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের নজর রাখা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আরও পড়ুন

spot_img

সর্বশেষ